শিরোনাম
চেন্নাই, ২২ অক্টোবর ২০২৩ (বাসস) : বিশ^কাপে জয়ের ধারায় ফেরার লক্ষ্য নিয়ে আগামীকাল নিজেদের পঞ্চম ম্যাচে মুখোমুখি হচ্ছে পাকিস্তান-আফগানিস্তান। টানা দুই ম্যাচ হারের লজ্জা থেকে বের হতে আফগানদের বিপক্ষে জয় ছাড়া অন্য কিছুই ভাবছে না পাকিস্তান। অন্যদিকে নিজেদের সর্বশেষ ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের কাছে হারের দু:স্মৃতি মুছে জয়ের ধারায় ফিরতে মরিয়া আফগানিস্তান। পাকিস্তানের বিপক্ষে জয়ের জন্য মুখিয়ে আছে আফগানরা। চেন্নাইয়ে বাংলাদেশ সময় দুপুর ২টা ৩০ মিনিটে মাঠে নামবে পাকিস্তান-আফগানিস্তান।
নিজেদের প্রথম দুই ম্যাচে জয় দিয়ে বিশ^কাপ শুরু করে পাকিস্তান। নেদারল্যান্ডসকে ৮১ রানে ও শ্রীলংকাকে ৬ উইকেটে হারায় পাকরা। এরপর চিরপ্রতিন্দ্বন্দি ভারতের কাছে ৭ উইকেটে হেরে যায় পাকিস্তান। ভারতের কাছে হারের দুঃস্মৃতি ভুলতে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে জয়ের লক্ষ্য ছিলো পাকিস্তানের। কিন্তু বোলারদের ব্যর্থতায় অস্ট্রেলিয়ার কাছে ৬২ রানে হার বরণ করে পাকিস্তান। এখন পর্যন্ত ৪ খেলায় অংশ নিয়ে ২টি করে জয়-হারে ৪ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের পঞ্চমস্থানে আছে পাকিস্তান।
এই চার ম্যাচের মধ্যে শেষ তিনটিতে পাকিস্তানী বোলারদের পারফরমেন্স মোটেই সন্তোসজনক ছিলনা। বিশ^সেরা পাকিস্তানী বোলিং লাইন আপের বিপক্ষে শ্রীলংকা ৯ উইকেটে ৩৪৪ রান করেছিলো। পাক বোলারদের উপর তান্ডব চালিয়ে ৯ উইকেটে ৩৬৭ রানের পাহাড় গড়ে অস্ট্রেলিয়া। আরেক ম্যাচে পাকিস্তানের ছুঁড়ে দেয়া ১৯২ রানের টার্গেট স্পর্শ করতে ১৮৩ বল খেলতে হয়েছে ভারতকে।
অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে রান বন্যার ম্যাচে ৫ উইকেট নিয়ে ফর্মে ফেরার ইঙ্গিত দিয়েছেন পাকিস্তানের সেরা পেসার শাহিন শাহ আফ্রিদি। টুর্নামেন্টে পাকিস্তানের পক্ষে সর্বোচ্চ ৯ উইকেট শিকারী হলেও আফ্রিদির ইকোনমি ৬এর উপর। আফ্রিদির মত হাসান আলিরও ইকোনমি ৬এর উপর। ইকোনমি ৭ টপকে গেছেন হারিস রউফ। নিজেকে মেলে ধরতে ব্যর্থ দলের প্রধান স্পিনার শাদাব খানও। সাড়ে ৬ ইকোনমিতে মাত্র ২ উইকেট নিয়েছেন তিনি। স্পিন অলরাউন্ডার মোহাম্মদ নওয়াজের ইকোনমি ৬এর নীচে হলেও তার শিকার মাত্র ২ উইকেট ।
দলের বোলারদের পারফরমেন্সের উন্নতি চান পাকিস্তানের কোচ গ্রান্ট ব্র্যাডবার্ন। তিনি বলেন, ‘আমাদের বোলাররা বিশ^সেরা। তাদের সামর্থ্য সর্ম্পকে আমরা জানি। শেষ তিন ম্যাচে সেরাটা দিতে পারেনি তারা। খুব দ্রুতই পারফরমেন্সের উন্নতি করতে হবে বোলারদের। সামনের সব ম্যাচই এখন আমাদের জন্য।
আফগানিস্তানের বিপক্ষে আসন্ন ম্যাচ নিয়ে ব্র্যাডবার্ন বলেন, ‘আফগানিস্তান শক্ত প্রতিপক্ষ। যেকোন দলকে হারানোর সামর্থ্য আছে তাদের। ইংল্যান্ডকে হারিয়ে নিজেদের সামর্থ্যের প্রমান দিয়েছে তারা। আমরা তিন বিভাগে ভালো খেলতে পারলে জয় অসম্ভব না। জয়ের ধারায় ফিরতেই আমরা মাঠে নামবো।’
অন্যদিকে. বাংলাদেশের কাছে ৬ উইকেটে হার দিয়ে বিশ^কাপ শুরু করে আফগানিস্তান। দ্বিতীয় ম্যাচে ভারতের কাছে ৮ উইকেটে হেরে যায় আফগানরা। টানা দুই ম্যাচ হারলেও আত্মবিশ^াসে চিড় ধরেনি আফগানিস্তানের। পরের ম্যাচেই বিশ^কে চমকে দেয় রশিদ-নবিরা। আফগানিস্তানের দুর্দান্ত পারফরমেন্সের সামনে অসহায় আত্মসমর্পন করে ৬৯ রানে ম্যাচ হারে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ড। কিন্তু জয়ের ধারাটা অব্যাহত রাখতে পারেনি আফগানিস্তান। চতুর্থ ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের কাছে ১৪৯ রানের বিশাল ব্যবধানে হার মানে আফগানরা।
বিশ^কাপে জয়ের ধারায় ফিরতে ওয়ানডেতে পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রথম জয়ের লক্ষ্য আফগানিস্তানের। দলের ওপেনার রহমানুল্লাহ গুরবাজ বলেন, ‘ওয়ানডেতে এখনও পাকিস্তানের বিপক্ষে জিততে পারিনি আমরা। এবার সেই খড়া কাটাতে চাই। বিশ^কাপের পয়েন্ট টেবিলে ভালো অবস্থায় থাকতে হলে জয়ের ধারায় ফেরাটা জরুরি। এজন্য পাকিস্তানের বিপক্ষে জয়ের জন্যই মাঠে নামবে দল।’
পাকিস্তানের ব্যাটাররা দুর্দান্ত ফর্মে থাকলেও, বোলাররা সুবিধাজনক অবস্থায় নেই। কিন্তু পাকিস্তানকে শক্তিশালী প্রতিপক্ষ হিসেবেই মানছে আফগানিস্তান। গুরবাজ বলেন, ‘অনেকেই বলছে, পাকিস্তানের বোলাররা সেরা ফর্মে নেই। কিন্তু আমরা এসব নিয়ে চিন্তিত নই। আমরা জানি পাকিস্তান কতটা শক্তিশালী দল। নিজেদের দিনে কতটা ভয়ংকর হয়ে উঠতে পারে তারা। পাকিস্তানের বিপক্ষে লড়তে আমরা নিজেদের ভালোভাবে প্রস্তুত করেছি।’
এখন পর্যন্ত ওয়ানডেতে ৭বার মুখোমুখি হয়েছে পাকিস্তান ও আফগানিস্তান। এরমধ্যে সবগুলোতেই জয় পেয়েছে পাকিস্তান। গত আগস্টে ওয়ানডেতে সর্বশেষ দেখা হয়েছিলো দু’দলের। শ্রীলংকার মাটিতে তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজে আফগানদের হোয়াইটওয়াশ করেছিলো পাকিস্তান। সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে পাকিস্তানের কাছে ১ উইকেটে হেরে জয় বঞ্চিত হয় আফগানিস্তান।
বিশ^কাপের মঞ্চে একবার মুখোমুখি হয়েছে পাকিস্তান-আফগানিস্তাস। গত বিশ^কাপের ঐ ম্যাচে পাকিস্তানকে হারানোর সুর্বন সুযোগ হাতছাড়া করে আফগানরা। ২ বল হাতে রেখে ৩ উইকেটে ম্যাচ জিতে নেয় পাকিস্তান।
পাকিস্তান দল : বাবর আজম (অধিনায়ক), শাদাব খান, ফখর জামান, ইমাম-উল-হক, আবদুল্লাহ শফিক, মোহাম্মদ রিজওয়ান, সৌদ শাকিল, ইফতিখার আহমেদ, আঘা সালমান, মোহাম্মদ নাওয়াজ, উসামা মির, হারিস রউফ, হাসান আলি, শাহিন শাহ আফ্রিদি ও মোহাম্মদ ওয়াসিম।
আফগানিস্তান দল : হাশমতউল্লাহ শাহিদি (অধিনায়ক), রহমানউল্লাহ গুরবাজ, ইব্রাহিম জাদরান, রিয়াজ হাসান, রহমত শাহ, নজিবুল্লাহ জাদরান, মোহাম্মদ নবি, ইকরাম আলিখিল, আজমতউল্লাহ ওমরজাই, রশিদ খান, মুজিব উর রহমান, নুর আহমেদ, ফজলহক ফারুকি, আবদুল রেহমান ও নাভিন উল হক।