বাসস
  ১২ এপ্রিল ২০২৩, ১৪:৩৮

রেকর্ড গোলে বায়ার্নের বিরুদ্ধে সিটিকে জয় উপহার দিলেন হালান্ড

ম্যানচেস্টার (যুক্তরাজ্য), ১২ এপ্রিল ২০২৩ (বাসস/এএফপি) : আর্লিং হালান্ডের মৌসুমের ৪৫তম গোলে বায়ার্ন মিউনিখকে মঙ্গলবার চ্যাম্পিয়ন্স লিগের কোয়ার্টার ফাইনালের প্রথম লেগে ৩-০ গোলে উড়িয়ে দিয়েছে ম্যানচেস্টার সিটি।
এই গোলের মাধ্যমে প্রিমিয়ার লিগের খেলোয়াড় হিসেবে এক মৌসুমে সর্বোচ্চ গোলের মাইলফলক স্পর্শ করেছেন হালান্ড। এই তালিকায় তিনি মোহাম্মদ সালাহ (২০১৭/১৮) ও রুড ফন নিস্তেরলয়কে (২০০২/০৩) পিছনে ফেলেছেন। 
ইংলিশ চ্যাম্পিয়নদের হয়ে স্কোরশিটে আরো নাম লিখিয়েছেন রড্রি ও বার্নান্ডো সিলভা। কালকের এই পারফরমেন্সে এই প্রথমবারের মত ইউরোপীয়ান আসরের শিরোপা জয়ে অবশেষে সিটিকে টপ ফেবারিট হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। 
২০১৬ সালে বায়ার্ন মিউনিখ ছাড়ার পর এই প্রথম সাবেক ক্লাবের বিপক্ষে কোন ম্যাচে মাঠে নামার সুযোগ পেয়েছিলেন সিটি বস পেপ গার্দিওলা। কিন্তু তিনি সতর্ক করে বলেছেন, কাজ এখনো শেষ হয়ে যায়নি। গার্দিওলা বলেন, ‘আমি সেখানে তিন বছর ছিলাম। আমি জানি ইউরোপে এই দলটি সত্যিই বিশেষ কিছু। এই ধরনের দলকে বিদায় করতে হলে দুটি ম্যাচেই ভাল খেলতে হবে, শুধুমাত্র একটি ম্যাচে নয়। আমি জানি আজ আমরা কি করেছি। তারাও দুই থেকে তিন গোল করতে সক্ষম। আমরা আমাদের যোগ্যতা  আজ প্রমান করেছি।’
২০২১ সালে বর্তমান বায়ার্ন বস থমাস টাচেলের চেলসির কাছে পরাজিত হয়ে শিরোপা বঞ্চিত হয়েছিল গার্দিওলার সিটি। তিন সপ্তাহেরও কম সময় আগে টাচেল বায়ার্নের কোচ হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন। টাচেল বিশ্বাস করেন তার দলের এর থেকেও বেশী কিছু প্রাপ্য ছিল। টাচেল বলেন, ‘আমি চেষ্টা করছি খেলোয়াড়দের ফলাফলের ওপর গুরুত্ব না দিতে। কারন এই ধরনের ফলাফল আমাদের প্রাপ্য না। এটা আমাদের স্বাভাবিক পারফরমেন্স ছিলনা। আজ আমি অনেক ভাল কিছু দেখেছি, সে কারনেই শুধুমাত্র ফলাফলে উপর গুরুত্ব দিতে চাচ্ছিনা। সাইডলাইনে থেকে আমি বেশ গর্ববোধ করছিলাম, কারন পুরো ম্যাচে বায়ার্ন তাদের সাহস দেখিয়েছে।’
বছর খানেক আগে বায়ার্নের মত বেশ কিছুই ইউরোপীয়ান জায়ান্টদের আগ্রহ সত্বেও শেষ পর্যন্ত হালান্ডকে দলে ভিড়িয়েছিল সিটি। আজকের এই রাতটার মতই কিছু দেখার অপেক্ষায় ছিল ইংলিশ চ্যাম্পিয়নরা। দুর্দান্ত পারফরমেন্সে হালান্ড আরো একবার প্রমান দিলেন নতুন প্রজন্মে কেন তিনি সেরা। ম্যাচের শুরুতেই গোলের ভাল একটি সুযোগ পেয়েও তিনি কাজে লাগাতে পারেনি। তার দূর্বল শটটি সহজেই বায়ার্ন গোলরক্ষক ইয়ান সোমারের হাতে সরাসরি ধরা পড়ে। বিপরীতে জামাল মুসিয়ালার শট দারুন দক্ষতায় ব্লক করে রুবেন দিয়াস সিটিকে রক্ষা করেছেন। ইতিহাদ স্টেডিয়ামে ২৭ মিনিটে  কার্লিং শটে স্বাগতিকদের এগিয়ে দেন রড্রি। 
ম্যানুয়েল নয়্যারের ইনজুরির কারনে জানুয়ারিতে জরুরী ভিত্তিতে সোমারকে দলভূক্ত করেছিল বায়ার্ন। সুইস এই গোলরক্ষক কাল বেশ কিছু বল সেভ করে আস্থার প্রতিদান দিয়েছেন। এর মধ্যে শুরুটা হয়েছিল ইকে গুনডোগানকে হতাশ করার মাধ্যমে। কিন্তু সোমারের এই পারফরমেন্স সত্তেও বায়ার্ন শুরুটা ভাল করতে পারেনি। সাবেক ক্লাবের বিপক্ষে লেরয় সানে দুইবার গোলের সুযোগ হাতছাড়া করেন। তার শক্তিশালী শট রুখে দেন সিটি গোলরক্ষক এডারসন। মাথিস ডি লিট ও কিংসলে কোম্যানের হেড সিটির রক্ষনভাগের কারনে জালের ঠিকানা খুঁজে পায়নি। ম্যাচের শেষ ২৫ মিনিট ঘুড়ে দাঁড়ায় সিটি। ম্যাচ শেষের ২০ মিনিট আগে হালান্ডের দারুন এক ক্রস থেকে ব্যবধান দ্বিগুন করেন সিলভা। এরপরপরই জুলিয়ান আলভারেজের শট দুর্দান্তভাবে রুখে দিয়ে সোমার আরো একবার বায়ার্নকে রক্ষা করেন। কিন্তু তারপরও থেমে যায়নি সিটি। জন স্টোনসের বাড়ানো পাসে ডান পায়ের জোড়ালো শটে দলের হয়ে তৃতীয় গোলটি করেন হালান্ড। আলভারেজের আরো একটি শট অল্পের জন্য পোস্টের বাইরে দিয়ে চলে যায়। রড্রির হেড কর্ণারের সাহায্যে রক্ষা করেন সোমার। 
টানা তৃতীয়বারের মত সেমিফাইনালে পথে সিটিকে বাঁধা দিতে হলে দ্বিতীয় লেগে বায়ার্নকে সম্ভবত চ্যাম্পিয়ন্স লিগের অন্যতম ঐতিহাসিক এক ম্যাচ উপহার দিতে হবে।