বাসস
  ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১১:০২

যশোরে ডেঙ্গু রোগী বেড়েছে: বেশি ঝুঁকিতে ঝিকরগাছা ও অভয়নগর উপজেলা

॥ সাজ্জাদ গনি খাঁন রিমন ॥
যশোর, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪ (বাসস); জেলায় এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু রোগী বেড়েছে। ঝুঁকিতে বেশি রয়েছে ঝিকরগাছা ও অভয়নগর উপজেলার বাসিন্দারা। জেলায় গত ২৪ ঘণ্টায় ৩৬ ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়েছে, এর মধ্যে ১৬ জনই হলেন ঝিকরগাছা উপজেলার বাসিন্দা।
সিভিল সার্জন অফিসের মিডিয়া সেলে দায়িত্বপ্রাপ্ত তথ্য কর্মকর্তা এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। আক্রান্তরা যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। জানা গেছে,  নতুন করে শনাক্ত ৩৬ রোগীর মধ্যে যশোর সদর উপজেলায় সাতজন,  শার্শা উপজেলায় পাঁচজন, ঝিকরগাছা উপজেলায় ১৬ জন, বাঘারপাড়া উপজেলায় সাতজন, অভয়নগর উপজেলায় ১৫ জন, কেশবপুর উপজেলায় আটজন রয়েছেন। গত আটমাসে যে পরিমাণে ডেঙ্গু রোগী ছিলো সেই তুলনায় চলতি মাসে সবচেয়ে বেশি ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হচ্ছে। যশোরের সিভিল সার্জন ডা. মাহমুদুল হাসান জানান, বর্তমানে ডেঙ্গুতে ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে অভয়নগর ও ঝিকরগাছা উপজেলা। এখানে ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হচ্ছে সবচেয়ে বেশি। কয়েকদিনের পরিসংখ্যানে এমনটা মনে হচ্ছে। তিনি জানান, ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসা নিশ্চিত করার জন্য প্রতিটি হাসপাতালে ডেঙ্গু কর্ণার খোলা হয়েছে।
সিভিল সার্জন জানান, এডিস মশার কামড়ে ডেঙ্গু হয়। সেজন্য বাড়ির আশপাশে ও ডোবা নালা, ময়লা-আবর্জনার স্তূপ নোংরা ড্রেন নিয়মিত পরিষ্কার করা ছাড়াও ফুলের টব, টায়ার ও ডাবে পানি জমে না থাকার ব্যাপারেও মানুষের আরও বেশি সচেতন হতে হবে। স্বাস্থ্য বিভাগের মাঠ
কর্মি ও কমিউনিটি ক্লিনিক হেলথ কেয়ার প্রোভাইডারদের জণগণের সচেতন করার কাজে মাঠে নামানো হয়েছে। তারা ডেঙ্গু প্রতিরোধে সক্রিয় কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন।
যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত তত্ত্বাবধায়ক ডা. হারুন অর রশিদ জানান, যশোরে ডেঙ্গু পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে। যে কারণে হাসপাতালেও ডেঙ্গু রোগী বেড়েছে। ডেঙ্গু নিয়ে মানুষকে সচেতন হতে হবে। তিনি আরও জানান, হাসপাতালে ডেঙ্গু পরীক্ষার জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণে কীট সরবরাহ রয়েছে। ফলে জ্বর আসলে বাড়িতে বসে না থেকে রোগীদের হাসপাতালে ডেঙ্গু পরীক্ষার পরামর্শ  দিয়েছেন এই চিকিৎসক কর্মকর্তা।
উল্লেখ্য, গত ২০১৯ সালে যশোরে ডেঙ্গু রোগের প্রকোপ দেখা দেয়। এক প্রকার ভয়াবহ রূপ ধারণ করে। জেলায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়ায় ৩ হাজার ৪৫১ জন। নারী পুরুষের সাথে আক্রান্তের তালিকায় শিশু ছিলো। এছাড়া ৬ জনের মৃত্যু হয়েছিলো। ২০২০ সালে ডেঙ্গুর প্রকোপ এক লাফে কমে যায়। যশোর জেলায় মাত্র ৫৬ জন নারী পুরুষ আক্রান্ত হয়েছিলেন। মৃতের তালিকায় কেউ ছিলোনা। ২০২১ সালের ৪২ জন ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন। আর ২০২২ সালে ৪৪৬ জনের ডেঙ্গু শনাক্ত হয়। কিন্তু গত তিন বছরে ডেঙ্গুতে কারো মৃত্যু হয়নি। ২০২৩ সালে ডেঙ্গুর চোখ রাঙানী শুরু হয়েছে। ওই বছরে  ১৫ নারী-পুরুষ ডেঙ্গুতে মারা যান। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে গতকাল ১৯ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত জেলায় ৩৩৪ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন। এরমধ্যে দুইজন মারা গেছেন।