শিরোনাম
লালমনিরহাট, ১৮ডিসেম্বর , ২০২৪ (বাসস) : বিজয়র দিবস উপলক্ষে বউ জামাই মেলা উদযাপন পরিষদের উদ্যোগে জেলা সদরের বড়বাড়ি শহীদ আবুল কাশেম মহাবিদ্যালয় প্রাঙ্গনে,১৫ দিনব্যাপী বউ-জামাই মেলার শুভ উদ্বোধন করা হয়েছে।
এ মেলার উদ্বোধন করেন বিএনপি'র রংপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক মন্ত্রী অধ্যক্ষ আসাদুল হাবিব দুলু।
গত১৬ ডিসেম্বর সকাল থেকে শুরু হওয়া এ মেলা চলবে আগামী ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত।
এবার বউ-জামাই মেলায় মৎস্য ও শীতের পিঠার স্টল ও অন্যান্য প্রসাধনী পণ্যের স্টল স্থান পেয়েছে। মেলায় বিভিন্ন ধরনের পিঠা ও নানা প্রকারের মাছ নিয়ে বসেছে দোকানিরা।আর ক্রেতারাও ভিড় জমিয়ে কেনাকাটা করছে।
এই মেলাটির তাৎপর্য হলো এ অঞ্চলের জামাইরা বৌ নিয়ে সকাল বেলায় এই মাছের মেলায় আসবেন। আর বড় বড় মাছ নিয়ে শ্বশুর বাড়িতে যাবেন। আর সেই মাছের তরকারি দিয়ে দুপুরের খাবার খাবেন। খেয়ে আবার বিকেলে পিঠে মেলায় আসবেন। এসে সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপভোগ করবেন।
গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্যবাহী বউ-জামাই মেলার প্রথম দিন থেকেই উপচে পড়া ভিড় দেখা গেছে। বিশেষ করে মেয়েরা শাড়ি পড়ে জামাই সহ মেলায় এসে আনন্দ উপভোগ করেছে।
জেলার বিভিন্ন স্থানের পাশাপাশি আশপাশের জেলা গুলো থেকেও দর্শনার্থীরা মেলায় যোগ দিয়েছেন।
মেলায় প্রতিদিন সকালে মৎস্য উৎসব ও বিকেল থেকে রাত ১১ পর্যন্ত চলবে পিঠা উৎসব। মেলা উপলক্ষে সদর উপজেলার চারটি ইউনিয়নের অনেকের বাড়িতে এসেছেন মেয়ে ও জামাই। গলায় মালা ও লাল শাড়ি পড়ে নতুন রূপে সেজে-গুজে মেয়ে ও জামাই এসেছেন মেলায়। তারা শ্বশুরবাড়ি যাওয়ার জন্য কিনছে বড় মাছ ও নানান রকমের পিঠা-পুলি। নতুন জামাই বাড়িতে আসবে বলে শ্বশুরদেরও কিনতে হচ্ছে বড় বড় মাছ।
মেলায় আগত দর্শনার্থীদের সাথে কথা হলে তারা জানান, অনেক আশা নিয়ে মাছ,পিঠা নিতে এ মেলায় এসেছি। কিন্তু বিক্রেতারা মাছ ও পিঠার দাম হাঁকাচ্ছেন বেশি। তবে দাম যাই হোক গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য ধরে রাখার জন্য মেলায় আসা বউ ও জামাই পছন্দ মতো মাছ ও পিঠা কিনে শ্বশুরবাড়ির দিকে রওনা দিচ্ছেন। বিক্রেতারা বলছেন আড়তেই দাম চড়া। এ কারণে পরিবহন খরচ সহ এই মাছগুলোর বিক্রি করতে হয়। মেলায় বিক্রি বেশি হয় তাই লাভ কম করি। পিঠা বিক্রেতারা বলছেন, সব জিনিসেরই দাম বেশি হওয়ায় এ বছর পিঠা দাম একটু বাড়াতে হয়েছে।
মেলা আয়োজক কমিটির আহবায়ক ফারুক সিদ্দিকী ও সদস্য সচিব নাজমুল হুদা লিমনজানান, গ্রামীণ ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে বউ-জামাই মেলার আয়োজন করা হয়েছে। মেলার পাশাপাশি গ্রাম বাংলার বিভিন্ন নাটক ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপস্থাপন করা হবে। এছাড়াও নতুন প্রজন্মরা বিলুপ্ত প্রায় অনেক প্রজাতির মাছ ও পিঠার সঙ্গে পরিচিত হতে পারবে। সব মিলিয়ে গ্রাম-বাংলার হারানো ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতেই মূলত এ ব্যতিক্রমী মেলার আয়োজন করা হয়েছে।