শিরোনাম
মাগুরা, ২৫ নভেম্বর, ২০২৪ (বাসস): মাগুরা ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে চিকিৎসক, নার্স, জনবলসহ নানা সংকটে ব্যহত হচ্ছে চিকিৎসা সেবা। এছাড়া হাসপাতালের ৬ তলা ভবনে র্যাম সিড়ি না থাকা, বিশুদ্ধ খাবার পানি সরবরহের সল্পতা, ড্রেনেজ ব্যবস্থা সংস্কার না হওয়া এবং সেফটি ট্যাংক ওভারফ্লো হয়ে পরিবেশ দূষণসহ বিভিন্ন সমস্যায় জর্জারি।
২৫০ শয্যার হাসপতাল হলেও সেখানে প্রতিদিন গড়ে ৪০০ থেকে ৫০০ জন রোগী ভর্তি থাকে।
মাগুরা ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়কের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, সিনিয়র কনসালটেন্ট ডাক্তারের ১০টি পদের বিপরীতে ৯টি পদই শুন্য, জুনিয়ার কলসালটেন্ট ডাক্তরের ১৪টি পদের বিপরীতে ৮টি শুন্য, ১ জন অবাসিক মেডিকেল অফিসারের পদ শুন্য, মেডিকেল অফিসার ১৪ জনের বিপরীতে ১২টি পদই শুন্য, ইমারজেন্সী মেডিকেল অফিসার ৬ জনের বিপরীতে ৩ জনের পদ শুন্য এবং সিনিয়র স্টাফ নার্সের ১৪৭ জনের বিপরীতে ১১টি পদ শুন্য রয়েছে। এছাড়া জনবল সংকটের মধ্যে তৃতীয় শ্রেণীর ৪৬ জনের বিপরীতে কর্মচারী ১৭টি পদ শূন্য এবং এমএলএসএস, ওয়ার্ড বয়, কুক মশালচী, মালিসহ ১৮টি পদ শুন্য রয়েছে। এর পাশাপাশি ক্লিনারের পদ শুন্য রয়েছে ৭টি।
হাসপাতালের পুরতান ভবনের একটি অংশ মাগুরা মেডিকেল কলেজের জন্য ছেড়ে দেয়া হয়েছে। সেখানে সীমিত অবকাঠামোর মধ্যেই চলছে মেডিকেল কলেজের শিক্ষা কার্যক্রম। ২০১৮ সালে ২৫০ শয্যা হাসপাতালের নতুন ভবনের কাজ শেষ হয়। প্রকৃতপক্ষে সেখানে ১৫০ বেডের সুযোগ সুবিধা রয়েছে। সেখানে বর্তমানে প্রতিদিন গড়ে ৪০০ থেকে ৫০০ জন রোগী ভর্তি থাকে। ফলে অনেক রোগীরই জায়গা হয় ওয়ার্ডের মেঝে বা বারান্দায়।
২০১৮ সালে ২৫০ শয্যা হাসপতালের ৬ তলা ভবনের নির্মাণ কাজ শেষ হলেও সেখানেও রয়েছে নানা সমস্যা। হাসপাতলের ৬ তলা ভবনে রোগী ওঠানামার জন্য কোন র্যাম সিড়ি নেই, দুইটি লিফটের মধ্যে একটি লিফট অচল, অন্য লিফটটি প্রায়ই অচল হয়ে পড়ায় রোগীসহ জনসাধারণের দুর্ভোগ বৃদ্ধির পাশাপাশি সেবার মান বিঘ্নিত হচ্ছে। সার্বক্ষণিক বিদ্যুৎ ব্যবস্থা থাকার জন্য ২টি ফেজে বিদুৎ সংযোগ স্থাপন দরকার, সেফটি ট্যাংক প্রায়ই ওভারফ্লো হয়ে পরিবশে দূষণ হচ্ছে, এ্যাম্বুলেন্স প্রায়ই নষ্ট হওয়ায় অরেকটি এ্যম্বুলেন্স জরুরী ভিত্তিতে প্রয়োজন, বিশুদ্ধ খাবার পানি সরবরাহের জন্য আরো নলকূপ স্থাপন করা প্রয়োজন, রান্না ঘরে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন থাকার কারনে রান্না ঘরের কাজের বিঘ্ন হচ্ছে, ওয়াসরুমের ড্রেনেজ ব্যবস্থার সংস্কার করতে হবে, ফ্যানের সল্পতা ও অনেকগুলো ফ্যান অকেজো থাকায় রোগীদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। চিকিৎসক ও নার্সিং কর্মকর্তাদের অফিস কক্ষে বসার জন্য ফর্নিচার সল্পতা, হাসপতালে মাত্র ২টি সিসি ক্যামেরা ভালো আছে, বাকি সিসি ক্যামেরাগুলো যত দ্রুত সম্ভব লাগানো প্রয়োজন। এসব সমস্যা সমাধানে ইতিমধ্যে গণপূর্ত বিভাগসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
হাসপতালের আরএমও এ এইস এম রফিকুল আহসান জানান, ডাক্তার ও জনবল সংকটসহ নানা কারনে রোগীর চাপ সামলতে ও সেবা প্রদানে আমাদের হিমসিম খেতে হচ্ছে।
মাগুরা ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাক্তার মোহসিন উদ্দিন ফকির জানান, হাসপাতালে ডাক্তার ও জনবল সংকট সমাধান করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আমারা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে চিঠির মাধ্যমে অবহিত করেছি। এছাড়া হাসপাতালের ভবনের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের জন্য গণপূর্ত বিভাগসহ সংশ্লিষ্ট কর্র্তৃপক্ষকে চিঠি দেয়া হয়েছে। হাসপাতালের কিডনী ডায়ালোসিস বিভাগে জনবল ও যন্ত্রপাতি সরবরাহ অত্যন্ত জরুরী। এর পাশাপাশি ১০ বেডের আইসিইউ ও সিসিইউ নির্মাণাধীন রয়েছে। যেখানে জনবল নিয়োগ করে এর কার্যক্রম চালু করা জরুরী বলে জানিয়েছেন তত্ত্বাবধায়ক।