শিরোনাম
ঢাকা, ৯ এপ্রিল, ২০২৫ (বাসস): দরিদ্রদের বিনামূল্যে স্বাস্থ্যসেবা এবং সচ্ছলদের জন্য সরকারিভাবে স্বাস্থ্য বীমার ব্যবস্থা করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার নিশাত মাহমুদ।
পাবলিক হেলথ লইয়ার্স নেটওয়ার্ক এর সদস্য সচিব সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার নিশাত মাহমুদ আজ এ কথা বলেন।
‘স্বাস্থ্যসেবা প্রাপ্তি মৌলিক মানবাধিকার’ শীর্ষক ভার্চুয়াল সভায় আলোচক হিসেবে দেয়া বক্তৃতায় তিনি একথা বলেন।
তিনি বলেন, সংবিধানের দ্বিতীয় ভাগে রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি হিসেবে ১৫ এবং ১৮ অনুচ্ছেদে চিকিৎসা এবং গণস্বাস্থ্যের উন্নতির কথা বলা থাকলেও স্বাস্থ্যকে তৃতীয় ভাগে একটি মৌলিক অধিকারে স্থান দেওয়া হয়নি।
ব্যারিস্টার নিশাত মাহমুদ বলেন, বর্তমানে আমরা হাইকোর্টে ৩২ অনুচ্ছেদে ‘রাইট অব লাইফ’ মৌলিক অধিকারের অধীনে গণস্বাস্থ্য অধিকার নিয়ে রিট করি, কিন্তু তা পর্যাপ্ত ভাবে মানুষের স্বাস্থ্য অধিকার রক্ষা করছে না। তাই স্বাস্থ্যকে বা গণস্বাস্থ্য রক্ষাকে মৌলিক অধিকার হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা জরুরি।
স্বাধীনতার এতদিন পরেও রাষ্ট্র এখনো সবাইকে সমভাবে স্বাস্থ্যসেবা দিতে অপারগ। আইনগত কাঠামোর অপ্রতুলতার কারণেই এটা সম্ভব হচ্ছে না।
এ আইনজীবী ২০২২ সালে ৭২.৫ শতাংশ মানুষ চিকিৎসা ব্যয় তার নিজের পকেট থেকে করায় ৬১ লাখ মানুষ দারিদ্র সীমার নিচে চলে গেছে বলে তথ্য তুলে ধরেন। সকল নাগরিক স্বাস্থ্যসেবা সমভাবে যাতে পায়, সে জন্য দরিদ্রদের বিনামূল্যে স্বাস্থ্যসেবা এবং সচ্ছলদের জন্য সরকারিভাবে স্বাস্থ্য বীমার ব্যবস্থা করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন এ আইনজীবী।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার ভার্চুয়াল এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন। আলোচক হিসেবে এ ওয়েবিনারে আরো অংশ নেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. আবু জামিল ফয়সল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. রুমানা হক, বিআইডিডি এর পরিচালক (গবেষণা) ড. শরীফ আহমেদ চৌধুরী, নারীপক্ষ এর প্রকল্প পরিচালক সামিয়া আফরিন, উবিনীগ (উন্নয়ন বিকল্পের নীতি নির্ধারণী গবেষণা) এর পরিচালক সীমা দাস সীমু, জনস্বাস্থ্য গবেষক ও সাংবাদিক সুশান্ত সিনহা।
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. আবু জামিল ফয়সল বলেন, স্বাস্থ্যসেবার মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করতে চাইলে বিভিন্ন কম্যুনিটি ও মানুষের সময়োপযোগী অংশগ্রহণ অত্যন্ত দরকার, কিন্ত এজন্য আগে চাই সচেতনতা বৃদ্ধি। এর পাশাপাশি জনগণকে সেবা দেয়ার প্রক্রিয়াকে জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে।
অধ্যাপক ড. রুমানা হক বলেন, বিগত দশ বছর ধরে আমাদের স্বাস্থ্যসেবা খাতের অর্থায়ন অপ্রতুল ও ব্যবহারের বিষয়ে পুরোপুরি সচেতনতা নেই। বিগত সময়ের বিভিন্ন বাজেটে মেগাপ্রকল্প বা অবকাঠামো উন্নয়নকে যেভাবে প্রাধান্য দেয়া হয়েছে স্বাস্থ্য খাতকে সেভাবে প্রাধান্য দেয়া হয়নি। ভৌগলিক এলাকাভেদে মানুষের সংখ্যা, লিঙ্গ, বয়স, প্রায়োগিক ক্ষেত্রে ‘জেন্ডার বাজেট’ এর প্রয়োগ, বিশেষ চাহিদাকে ভেবে বাজেটে অর্থায়ন নির্ধারণ করা উচিত।
ওয়েবিনারটির সার্বিক আয়োজন করে সেন্টার ফর ল’ এন্ড পলিসি এফেয়ারস, পাবলিক হেলথ লইয়ার্স নেটওয়ার্ক ও স্বাস্থ্য আন্দোলন। সঞ্চালনা করেন এডভাকেট সৈয়দ মাহবুবুল আলম।