শিরোনাম
চেন্নাই, ২৪ অক্টোবর, ২০২৩ (বাসস/এএফপি) : দলীয় কোচ জোনাথন ট্রটের দতৃষ্টিতে আফগানিস্তানের নতুন প্রজন্মের সাহসী ক্রিকেটারদের সীমা আকাশ ছোঁয়া। বিশ্বকাপে সোমবার পাকিস্তানের বিপক্ষে দারুন এক জয়ের মাধ্যমে আফগানরা নিজেদের সামর্থ্যরে জানান দিয়েছে। এর আগে ইংল্যান্ডকে হারিয়ে চমক দেখানো আফগানিস্তান এই প্রথমবারের মত বিশ্বকাপে দুই ম্যাচের জয়ের কৃতিত্ব দেখালো।
বিশ্বকাপে নিজের অভিষেকে ১৮ বছর বয়সী নুর লেগ-স্পিনার নুর আহমেদ ৪৯ রানে নিয়েছেন ৩ উইকেট। এর মধ্যে রয়েছে পাকিস্তানী অধিনায়ক বাবর আজম ও অন্যতম নির্ভরযোগ্য ব্যাটার মোহাম্মদ রিজওয়ানের উইকেট। ২১ বছর বয়সী ইব্রাহিম জারদান (৮৭) রহমানুল্লাহ গুরবাজের (৬৫) ওপেনিং জুটিতে ১৩০ রান করেন। যা সুবাদে ৮ উইকেটের সহজ জয় নিশ্চিত হয় ট্রট বাহিনীর।
সাবেক ইংলিশ ব্যাটার ট্রট বলেন, ‘আমি মনে করি ওপেনিং জুটিতে আমাদের দলে ভিন্ন ধরনের প্রতিভাবান দুজন তরুণ খেলোয়াড় রয়েছে যাদের কাছে আকাশই হলো শেষ সীমানা। তারা ভিন্ন ধরনের খেলোয়াড় এবং তাদের প্রতি আমার একটাই বার্তা- শুধুমাত্র নিজের মত করে নিজের খেলা খেলে যাও। আজ আমরা দেখেছি কতটা পরিনত ব্যাটিং তারা করেছে, প্রতিপক্ষ বোলাদের উপর কিভাবে চাপ সৃষ্টি করেছে। অথচ পাকিস্তানে রয়েছে বিশ্বমানের বেশ কয়েকজন বোলার।’
জারদানের থেকে মাত্র ১৪ দিনের বড় গুরবাজ ইতোমধ্যেই ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ৩১ ম্যাচে পাঁচটি সেঞ্চুরি ও চারটি হাফ সেঞ্চুরি তিনি তুলে নিয়েছেন। বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডের বিপক্ষে আগের গুরুত্বপূর্ণ জয়ের ম্যাচটিতে গুরবাজ ৮০ রানের ম্যাচ জয়ী ইনিংস উপহার দিয়েছিলেন।
অন্যদিকে ২৪ ম্যাচে ৫০ গড়ে জারদান চারটি সেঞ্চুরি ও পাঁচটি হাফ সেঞ্চুরি করেছেন।
ট্রট বলেন, ‘কাল ম্যাচের টার্নিং পয়েন্ট ছিল ইব্রাহিম ও গুরবাজের ইনিংস সূচনা। আমি মনে করি যে ধরনের রানের টার্গেট আমাদের সামনে ছিল তাতে এই শুরুটা ম্যাচটিকে সহজ করে দিয়েছে। যে কারনে পরের ব্যাটারদের উপর থেকে চাপ কমে গেছে। সত্যিই তারা দুজন দুর্দান্ত খেলেছে।’
এত কম বয়সেও বাঁ-হাতি রিস্ট স্পিনার নুরকে দেখে মনেই হয়নি তিনি বিশ্বকাপে প্রথম ম্যাচে খেলতে নেমেছেন। ২০২০ সালের ডিসেম্বরে মাত্র ১৫ বছর বয়সে বিগ ব্যাশ লিগে মেলবোর্ন রেনেগেডসের হয়ে তিনি চুক্তি করেছিলেন। গতকাল ছিল তার ওয়ানডে ক্যারিয়ারের চতুর্থ ম্যাচ। টি-টোয়েন্টিতে এ পর্যন্ত খেলেছেন মাত্র একটি ম্যাচ। অভিষেকের ঐ ম্যাচে মাত্র ১৭ বছর বয়সে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে নুর ১০ রানে ৪ উইকেট নিয়েছিলেন।
নুর সম্পর্কে ট্রট বলেছেন, ‘তার কাছেও আকাশের চেয়ে শেষ সীমানা বলতে কিছু নেই। অনুশীলনের সময় তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকলে বোঝা যায় কতটা হৃদয় দিয়ে সে ক্রিকেট খেলে। এত কম বয়সে এই ধরনের প্রতিভা আমি খুব কমই দেখেছি। তার হাতে অনেক স্পিন আছে যা সত্যিই বিরল। আমি তাকে বলবো এই ধারাবাহিকতা বজায় রাখার চেষ্টা করতে।’
পাঁচ ম্যাচে তিন পরাজয় ও দুই জয়ে ছয় নম্বরে উঠে আসা আফগানিস্তান এখন সেমিফাইনালে খেলার স্বপ্ন দেখতেই পারে। সোমবার পরবর্তী ম্যাচে পুনেতে তারা ১৯৯৬ বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন শ্রীলংকার মুখোমুখি হবে আফগানরা।
ট্রট বলেন, ‘অতীতের বিশ্বকাপগুলোতে এমন অনেক ঘটনা ঘটেছে প্রথম পরাজয়ের পর গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচগুলোতে জয় নিশ্চিত করে একটি দলটি শেষ পর্যন্ত গিয়েছে। আমরাও সেই আশা করতেই পারি।’