শিরোনাম
ঢাকা, ২৩ নভেম্বর ২০২৪ (বাসস) : ওয়েস্ট ইন্ডিজের দুই ব্যাটার মিকাইল লুইস ও অ্যালিক আথানাজের ব্যাটিং দৃঢ়তায় বাংলাদেশের বিপক্ষে দুই ম্যাচ সিরিজের প্রথম টেস্টের প্রথম দিন নিজেদের করে রাখার পথে ছিলো স্বাগতিক ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ৩ উইকেটে ২২৪ রানও তুলে ফেলেছিলো ক্যারিবীয়রা। কিন্তু ৪ রানের ব্যবধানে দুই সেট ব্যাটার লুইস ও আথানাজেকে নব্বইয়ের ঘরে থামিয়ে শেষ বিকেলে ঘুরে দাঁড়ালো সফরকারী বাংলাদেশ। ফলে ৮৪ ওভারে ৫ উইকেটে ২৫০ রানে প্রথম দিন শেষ করেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। লুইস ৯৭ ও আথানাজে ৯০ রানে আউট হন।
এন্টিগার স্যার ভিভিয়ান রিচার্ডস স্টেডিয়ামে গতকাল সন্ধ্যায় শুরু হওয়া টেস্টে টস জিতে প্রথমে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নেন বাংলাদেশ অধিনায়ক মেহেদি হাসান মিরাজ। নিয়মিত অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তর ইনজুরির কারণে এই সিরিজে দলের অধিনায়কত্ব করবেন মিরাজ। দেশের ১৪তম ক্রিকেটার হিসেবে টেস্টে টাইগারদের নেতৃত্ব দিচ্ছেন তিনি।
ব্যাট হাতে সাবধানী শুরু করেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের দুই ওপেনার ক্রেইগ ব্রার্থওয়েট ও মিকাইল লুইস। ১৩ ওভারে ২৪ রান তুলেন তারা।
১৪তম ওভারে নিজের চতুর্থ ওভার করতে এসে ওয়েস্ট ইন্ডিজের উদ্বোধনী জুটি ভাঙ্গেন তাসকিন। ব্রার্থওয়েটকে লেগ বিফোর আউট করেন তাসকিন। রিভিউ নিয়েও নিজের উইকেট বাঁচাতে পারেননি ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলনেতা। ৩৮ বলে ৪ রান করেন তিনি।
ব্র্যার্থওয়েটের আউটে ক্রিজে এসে তাসকিনের দ্বিতীয় শিকার হন কেসি কার্টি। ১৬তম ওভারে তাসকিনের বলে মিড উইকেটে তাইজুল ইসলামকে ক্যাচ দেন কার্টি। ৮ বল খেলেও রানের খাতা খুলতে পারেননি কার্টি।
তাসকিনের জোড়া আঘাতে ২৫ রানে ২ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। তৃতীয় উইকেটে হাফ-সেঞ্চুরির জুটিতে দলকে চাপমুক্ত করেন লুইস ও কাভেম হজ। এর মধ্যে ১০৪ বল খেলে টেস্টে দ্বিতীয় হাফ-সেঞ্চুরির দেখা পান লুইস।
৩৮তম ওভারে দলীয় ৮৪ রানে রান আউটের শিকার হন হজ। দুই রান নিতে গিয়ে তাইজুল ইসলামের দারুণ ফিল্ডিংয়ে রান আউট হন ২টি চারে ২৫ রান করা হজ। ১৩০ বল খেলে ৫৯ রানের জুটি গড়েন লুইস ও হজ।
হজের বিদায়ে ক্রিজে লুইসের সঙ্গী হন অ্যালিক আথানাজে। উইকেট ধরে খেলতে গিয়ে বাংলাদেশ বোলারদের সমীহ করে খেলতে শুরু করেন তারা। এজন্য রানের গতিও ছিলো বেশ মন্থর।
তাইজুলের করা ৬৫তম ওভারের শুরুতে টেস্টে তৃতীয় অর্ধশতক করেন ৮৪ বল খেলা আথানাজে। ঐ ওভারের দ্বিতীয় বলে স্লিপে লুইসের ক্যাচ ফেলেন মিরাজ। ৯০ রানে জীবন পান লুইস। ৭১তম ওভারে ওয়েস্ট ইন্ডিজের রান ২শ স্পর্শ করে।
মিরাজের হাতে জীবন পেয়ে টেস্ট ক্যারিয়ারের ষষ্ঠ ম্যাচে প্রথম সেঞ্চুরির পথে হাটছিলেন লুইস। কিন্তু ৭৫তম ওভারের মিরাজের দ্বিতীয় বলে বেরিয়ে এসে ছক্কা মারতে গিয়ে স্লিপে শাহাদাত হোসেনকে ক্যাচ দেন লুইস। ৩৩০ মিনিট ক্রিজে থেকে ৯টি চার ও ১টি ছক্কায় ২১৮ বলে ৯৭ রানে আউট হন তিনি। টেস্টে ক্যারিয়ারে এটিই সর্বোচ্চ রানের ইনিংস লুইসের।
আথানাজের সাথে চতুর্থ উইকেটে ২২১ বলে ১৪০ রানের জুটি গড়েন লুইস। ঘরের মাঠে চতুর্থ উইকেটে বাংলাদেশের বিপক্ষে এটি দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রানের জুটি ওয়েস্ট ইন্ডিজের।
লুইসের মত নার্ভাস নাইন্টিতে আউট হয়ে প্রথম সেঞ্চুরির স্বাদ নিতে পারেননি আথানাজেও। ৭৭তম ওভারের চতুর্থ বলে তাইজুলকে সুইপ করতে গিয়ে উইকেটরক্ষক লিটন দাসকে ক্যাচ দেন তিনি। ১০ ম্যাচের টেস্ট ক্যারিয়ারের এই নিয়ে দ্বিতীয়বার নব্বইয়ের ঘরে থামলেন আথানাজে। এরমধ্যে সর্বশেষ ৪ ইনিংসে দু’বার।
দলীয় ২২৮ রানে আথানাজের আউটের পর ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে ৩৮ বল খেলতে পারেন জাস্টিন গ্রিভস ও উইকেটরক্ষক জশুয়া ডা সিলভা। আলোকস্বল্পতায় ৬ ওভার আগেই প্রথম দিনের খেলার ইতি ঘটে। গ্রিভস ১১ ও সিলভা ১৪ রানে অপরাজিত আছেন
তাসকিন ৪৬ রানে ২টি, তাইজুল ৬৭ রানে ও মিরাজ ৪৭ রানে ১টি করে উইকেট নিয়েছেন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর : (টস-বাংলাদেশ)
ওয়েস্ট ইন্ডিজ প্রথম ইনিংস : ৮৪ ওভারে ২৫০/৫ (লুইস ৯৭, আথানেজ ৯০, তাসকিন ২/৪৬, তাইজুল ১/৬৭, মিরাজ ১/৪৭)।
বাসস/এএমটি/১৪০৫/-নীহা