শিরোনাম
করাচি, ২৬ মে ২০২৩ (বাসস) : উইকেট শিকারের জন্য বোলিংয়ে ‘গতি’ বড় ইস্যু নয় বলে মন্তব্য করেছেন পাকিস্তানের বাঁ-হাতি পেসার শাহিন শাহ আফ্রিদি। ইনজুরি থেকে ফিরে আসার পর বল হাতে গতি কমেছে তার। এজন্যই আফ্রিদির গতি নিয়ে আলোচনা চলছে। গতি নিয়ে মোটেও চিন্তিত নন আফ্রিদি। তার কাছে সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হলো, উইকেট শিকার করে দলের জন্য অবদান রাখতে পারাটা।
আফ্রিদি জানান, গতি নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা হলেও এসব নিয়ে আমি চিন্তিত নই। গতি কমলেও উইকেট শিকার করে দলের জন্য অবদান রাখতে পারছি।
গেল বছরের জুলাইয়ে শ্রীলংকা সফরে প্রথম টেস্টে হাঁটুর ইনজুরিতে পড়েন আফ্রিদি। এরপর মাঠের বাইরে ছিটেক পড়েন তিনি। ইংল্যান্ডে পুনবার্সন করে গেল বছরের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ দিয়ে আবারও মাঠে ফিরেন আফ্রিদি। বল হাতে ঐ বিশ্বকাপে ৭ ম্যাচে ১০ উইকেট নেন এই পেসার। ফাইনালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে আবারও ইনজুরিতে পড়েন আফ্রিদি। হাটুঁর ইনজুরিতে আবারও লম্বা সময়ের জন্য মাঠের বাইরে ছিটকে পড়েন পাকিস্তানের পেস অ্যাটাকের প্রধান অস্ত্র।
ইনজুরির সাথে লড়াইয়ের পর আরও একবার জয়ী হয়ে পাকিস্তান সুপার লিগের (পিএসএল) সর্র্বশেষ আসর দিয়ে ২২ গজে ফিরেন আফ্রিদি। মাঠে ফিরলেও বোলিংয়ে গতি কমেছে আফ্রিদির। পিএসএল ও ঘরের মাঠে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজে সেটি চোখে পড়েছে। এসব নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা হলে, সেটি আমলে নিচ্ছেন না আফ্রিদি।
আফ্রিদির মতে, বোলিংয়ে গতি কমলেও উইকেট শিকারের মাধ্যমে দলের জন্য অবদান রাখতে পারছেন। তিনি বলেন, ‘গতি নিয়ে সবারই কিছু না কিছু বলার আছে। কিন্তু আমি নিজে ভালো অনুভব করছি। দেখুন কেউ যদি ১১০ কিলোমিটার গতিতে বোলিং করেও উইকেট পায়, তাহলে অনুভূতি ভালোই থাকে। আমি উইকেট নিয়েছি। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো, মাঠে শতভাগ দিয়েছি। গতি এখানে বড় ব্যাপার নয়, যদি গতি কমেও যায়, সময়ের সাথে আবার বাড়বে।’
গেল ১০ মাসে দু’বার হাঁটুর ইনজুরিতে অনেক সময় মাঠের বাইরে থাকায় ছন্দে ফিরতে সময় লাগছে আফ্রিদির। ম্যাচ খেলতে পারলে পুরনো রুপে ফেরার ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন আফ্রিদি। তিনি বলেন, ‘টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে দুই মাস ইনজুরিতে ভুগেছি। বিশ্বকাপের পর আবার দুই-তিন মাস মাঠের বাইরে ছিলাম। পুরোপুরি ছন্দে ফিরতে কিছুটা সময় লাগে। ম্যাচ খেললেই প্রাণশক্তি ও ফিটনেস ফিরে পাওয়া যায়।’
তিনি আরও বলেন, ‘পিএসএল থেকে আমি ভালো অনুভব করছি। ঐ টুর্নামেন্টে যত গড়িয়েছে, ভালো অনুভব করতে থাকি। এজন্য পাকিস্তানের হয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটেও ফিরেছি। সময়ের সাথে উন্নতি হবে, যত খেলবো তত ভালো হয়ে উঠবো।’
ইনজুরিতে থাকাকালীন ব্যাটিং নিয়েও কাজ করেছেন আফ্রিদি। তিনি বলেন, ‘ব্যাটিং সবসময়ই পছন্দ করতাম, সেই অনূর্ধ্ব-১৬ ক্রিকেটের দিনগুলি থেকে। এবার যখন ইনজুরিতে পড়লাম, তখন ব্যাটিং নিয়ে কাজ শুরু করলাম, কারণ বোলিং করতে পারছিলাম না। পুনবার্সনের জন্য যখন ইংল্যান্ডে ছিলাম, ব্যাটিং নিয়ে অনেক পরিশ্রম করেছি।’
ব্যাটিংয়ের উন্নতির জন্য পাকিস্তানের সাবেক অধিনায়ক ও শ্বশুর শহিদ আফ্রিদির সহযোগিতাও পেয়েছেন বলে জানান আফ্রিদি। তিনি বলেন, ‘হ্যাঁ, তার সাথে কাজ করার প্রভাব আছে। আমি ও লালা (আফ্রিদি) শট অনুশীলন করেছি। কিভাবে শেষের ওভারগুলোতে বড় শট খেলতে হয়। আমার ব্যাট সুইং নিয়েও খানিকটা কাজ করেছি। টি-টোয়েন্টিতে তার যে অভিজ্ঞতা, এমনটা আর কারও নেই। তার সাথে কাজ করতে পারার অভিজ্ঞতা ছিল দারুণ। অনেক শিখেছি আমি।’
আফ্রিদি আরও বলেন, ‘আমার কাছে এখনও সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ বোলিং। কোনোদিন যদি বোলিং ভালো না হয়, ব্যাট হাতেও অবদান রাখতে চাই। ব্যাটিংয়ে না হলে ফিল্ডিংয়ে ভালো করতে চাই।’
পাকিস্তানের জয়ে ২৫ টেস্টে ৯৯, ৩৬ ওয়ানডেতে ৭০ ও ৫২টি টি-টোয়েন্টিতে ৬৪ উইকেট নিয়েছেন ২৩ বছর বয়সী আফ্রিদি।