শিরোনাম
॥ হাসনাইন আহমেদ মুন্না ॥
ভোলা, ৪ নভেম্বর, ২০২৩ (বাসস) : জেলায় দীর্ঘ ২২ দিন বন্ধ থাকার পর ফের জমে উঠেছে ইলিশের বাজার। জেলার বিভিন্ন উপজেলার মাছ ঘাট, মোকাম ও বাজারগুলো ইলিশসহ অনান্য মাছে ভরে উঠেছে। এবছর ইলিশের প্রধান প্রজোনন মৌসুম ১২ অক্টোবর থেকে ২ নভেম্বর পর্যন্ত টানা ২২ দিন ইলিশ শিকার, পরিবহন, মজুত ও বিক্রিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করে সরকার। গতকাল মধ্যে রাত থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার হলে ফের ব্যস্ত হয়ে উঠেছে জেলে পল্লীগুলো। রাতেই নদী-সাগরের উদ্দেশ্যে ছুটেছেন জেলেরা। গত দুই দিনে সদর উপজেলাসহ বিভিন্ন মাছের ঘাট, আড়ৎ, পাইকারী এবং খুচরা বাজারে ক্রেতা-বিক্রেতাদের হাঁক-ডাক ও দর কষাকষিতে মুখরিত হচ্ছে ইলিশের বাজার।
এদিকে দীর্ঘ ২২ দিন নদী জাল শুন্য থাকায় ইলিশসহ অনান্য মাছের ঘনত্ব অনেক বেশি রয়েছে। তাই জেলেদের জালে ধরা পড়েছে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশসহ অনান্য মাছ। একইসাথে বড় আকারের পাঙ্গাস ধরা পড়ছে অন্য সময়ের চেয়ে বেশি। আর এতে খুশি জেলেরা। শনিবার সকালে সরেজমিনে সদর উপজেলার মেঘনা পাড়ের তুলাতুলি, ইলিশা ও নাছীর মাঝি মাছ ঘাট এলাকায় দেখা যায়, ব্যাপক মাছের আমদানি। সারারাত নদীতে শিকার করা চকচকে রুপালী ইলিশ নিয়ে ঘাটে ফিরছেন জেলেরা। ঘাটে জেলেদের নৌকা ভিড়লেই আড়ৎদারদের হাক-ডাকে মুখরিত হচ্ছে মাছ ঘাট।
নাছীর মাঝি এলাকার জেলে সিদ্দিকুল্লাহ ও জানে আলম জানান, শুক্রবার বিকেলে তারা ট্রলার নিয়ে নদীতে নামেন। আজ সকালে ঘাটে এসেছেন। ছোট-বড় মিলিয়ে প্রায় ৩০ কেজি ইলিশ পেয়েছেন তার বোটে। যা বিক্রি করেছেন ২০ হাজার টাকায়। আগামী দিগুলোতে এমন মাছের আমদানি থাকলে তারা লাভবান হবেন।
একই এলাকার জেলে আব্দুল মান্নান মাঝি বলেন, বন্ধের পর প্রথম দুই দিনে প্রচুর ইলিশ ধরা পড়ছে। তবে ছোট ও মাঝারি সাইজের ইলিশ বেশি পাওয়া যাচ্ছে। বড় ইলিশ খুবই অল্প। সকল জেলেই এখন মাছ শিকারে ব্যস্ত। ভোলার খাল এলাকার জেলে হেলালউদ্দিন বলেন, ইলিশের পাশাপাশি পাঙ্গাস পাওয়া যাচ্ছে বেশ। তার ট্রলারে ১০টি পাঙ্গাস পাওয়া গেছে ২ থেকে ১০ কেজি ওজনের। যা কেজিপ্রতি সাড়ে ৪’শ থেকে ৫’শ টাকা দাম পাচ্ছেন।
এদিকে শহরের সবচে বড় মাছের খুচরা বাজার নতুন বাজারে দেখা গেছে প্রচুর পরিমাণ ইলিশসহ অনান্য মাছের সরবরাহ। ক্রেতাও রয়েছে প্রচুর। ক্রেতা-বিক্রেতাদের দর কষাকষিতে মুখর হয়ে উঠেছে বাজার। তবে দাম বেশি রয়েছে বলে জানান ক্রেতারা।
ভোলা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ আবুল কালাম আজাদ জানান, ইলিশ আমাদের জাতীয় সম্পদ। তাই একে রক্ষা করার দায়িত্ব আমাদের সকলের। এবছর সকলের সহযোগিতায় মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান সাফল্যের সাথে শেষ হয়েছে। গত দুই দিন ধরে নদীতে ইলিশসহ অনান্য মাছ পাওয়া যাচ্ছে। এবছর ১ লক্ষ ৯২ হাজার মেট্রিক টন ইলিশ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।