শিরোনাম
ঢাকা, ৩০ নভেম্বর, ২০২৪ (বাসস) : বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের অর্ন্তর্তী সরকারের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান আজ ব্যবসায়ীদের প্রতিযোগিতার ভিত্তিতে বিদ্যুৎ ও জ্বালানিসহ দেশের বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘প্রতিযোগিতার মাধ্যমে কাজ পাওয়ার জন্য সরকার সব ব্যবসায়ী উদ্যোক্তাদের জন্য সব ধরনের ব্যবসা খুলে দিয়েছে। এখন অনুগ্রহ ও ভয়ের মাধ্যমে ব্যবসা পাওয়ার দিন চলে গেছে।’
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টা আজ রাজধানীর ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) মিলনায়তনে ‘র্যাপিড ট্রানজিশন টু রিনিউয়েবল : রোল অব ডোমেস্টিক ফাইন্যান্সিয়াল ইনস্টিটিউশন’- শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন।
ফাওজুল নবায়নযোগ্য জ্বালানিকে (আরই) অন্তর্বর্তী সরকার অগ্রাধিকার দিয়েছে বলে উল্লেখ করে বলেন, বিদ্যুত প্রাপ্তির জন্য এ ধরনের জ্বালানির বিকল্প নেই আর তাই দেশের রপ্তানিমুখী পোশাক খাতের জন্য এটি বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
ইআরএফ সভাপতি মোহাম্মদ রেফায়েত উল্লাহ মির্ধার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ সেমিনারে আরও বক্তব্য রাখেন- সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের গবেষণা পরিচালক ড. খোন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম, সিটি ব্যাংকের বিজনেস কান্ট্রি ম্যানেজার আশানুর রহমান ও ক্লিনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হাসান মেহেদী। সেন্টার ফর এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড পার্টিসিপেটরি রিসার্চের (সিইপিআর) চেয়ারপারসন গৌরাঙ্গ নন্দী সেমিনারের বিষয়বস্তু উপস্থাপনা করেন এবং ইআরএফের সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন।
কবির বলেন, এটা সত্য নয় যে, সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্পের প্রচারের ক্ষেত্রে জমির অভাবই প্রধান বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে প্রচুর খালি জমি রয়েছে, যা অব্যবহৃত।
তিনি বলেন, ‘ওই হাজার হাজার একর জমি সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে।’ ইনভার্টার, প্যানেল ও স্ট্রাকচারের মতো সৌর বিদ্যুতের বিভিন্ন উপাদান আমদানিতে কর ছাড়ের ধারণারও বিরোধিতা করে উপদেষ্টা বলেন, এগুলো বিদেশ থেকে আমদানি করা উচিত নয়। বরং, এগুলো ভারতের মতো স্থানীয়ভাবে উৎপাদন করা উচিত। তিনি বাতিল হওয়া ৩৭টি সৌর বিদ্যুৎ কেন্দ্রের পুনর্বিবেচনার দাবিরও বিরোধিতা করেন, যা কুইক এনহ্যান্সমেন্ট অব ইলেক্ট্রিসিটি অ্যান্ড এনার্জি সাপ্লাই (স্পেশাল প্রভিশন) অ্যাক্ট ২০১০-এর ভিত্তিতে বাছাই করা হয়েছিল এবং পূর্ববর্তী সরকার এতে ইচ্ছুক পত্র জারি করেছিল।
উপদেষ্টা বলেন, ‘হাইকোর্ট ইতোমধ্যে আইনটি বাতিল করে দেওয়ায় এই প্রকল্পগুলো এখন আর পুনর্বিবেচনা করার কোন সুযোগ নেই।’ বর্তমানে সরকার বেসরকারি বিদ্যুৎ উৎপাদন নীতির অধীনে স্থাপিত আইপিপি পাওয়ার প্ল্যান্টের মোট বিদ্যুৎ কেনার নিশ্চয়তা প্রদান করে। উপদেষ্টা বলেন, নতুন নীতিমালায় বেসরকারি উৎপাদককে সরকারি গ্রিড সিস্টেমে নিজস্ব ক্রেতার মাধ্যমে হুইলিং চার্জ দিয়ে বিদ্যুৎ বিক্রি করতে হবে। তিনি বলেন, বিগত আওয়ামী লীগের শাসনামলে ব্যাংকগুলো বিনিয়োগকারীদের সম্পদের ভিত্তিতে নয়, জনগণকে সমর্থন পেতে অনেক প্রকল্পে অর্থায়ন করেছে।
ড. খোন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, স্থানীয় ব্যাংকগুলো প্রায়ই নবায়নযোগ্য জ্বালানি প্রকল্পে অর্থায়নে আগ্রহী হয় না। কারণ এগুলো দীর্ঘমেয়াদি আর ব্যাংকগুলো স্বল্পমেয়াদি ভিত্তিতে আমানত সংগ্রহ করে। সুতরাং, দীর্ঘমেয়াদী প্রকল্পে অর্থায়নে ঝুঁকি রয়েছে এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংক ঝুঁকি নিরসনের উদ্যোগ নেয়।
গৌরাঙ্গ নন্দী বলেন, ব্যাংকগুলো নবায়নযোগ্য জ্বালানি প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য সবুজ অর্থায়ন করলেও সৌরশক্তিতে বিনিয়োগে কোনো ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা নেই। কারণ এ খাতে বিনিয়োগের জন্য ব্যাংকগুলোর কোনো সুনির্দিষ্ট নির্দেশিকা নেই।