শিরোনাম
ঢাকা, ২৭ নভেম্বর, ২০২৩ (বাসস) : দেশে প্রাপ্ত বয়স্কদের ঘুমের মধ্যে রোগের প্রাদুর্ভাব, ঝুঁকি ও স্বাস্থ্যের ক্ষতি এবং এর থেকে মুক্তি পাওয়ার উপায় নিয়ে গবেষণা চালাচ্ছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) ।
আজ সোমবার রাজধানীর শাহবাগস্থ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) শহীদ ডা. মিল্টন হলে আয়োজিত ‘বাংলাদেশে প্রাপ্ত বয়স্কদের ঘুমের মধ্যে রোগের প্রাদুর্ভাব, ঝুঁকি এবং স্বাস্থ্যের ক্ষতি’ সংক্রান্ত প্রাথমিক গবেষণার ফলাফল ও প্রশিক্ষণ সনদ বিতরণ অনুষ্ঠানে এ তথ্য জানানো হয়।
এই অনুষ্ঠানে বিশেষজ্ঞরা বলেন, গবেষণার মাধ্যমে প্রাপ্ত ফলাফল রোগ প্রতিরোধ ও চিকিৎসাতেও বড় ধরণের ভূমিকা রাখবে। অনুষ্ঠানে বিএসএমএমইউ’র উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মোঃ শারফুদ্দিন আহমেদ প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
বিশেষ অতিথি ছিলেন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের যুগ্ম-সচিব (চিকিৎসা শিক্ষা অধিশাখা) মল্লিকা খাতুন। এতে, সভাপতিত্ব করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (একাডেমিক) অধ্যাপক ডা. একেএম মোশাররফ হোসেন।
এ অনুষ্ঠানে জানানো হয়, বাংলাদেশে প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের মধ্যে অনিদ্রা, নিদ্রাকালীন শ্বাস রোগ, যেমন নাক ডাকা, অতিনিদ্রা, ঘুম-সজাগ চক্রের ব্যাধি, ঘুম সংক্রান্ত চলাফেরা ও নড়াচড়া ব্যাধি, নিদ্রাকালীন অনিয়ন্ত্রিত ব্যবহার ইত্যাদি রোগে ভুগছেন। এসব রোগের কারণে ডায়াবেটিস, স্ট্রোক, হৃদরোগের ঝুঁকি বেড়ে যাচ্ছে। ঠিক মতো ঘুম না হওয়ায় অনেকেই অফিসে কাজে অমনোযোগী থাকেন, তাদের মেজাজও খিটখিটে থাকে বলে তারা কলিগদের সাথে দুর্ব্যবহার করে। এই গবেষণাটি সম্পন্ন হলে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানা যাবে। ঘুমের মধ্যে আরো কি কি সমস্যা ও রোগ রয়েছে এবং সে কারণে অন্যান্য রোগের উপর কি ধরণের প্রভাব ফেলছে, তাও নিশ্চিত হওয়া যাবে। যা ঘুমের সমস্যা সংক্রান্ত রোগের চিকিৎসা ও প্রতিরোধে বিশেষ ভূমিকা রাখবে।
বাংলাদেশে কৃষি খাতে গবেষণায় বড় সাফল্য এসেছে এবং গবেষণার মাধ্যমে ইরি,বিরিসহ ফসল পাঁচ গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে এই উদাহরণ দিয়ে বিএসএমএমইউ’র উপাচার্য বলেন, দেশের স্বাস্থ্য খাতে গবেষণার মাধ্যমে অনুরূপ সাফল্য এখনও পর্যন্ত দেখানো যায়নি। গবেষণার মাধ্যমে কৃষির মতো চিকিৎসা বিজ্ঞানসহ স্বাস্থ্য খাতেও রোগ প্রতিরোধ ও প্রতিকারে অনুরূপ সাফল্য নিশ্চিত করতে হবে।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় গবেষণায় অনেক দূর এগিয়েছে। করোনা পরীক্ষার কিট উদ্ভাবন করে ২৫০ টাকায় মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে সক্ষম হয়েছে। করোনার দীর্ঘ মেয়াদী প্রভাব নিয়ে গবেষণা হয়েছে। করোনা ভাইরাসের ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা সংক্রান্ত এন্টিবডির দীর্ঘ মেয়াদী প্রভাব সংক্রান্ত গবেষণা কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
এ সময় অধ্যাপক ডা. মোঃ শারফুদ্দিন উল্লেখ করেন, অন্ধত্ব প্রতিরোধে গ্লুকোমা স্ক্রিনিং এবং এর ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে। ফ্রেঞ্চ ফ্রাই, কোল্ড ড্রিংকস ইত্যাদি নিয়ে গবেষণা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রত্যাশা অনুযায়ী বিএসএমএমইউ-তে গবেষণা কার্যক্রম বৃদ্ধি করা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘আশা করি, আগামীতে প্রধানমন্ত্রীর শত কোটি টাকার সমন্বিত গবেষণা প্রকল্প থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, চিকিৎসকরা ৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ পাবেন।’
উল্লেখ্য, অনুষ্ঠানে বিএসএমএমইউ’র উপাচার্য প্রশিক্ষণার্থীদের হাতে সনদপত্র তুলে দেন।