শিরোনাম
চট্টগ্রাম, ২৩ জানুয়ারি, ২০২৫ (বাসস) : চলতি বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) উইকেট ব্যাটিং সহায়ক হওয়ায় বোলিংয়ে দক্ষতা বাড়াতে সহায়তা করেছে বলে জানান রংপুরের রাইডার্সের পাকিস্তানী পেসার আকিফ জাভেদ।
বিপিএলে এখন পর্যন্ত ৭ ম্যাচে ১৫ উইকেট নিয়েছেন তিনি। এতে প্রথমবারের মত পাকিস্তান জাতীয় দলে ডাক পাবার দাবি জোরদার করেছেন এই বাঁ-হাতি পেসার।
লাইন-লেন্থ বজায় রাখা ও সঠিক জায়গায় বোলিং অব্যাহত রাখলে যেকোন ধরনের উইকেটে সাফল্য পাওয়া সহজ বলে জানান আকিফ।
বাসসের সাথে এক সাক্ষাৎকারে আকিফ বলেন, ‘আমি যখন বোলিং করি, তখন যতটা পারি লাইন-লেন্থ বজায় রাখার চেষ্টা করেছি। আমি জানতাম বিপিএলের এই উইকেট থেকে যথেষ্ট সুবিধা পাবে ব্যাটাররা। তবে ব্যাটারদের চাপে রাখতে সঠিক জায়গায় বল করার চেষ্টা করেছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘উইকেট যেমনই হোক না কেন যখন সঠিক জায়গায় বল করলে ব্যাটারদের পক্ষে খেলা কঠিন হয়ে পড়ে। এজন্য আমি সবসময় লাইন বজায় রেখেই বল করার চেষ্টা করি।’
এবারের আসরে এখন পর্যন্ত ১৫ উইকেট নিয়ে বোলিং তালিকায় দ্বিতীয়স্থানে আছেন আকিফ। ১০ ম্যাচে ২১ উইকেট নিয়ে শীর্ষে আছেন দুর্বার রাজশাহীর তাসকিন আহমেদ।
তাসনকিনের চেয়ে উইকেট শিকার কম হলেও, লাইন বজায় রেখে বোলিং করে প্রতিপক্ষ ব্যাটারদের চাপে রাখতে সমর্থ হন আকিফ। তার বোলিং নৈপুণ্যে অন্য প্রান্ত দিয়ে রংপুরের বাকি বোলাররা বাড়তি সুবিধাও পায়। বেশিরভাগ ম্যাচে প্রতিপক্ষ ২শ’ রানের সংগ্রহ পেলেও আকিফের বোলিং ইকোনমি রেট ছিলো ৬.৫৯।
আকিফ বলেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ আমি ভালো পারফর্ম করছি। আগেই বলেছি আমি সব উইকেটেই লাইন-লেন্থ বজায় রাখার চেষ্টা করেছি। লাইন-লেন্থ বজায় থাকলে সাফল্য পাওয়া যায়। এটাই আমার জীবনের মন্ত্র।’
২০১৯-২০ মৌসুমে কায়েদ-ই-আজম ট্রফিতে বেলুচিস্তান দলে ডাক পান ২০০০ সালে জন্ম নেওয়া পেসার আকিফ। একই বছর ঘরোয়া জাতীয় টি-টোয়েন্টি কাপ দিয়ে বেলুচিস্তানের হয়ে টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে অভিষেক হয় তার। ঐ একই বছরে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটেও অভিষেক হয় আকিফের। প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেটে অভিষেকের পর তিন ফর্মেটে দুর্দান্ত পারফরমেন্সের সুবাদে ২০১৯ সালে বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত এসিসি ইমার্জিং এশিয়া কাপের জন্য পাকিস্তান দলে সুযোগ পান আকিফ।
২০১৯ সালের নভেম্বরে ইমার্জিং টিমস কাপে আফগানিস্তানের বিপক্ষে পাকিস্তানের হয়ে লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে অভিষেক হয় আকিফের। ২০২১ সালের অক্টোবরে শ্রীলংকা সফরের জন্য পাকিস্তান শাহিনস দলে সুযোগ পান তিনি। এখন পর্যন্ত ২৩টি প্রথম শ্রেনির ম্যাচ, ৩০টি লিস্ট ‘এ’ এবং ৬৩টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেছেন আকিফ।
২২ গজে বল হাতে ধারাবাহিক পারফরমেন্সে অনেকেরই নজর কেড়েছেন আকিফ। সম্প্রতি পাকিস্তানের সাবেক অধিনায়ক সালমান বাট জানান জাতীয় দলে সুযোগের জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত আকিফ।
সালমানের মতে, লাইন-লেন্থ বজায় রেখে দ্রুত গতিতে বোলিং করার কারণে নিয়মিত উইকেট শিকার করতে পারেন আকিফ। সাবেক বাঁ-হাতি ব্যাটারের মতে যেহেতু অন্যান্য বোলাররা ফিট নয়, তাই এখনই আকিফের সার্ভিস নেওয়ার উপযুুক্ত সময়।
সালমানের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে আকিফ বলেন, সে অত্যন্ত বিনয়ী। আমি কৃতজ্ঞ যে, আমার সর্ম্পকে তিনি খুবই ইতিবাচক কথা বলেছেন। বিষয়টা হলো জাতীয় দল নির্বাচন আমার হাতে নেই। আমি ভাল খেলার চেষ্টা করতে পারি এবং আমি যদি ধারাবাহিকভাবে ভাল খেলতে পারি আশা করা যায় জাতীয় দলে ডাক পাবো।’
আকিফ জানান, বোলিং দক্ষতার আরও উন্নতি জন্য বিপিএল একটি ভাল প্ল্যাটফর্ম। কারণ এখানকার উইকেট ব্যাটারদের অনুকূলে।
আকিফ বলেন, ‘সিলেট পর্বটা খুব কঠিন ছিল। ব্যাটারদের জন্য উইকেট প্রস্তুত ছিল। কিন্তু ভালো বোলিং করতে পারলে উইকেট পাওয়া যাবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এটা আসলে ভালো উইকেট, যেখানে দক্ষতা দেখাতে পারলেই বোলিংয়ে সফল হওয়া যাবে। এটা বোলারদের জন্য চ্যালেঞ্জিং হলেও আমি আগেই বলেছি যদি সঠিক জায়গায় বল রাখা যায় সাফল্য আসবেই। আমি মনে করি এই ধরনের উইকেট আমার বোলিং দক্ষতা বাড়াতে সহায়তা করেছে।’
পাকিস্তানের বাইরে থাকলেও বাংলাদেশের মাটিতে ঘরের মত অনুভব করছেন আকিফ। কারণ প্রতিটি ম্যাচেই দর্শকদের সমর্থন পাচ্ছেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘বিপিএলে দর্শক উপস্থিতি চমৎকার। তারা ক্রিকেটের বড় ভক্ত এবং সব খেলোয়াড়দের সমর্থন করে। তাদের কাছ থেকে অনেক ভালোবাসা পেয়েছি। মনে হচ্ছে আমি পাকিস্তানে খেলছি।’