শিরোনাম
দিনাজপুর, ৫ মার্চ, ২০২৪ ( বাসস): জেলা শহরের গোড়-এ শহীদ বড় ময়দানে জেলা প্রশাসন ও বিসিকের যৌথ উদ্যোগে স্থানীয় ও নারী উদ্যোক্তাদের পণ্য নিয়ে ৭ দিনব্যাপী এ মেলার আয়োজন করা হয়েছে । ৪ মার্চ থেকে আগামী ১০ মার্চ পর্যন্ত এ মেলা চলবে।
সোমবার রাত ৮ টায় দিনাজপুর গোড়-এ শহীদ বড় ময়দানে মেলার উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসকের দায়িত্বে থাকা অতিরক্ত জেলা প্রশাসক দেবাশীষ চৌধুরী । এসময় জেলা প্রশাসন,বিসিকের জেলা কার্যালয়ের উপ মহাব্যবস্থাপক জাহিদুল ইসলাম, নারী উদ্যোক্তা ও বিভিন্ন শ্রেণী পেশার সুধীজন উপস্থিত ছিলেন। বিসিক কর্মকর্তা তানভীর হাসান জানান, ৭ দিনব্যাপী মেলায প্রতিদিন সকাল ৯'টা থেকে রাত সাড়ে ১০ টা পর্যন্ত চলমান থাকবে।
তিনি বলেন, উদ্যোক্তাদের নিয়ে এ মেলায় প্রায় দেড়শ বছর পুরনো সতিন মোচড় পিঠাসহ বিলুপ্ত হয়ে যাওয়ার নানা ধরনের পিঠার নাম ও স্বাদে আটকা পড়ছেন মেলায় আগত অনেক দর্শনার্থী । বিসিক আয়োজিত উদ্যোক্তা মেলায় আগত দর্শনার্থী ও ক্রেতারা বলছেন, হারিয়ে যাওয়া এমন ব্যতিক্রমী বাহারী নামের পিঠা, খেয়ে তারা তৃপ্তি পাচ্ছেন। অনেকে মেলা থেকে পিঠে কিনে বাড়ি নিয়ে যাচ্ছ। খাবার ও উদ্যোক্তাদের উৎপাদিত পণ্য পসরা সাজানো স্টল গুলোতে পরিচিত হতে ভিড় করছেন বিভিন্ন শ্রেণীর পেশার নারী ও পুরুষ দর্শনার্থীরা। সবার জন্য উন্মুক্ত এ মেলা চলছে সকাল ৯ টা থেকে রাত সাড়ে ১০টা পর্যন্ত। প্রতিদিন সন্ধ্যায় থাকছে মনোমুগ্ধকর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। উদ্যোক্তাদের পথচলা সুগম করতে এমন উদ্যোগ বললেন আয়োজকরা।
মেলায় গিয়ে দেখা গেছে, ছোট ছোট স্টলে দাঁড়িয়ে থাকা ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তারা শুধু পণ্য বিক্রি করছেন না, স্বপ্ন দেখছেন ভবিষ্যতে স্বাবলম্বী ও সফল হওয়ার। আর উদ্যোক্তাদের প্রতিভা তুলে ধরে, তাদের উৎসাহ প্রদানের পাশাপাশি উৎপাদিত পণ্য বাজারজাত করার লক্ষ্যে চলছে এ ৭ দিনব্যাপী উদ্যোক্তা মেলা।
বিসিকের সূত্রটি জানায়, বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প কর্পোরেশন (বিসিক) দিনাজপুর জেলা কার্যালয়ের আয়োজনে ও জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় দিনাজপুর গোর-এ শহীদ বড় ময়দানে চলছে এ মেলা।
স্টলগুলোতে শোভা পাচ্ছে বাহারি নাম ও আঙ্গিকের মুখরোচক পিঠা, খাবার ও কারুকার্য খচিত পণ্য সামগ্রীর মধ্যে হস্তশিল্পের পাটজাত পণ্য, নকশি, শতরঞ্জি, কারুপণ্য, শো-পিচ, প্রসাধনী বিভিন্ন ধরনের পণ্য। এছাড়া আঞ্চলিক খাবার ও পোশাকের সমাহার নজর কেড়েছে দর্শনার্থীদের। মেলায় ৫০টি স্টলের প্রতিটিতে স্থানীয় অনলাইন ও অফলাইন উদ্যোক্তাদের ব্যবসায়িক উদ্যোগের পণ্য প্রদর্শন ও বিক্রি করার সুযোগ পাচ্ছে। তবে এ আয়োজনে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে এক উদ্যোক্তার হাতের তৈরি সতিন মোচড় পিঠা। প্রায় ১৫০ বছরের পুরনো বিলুপ্ত হয়ে যাওয়া এ পিঠার ব্যতিক্রমী নাম ও স্বাদে ক্রেতা ও দর্শনার্থীদের ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। সেখানে উপচেপড়া ভিড় মেলার বাড়তি আকর্ষণ বাড়িয়েছ। অন্যান্য স্টলগুলোতে ক্রেতাদের উপস্থিতি লক্ষণীয়।
উদ্যোক্তা শম্পা দাস মৌ জানান, উদ্যোক্তাদের এসব স্টলে ক্রেতা-বিক্রেতাদের সরাসরি যোগাযোগ স্থাপনে নিজেদের উৎপাদিত পণ্য তুলে ধরে পরিচিত করা হচ্ছে । অপরদিকে হাতের নাগালে সবকিছু পাওয়ায় খুশি মেলায় আগত ক্রেতারা। তবে ক্রেতা-বিক্রেতাদের এ মেলবন্ধনকে আরো জমিয়ে রাখতে প্রতিদিনই সন্ধ্যায় চলছে বাড়তি সাংস্কৃতিক আয়োজন। মেলায় স্থান পাওয়া উদ্যোক্তাদের তৈরি বিভিন্ন খাবার ও পণ্যগুলোকে তুলে ধরতে এ আয়োজন। এ তথ্য জানান বিসিক জেলা কার্যালয়ের উপ-মহাব্যবস্থাপক জাহিদুল ইসলাম। তিনি বলেন, কারুকার্য খচিত পণ্য সামগ্রী ও বাহারি রকমের খাবারের আয়োজন নিয়ে হাজির হওয়া স্টলগুলোতে শুধু কেনাবেচা নয়, প্রতিভা বিকাশ ও শিক্ষণীয় সমাহার রয়েছে মেলাজুড়ে। আধুনিক ও ডিজিটাল পদ্ধতির এ যুগে আগামী স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে উদ্যোক্তারা অনলাইন ব্যবহারে তাদের পণ্য ক্রেতাদের দোরগোড়ায় সহজে পৌঁছে দিতে পারবে। এভাবেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘোষিত সব ক্ষেত্রেই স্মার্ট বাংলাদেশ বাস্তবায়নে সফলতা অর্জিত হবে।