শিরোনাম
ঢাকা, ৩০ ডিসেম্বর, ২০২৪ (বাসস): ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের খাদ্য ও পুষ্টি ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. রুহুল আমিন বলেছেন, দেশে উৎপাদিত খাদ্যদ্রব্যের মধ্যে ফল ও সবজিতে কীটনাশকের ব্যবহারের হার সবচেয়ে বেশি।
তিনি বলেন, ‘আমাদের কৃষকরা কীটনাশক ব্যবহারে সাধারণত নিয়ম-কানুন অনুসরণ করে না। ফলে দেখা যায় খাদ্যপণ্যের মধ্যে শাক-সবজি ও ফলে কীটনাশকের উপস্থিতি বেশি পাওয়া যাচ্ছে। দেশে উৎপাদিত কোন খাদ্য কতটুকু নিরাপদ তা জানা যায় না। তবে আমাদের প্রত্যাশা সব ধরনের খাবারই নিরাপদ থাকতে হবে।’
আজ সোমবার রাজধানীর শাহবাগে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের (বিএফএসএ) কার্যালয়ে তাদের সার্বিক কার্যক্রম নিয়ে আয়োজিত ‘মিট দ্য প্রেস’ শীর্ষক এক সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে তিনি এসব কথা বলেন।
সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন বিএফএসএ’র চেয়ারম্যান জাকারিয়া। এ সময় বিএফএসএ’র সদস্য মাহমুদুল কবির মুরাদ ও মো. ওয়াহিদুজ্জামান উপস্থিত ছিলেন।
মূল প্রবন্ধে ড. রুহুল আমিন বলেন, জাতিসংঘের এসডিজি গোল-২ এ খাদ্য নিরাপত্তা ও নিরাপদ খাবারের ব্যাপারে বলা হয়েছে।
তিনি দেশের মানুষের খাদ্যে ফল গ্রহণ সম্পর্কে বলেন, গ্রামের মানুষ ২৩.৮ ও শহরে ৩৮ শতাংশ ফল খেয়ে থাকে। এটি বিভাগীয়ভাবে গ্রহণের ক্ষেত্রে বরিশালে ৪০.২, চট্টগ্রামে ১৭.৩, ঢাকায় ২৬.৫, খুলনায় ২৬.২, ময়মনসিংহে ৩৫.৮, ৪৮.৯, রংপুরে ৬০.১ ও সিলেটে ৪৫.৭ শতাংশ।
এদিকে গরুর মাংস ও পোলট্রি মাংস গ্রহণের ক্ষেত্রে গ্রামের মানুষ ১৫.৭, শহুরে ৩৩.১ শতাংশ, ডিম গ্রহণে গ্রামের মানুষ ১০.১, শহুরে ১৮.৯ শতাংশ।
এছাড়া দেশে ডিম, দুধ ও মাংসের উৎপাদন বেড়েছে। সেখানে ধনীদের এটি গ্রহণের হার ৭ শতাংশ ও গরিব মানুষের খাদ্য গ্রহণের হার মাত্র ২ শতাংশ।
ফুড সেফটি ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম সম্পর্কে বলেন, বিদেশে রপ্তানি করতে হলে নিরাপদ খাদ্য রপ্তানি করতে হবে। তা না হলে বিদেশিরা আমাদের পণ্য কিনবে না।
কীটনাশক ব্যবহার সম্পর্কে জাকারিয়া বলেন, সবজিতে কীটনাশক সরাতে ১৫ মিনিট ভিজিয়ে রাখলে কিছুটা কমে। বেশি অনিরাপদ বা ক্ষতিকারক খাদ্য এড়িয়ে চলতে হবে।
নিজেদের জনবল সম্পর্কে তিনি বলেন, সারাদেশে ২৪৮ জনবল নিয়ে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ কাজ করছে। এটি বাড়ানোর ব্যাপারে কাজ চলছে। এছাড়া খাদ্য নিরাপদ কিনা তা পরীক্ষায় বৈদেশিক অনুদানের মাধ্যমে ঢাকা, চট্টগ্রাম ও খুলনায় আরও ৩টি ল্যাব প্রতিষ্ঠা করা হবে। এতে ৩১৮টি পদে লোকবল নিয়োগের জন্য সরকারের কাছে আবেদন করা হবে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, খোলাবাজারে পণ্যের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা কঠিন। কেননা এটা তারা উৎপাদন করে না। তবে রেস্টুরেন্টে ভেজাল খাবার দেয় কিনা তা আমরা ধরে থাকি। আর ভেজাল পাওয়া গেলে কর্তৃপক্ষ কাউকে ছাড় দেয় না। এছাড়া রেস্টুরেন্ট বন্ধ করার ক্ষমতা আমাদের নেই, তার জন্য আদালতের ওপর নির্ভর করতে হয়।