শিরোনাম
বান্দরবান, ৯ নভেম্বর ২০২৪ (বাসস): নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ায় বান্দরবানে প্রাণ ফিরছে পর্যটনে। জেলার মেঘলা, নীলাচল ও শৈলপ্রপাতে এখন পর্যটকের সমাগম।
বেড়াতে আসা পর্যটকেরা উপভোগ করছেন সবুজ পাহাড়, নৈসর্গিক প্রকৃতি আর শীতল হাওয়া। অনেকে স্বচ্ছ লেকের পানিতে কায়াকিং করে ভাসছেন। আবার কেউ চড়ছেন
পাহাড়ের এপার থেকে ওপারে ঝুলন্ত ক্যাবল কারে। আবার প্রকৃতি অপার সৌন্দর্য্যকে পাশে রেখে নিজেকে ফ্রেমে বন্দি করছেন কেউ কেউ।
সরেজমিনে দেখা যায়, পরিবার পরিজন নিয়ে এসেছেন অনেকে আবার কেউ এসেছেন বন্ধু বান্ধব নিয়ে। শিশুরা কেউ চড়ছেন দোলনায়। সব বয়সের পর্যটকরা ঘুরে ঘুরে দেখছেন পর্যটনকেন্দ্রের এপাশ ওপাশ। দূর দূরান্ত থেকে অনেকে সপরিবার এসেছেন। ভিতরে প্রবেশের জন্য টিকিট কাউন্টারের সামনে ভীড় করছেন সবাই। তবে গতকাল শুক্রবার ছুটির দিন হলেও পর্যটনকেন্দ্রগুলোতে ভীড় খুবই কম। তবে এসব পর্যটক জেলার আশপাশের অঞ্চলের।
নীলাচল পর্যটনকেন্দ্রে ঢাকা থেকে ঘুরতে আসা মাহফুজ খান বলেন, বন্ধ থাকার কারনে আসতে পারেনি। খোলার সাথে সাথে পরিবারের সবাইকে নিয়ে চলে আসি। খুবই সুন্দর।
পাহাড়ের আবহাওয়া খুব গরম না, হালকা ঠান্ডা। ভালোই লাগছে। দুদিন প্ল্যান নিয়ে আসছি। চিম্বুক, নীলগিরি যাবো।
কুষ্টিয়া থেকে আসা দেবাশীষ পাল জানান, খুব ভালো লাগছে। অনেক সুন্দর। আগে কখনো আসা হয়নি। পাহাড় প্রকৃতি এখনো সবুজ।
রংপুর থেকে মেঘলায় ঘুড়তে আসা শাহানা আক্তার বলেন, অনেক সুন্দর। ঝুলন্ত ব্রিজটা দুলছে। পার হওয়ার সময় ভয় লাগছিল। এতদিন পর্যটনকেন্দ্র বন্ধ থাকার কারণে আসতে পারিনি।
নীলাচল পর্যটনকেন্দ্রের টিকেট ম্যানেজার আদিব বড়–য়া জানান, ৭০০ টিকেট বিক্রি হয়েছে। এরকম মৌসুমে ছুটির দিনে দ্বিগুণ তিনগুণ টিকিট বিক্রিহয়।
পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, ৬ নভেম্বর সকালে সংবাদ সম্মেলন করে বান্দরবানের পর্যটকদের ভ্রমণের বিধিনিষেধ তুলে নেয় জেলা প্রশাসন। এখন পর্যন্ত জেলায় ৭৪টি আকর্ষণীয় পর্যটন স্পট রয়েছে এবং ৮০টিরও অধিক হোটেল রিসোর্ট রয়েছে। পর্যটকদের ধারণ ক্ষমতা রয়েছে ৮ হাজারের।
বান্দরবান হোটেল রিসোর্ট ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সিরাজুল ইসলাম বলেন, পর্যটকদের আকৃষ্ট করতে বিভিন্ন সেক্টরে ছাড় দেওয়া হয়েছে। আমরা আশা করছি পর্যটকরা আসবেন এবং বান্দরবানের সৌন্দর্য্য উপভোগ করবেন। তবে শুক্রবারে পর্যটকের উপস্থিতি কম। এর সংখ্যা আসতে আসতে বাড়তে পারে।
বান্দরবান হোটেল রিসোর্ট ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনে সাধারণ সম্পাদক মো. জসীম উদ্দীন জানান, গত ৮ অক্টোবর পর্যটক ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়, তুলে নেওয়া হয় ৬ অক্টোবর। পর্যটক টানতে আবাসিক হোটেলে ৩৫ শতাংশ, অবকাশ যাপনকেন্দ্রে ২৫ শতাংশ ভাড়া কমানো হয়েছে। খাবারের হোটেলে ১০ শতাংশ মূল্য কম রাখা হবে। পুরো নভেম্বর মাস পর্যন্ত এই সুবিধা বহাল রাখা হবে।
জেলা প্রশাসক শাহ্ মোজাহিদ উদ্দিন জানিয়েছেন, জেলার চার উপজেলার সদর, লামা, আলীকদম এবং নাইক্ষ্যংছড়ি সাথে নীলগিরি পর্যটকদের জন্য ভ্রমণে উন্মুক্ত করা হয়। তবে জননিরাপত্তার কথা চিন্তা করে অন্য তিন উপজেলা রোয়াংছড়ি, রুমা এবং থানচিতে ভ্রমণে বিরত থাকার জন্য বলা হয়েছে।