শিরোনাম
হায়দারাবাদ, ১০ অক্টোবর ২০২৩ (বাসস) : মোহাম্মদ রিজওয়ান ও আব্দুল্লাহ শফিকের জোড়া সেঞ্চুরিতে ওয়ানডে বিশ^কাপে টানা দ্বিতীয় জয় তুলে নিয়েছে পাকিস্তান।
শ্রীলংকার ছুঁড়ে দেয়া ৩৪৫ রানের টার্গেট ১০ বল বাকী রেখে ৬ উইকেটের জয় নিয়ে আজ মাঠে ছাড়ে পাকিস্তান। আব্দুল্লাহ ১১৩ রান থামলেও ১৩১ রানে অপরাজিত থেকে পাকিস্তানের জয় নিশ্চিত করেন রিজওয়ান।
হায়দারাবাদে টস জিতে প্রথমে ব্যাটিং করতে নামে শ্রীলংকা। দ্বিতীয় ওভারে পেসার হাসান আলির বলে খালি হাতে বিদায় নেন কুশল পেরেরা। এরপর দ্বিতীয় উইকেটে মেন্ডিসের সাথে ৯৫ বলে ১০২ রানের জুটি গড়েন আরেক ওপেনার পাথুম নিশাঙ্কা। ৭টি চার ও ১টি ছক্কায় ৬১ বলে ৫১ রানে ফিরেন নিশাঙ্কা।
তৃতীয় উইকেটে সামারাবিক্রমার সাথে জুটি গড়ার পথে ৬৫ বলে ওয়ানডেতে তৃতীয় সেঞ্চুরি করেন মেন্ডিস। যা শ্রীলংকার হয়ে বিশ^কাপে দ্রুততম সেঞ্চুরির রেকর্ড । ২৯তম ওভারে হাসানের দ্বিতীয় শিকার হওয়ার আগে ১৪টি চার ও ৬টি ছক্কায় ৭৭ বলে ১২২ রানের ঝড়ো গতির ইনিংস খেলেন মেন্ডিস। সামারাবিক্রমার সাথে জুটিতে তোলেন ৬৯ বলে ১১১ রান । দ্বিতীয় উইকেটেও সেঞ্চুরির জুটি পায় লংকানরা। বিশ^কাপে এই নিয়ে চতুর্থবার এক ম্যাচে দু’টি সেঞ্চুরির জুটি গড়লো শ্রীলংকা।
মেন্ডিস ফেরার পর পঞ্চম উইকেটে ধনাঞ্জয়া ডি সিলভার সাথে ৬৬ বলে ৬৫ ও ষষ্ঠ উইকেটে অধিনায়ক দাসুন শানাকাকে নিয়ে ৩২ বলে ৩০ রান তুলে দলের রান তিনশ পার করেন সামারাবিক্রমা। ধনাঞ্জয়া ২৫ ও শানাকা ১২ রান করেন।
৪৬তম ওভারে ওয়ানডেতে প্রথম সেঞ্চুরির দেখা পান ৮২ বল খেলা সামারাবিক্রমা। বিশ^কাপে শ্রীলংকার পক্ষে চার নম্বরে নেমে কুমার সাঙ্গাকারা ও অরবিন্দ ডি সিলভার পর সেঞ্চুরি করা তৃতীয় ব্যাটার এখন সামারা।
৪৮তম ওভারের শেষ বলে হাসানের চতুর্থ শিকার হওয়ার আগে ১১টি চার ও ২টি ছক্কায় ৮৯ বলে ১০৮ রান করেন এই ডান হাতি সামারাবিক্রমা। মেন্ডিস ও সামারাবিক্রমার জোড়া সেঞ্চুরিতে শেষ পর্যন্ত ৫০ ওভারে ৯ উইকেটে ৩৪৪ রানের সংগ্রহ পায় শ্রীলংকা। বিশ^কাপে পাকিস্তানের বিপক্ষে এটি সর্বোচ্চ দলীয় রান শ্রীলংকার। পাকিস্তানের হাসান ১০ ওভারে ৭১ রানে ৪ উইকেট নেন।
৩৪৫ রানের টার্গেট শুরুটা ভালো হয়নি পাকিস্তানের। অষ্টম ওভারে ৩৭ রানেই ২ উইকেট হারায় তারা। ওপেনার ইমাম উল হক ১২ ও অধিনায়ক বাবর আজম ১০ রান করে পেসার দিলশান মদুশঙ্কার শিকার হন।
শুরুর ধাক্কা সামলে উঠতে শ্রীলংকার বোলারদের প্রতিরোধ গড়ে তুলেন আরেক ওপেনার আব্দুল্লাহ শফিক ও মোহাম্মদ রিজওয়ান। দুর্দান্ত এক জুটিতে দলের রান ২শ পার করেন তারা।
৩২তম ওভারে চার মেরে চতুর্থ ওয়ানডেতে প্রথম সেঞ্চুরির দেখা পান আব্দুল্লাহ। বিশ^কাপে শ্রীলংকার বিপক্ষে পাকিস্তানের চতুর্থ সেঞ্চুরিয়ান হিসেবে নাম তুলেন তিনি। সেঞ্চুরির পর পেসার মাথিশা পাথিরানার বলে বিদায় নেন আব্দুল্লাহ। ১০টি চার ও ৩টি ছক্কায় ১০৩ বলে ১১৩ রান করেন তিনি। বিশ^কাপে পাকিস্তানের হয়ে অভিষেকেই সর্বোচ্চ রানের ইনিংস খেললেন আব্দুল্লাহ।
তৃতীয় উইকেটে রিজওয়ানের সাথে ১৫৬ বলে ১৭৬ রান যোগ করেন আব্দুল্লাহ। শ্রীলংকার বিপক্ষে সর্বোচ্চ হলেও, বিশ^কাপে যেকোন উইকেটে পাকিস্তানের পক্ষে এটি দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রানের জুটি।
৩৪তম ওভারে দলীয় ২১৩ রানে আব্দুল্লাহ ফেরার পর সৌদ শাকিলকে নিয়ে ৬৮ বলে ৯৫ রান তুলে ম্যাচ হাতে মুঠোয় আনেন রিজওয়ান। ৩০ বলে ৩১ রানে আউট হন শাকিল। তখন জয় থেকে ৩৭ রান দূরে পাকিস্তান। পঞ্চম উইকেটে ইফতিখারকে নিয়ে প্রয়োজনীয় রান তুলে ১০ বল বাকী থাকতে পাকিস্তানের জয় নিশ্চিত করেন রিজওয়ান।
৮টি চার ও ৩টি ছক্কায় ১২১ বলে অপরাজিত ১৩১ রান করেন ম্যাচ সেরা নির্বাচিত হওয়া রিজওয়ান। ১০ বলে ৪টি চারে ২২ রানে অপরাজিত থাকেন ইফতিখার। শ্রীলংকার মদুশঙ্কা ২ উইকেট নেন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর :
শ্রীলংকা : ৩৪৪/৯, ৫০ ওভার (মেন্ডিস ১২২, সামারাবিক্রমা ১০৮, হাসান ৪/৭১)
পাকিস্তান : ৩৪৫/৪, ৪৮.২ ওভার (রিজওয়ান ১৩১*, আব্দুল্লাহ ১১৩, মদুশঙ্কা ২/৬০)
ফল : পাকিস্তান ৬ উইকেটে জয়ী।