শিরোনাম
বেঙ্গালুরু, ৯ নভেম্বর ২০২৩ (বাসস) : ওপেনার কুশল পেরেরার হাফ সেঞ্চুরির পর শেষ উইকেট জুটির দৃঢ়তায় ওয়ানডে বিশ্বকাপে নিজেদের নবম ও শেষ ম্যাচে আজ নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথমে ব্যাট করে ৪৬ দশমিক ৪ ওভারে সব উইকেট হারিয়ে ১৭১ রান করেছে শ্রীলংকা। ২৮ বলে ঝড়ো গতিতে ৫১ রান করেন পেরেরা। ১২৮ রানে নবম ব্যাটারের বিদায়ের পর শেষ উইকেটে মহেশ থিকশানা ও দিলশান মাদুশঙ্কার ৮৭ বলে ৪৩ রানের জুটিতে সম্মানজনক সংগ্রহ পায় শ্রীলংকা।
বেঙ্গালুরুতে টস জিতে প্রথমে শ্রীলংকাকে ব্যাটিংয়ে পাঠায় নিউজিল্যান্ড। দ্বিতীয় ওভারে পেসার টিম সাউদির চতুর্থ বলে শ্রীলংকার ওপেনার কুশল পেরেরার ক্যাচ ফেলেন উইকেটরক্ষক টম লাথাম। তবে পরের ডেলিভারিতেই লাথামকে ক্যাচ দিয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরেন আরেক ওপেনার পাথুম নিশাঙ্কা(২)।
এরপর নিউজিল্যান্ডের বোলারদের উপর চড়াও হয়ে ১০ বলে ২০ রান তুলে নেন পেরেরা। এ অবস্থায় পঞ্চম ওভারের প্রথম বলে শ্রীলংকাকে শিবিরে দ্বিতীয় ধাক্কা দেন পেসার ট্রেন্ট বোল্ট। ৬ রান করা লংকান অধিনায়ক কুশল মেন্ডিসকে বিদায় দেন বোল্ট। মেন্ডিসকে শিকার করে বিশ^কাপ ইতিহাসে ষষ্ঠ ও নিউজিল্যান্ডের প্রথম বোলার হিসেবে ৫০ উইকেট পূর্ণ করেন তিনি। সেই সাথে টিম সাউদি ও ড্যানিয়েল ভেট্টোরির পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ৬শ উইকেটের মালিক হন বোল্ট।
বিশ^কাপে উইকেটের হাফ-সেঞ্চুরির পর বোল্ট মিডল অর্ডারে সাদিরা সামারাবিক্রমাকে ১ রানে পিরিয়ে দিলে ৩২ রানে ৩ উইকেটে পরিনত হয় শ্রীলংকা।
সতীর্থরা যাওয়া-আসার মিছিলে থাকলেও ব্যাট হাতে মারমুখী মেজাজে ছিলেন পেরেরা। অষ্টম ওভারে ওয়ানডেতে ১৭তম হাফ-সেঞ্চুরি করতে মাত্র ২২ বল খেলেছেন তিনি। ্ ইনিংস দিয়ে শ্রীলংকার পক্ষে বিশ^কাপে দ্বিতীয় দ্রুততম হাফ-সেঞ্চুরির নজির গড়েন পেরেরা।
পেরেরার ঝড়ো হাফ-সেঞ্চুরির পর নবম ওভারে শ্রীলংকা শিবিরে আবারও আঘাত হানেন বোল্ট। ৮ রান তুলে প্যাভিলিয়নে ফিরেন বাংলাদেশের বিপক্ষে আগের ম্যাচে সেঞ্চুরি করা চারিথ আসালঙ্কা। পেরেরার সাথে চতুর্থ উইকেটে ২২ বলে ৩৮ রানের জুটি গড়েন আসালঙ্কা।
পরের ওভারে বিদায় ঘন্টা বাজে পেরেরার। পেসার লুকি ফার্গুসনের বলে উড়িয়ে মারতে গিয়ে মিচেল স্যান্টনারকে ক্যাচ দেন তিনি। ৯টি চার ও ২টি ছক্কায় ২৮ বলে ৫১ রানে থামেন পেরেরা। এতে ৭০ রানে পঞ্চম উইকেট হারায় শ্রীলংকা। এর মাধ্যমে বিশ^কাপে প্রথম দশ ওভারে সবচেয়ে বেশি উইকেট হারানোতে বাংলাদেশকে টপকে শীর্ষে উঠলো লংকানরা। এখন অবধি ২০টি উইকেট হারিয়েছে লংকানরা। বাংলাদেশ হারিয়েছে ১৮ উইকেট।
ষষ্ঠ উইকেটে জুটি বেঁধে নিউজিল্যান্ডের সামনে প্রতিরোধ গড়ে তোলার চেষ্টা করেন অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুজ ও ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা। সাবধানে খেলে রানের চাকা সচল রেখে শ্রীলংকার রান তিন অংকে নিয়ে যান তারা।
বড় জুটির ইঙ্গিত দেয়া ম্যাথুজ-ডি সিলভার পথে বাঁধা হয়ে দাঁড়ান স্পিনার স্যান্টনার। ২টি চারে ১৬ রান করা ম্যাথুজ শিকার হন স্যান্টনারের। ষষ্ঠ উইকেটে ডি সিলভার সাথে ৪৩ বলে ৩৪ রান তুলেন ম্যাথুজ।
ম্যাথুজের পর ডি সিলভাকে ১৯ রানে তুলে নেন স্যান্টনার। এতে ১০৫ রানে সপ্তম উইকেট হারিয়ে দ্রুত গুটিয়ে যাবার শঙ্কায় পড়ে শ্রীলংকা। এরপর ১২৮ রানে নবম উইকেট পতন হয় শ্রীলংকার।
তবে শেষ উইকেটে নিউজিল্যান্ড বোলারদের সামনে প্রতিরোধ গড়ে তুলেন মহেশ থিকশানা ও দিলশান মাদুশঙ্কা। শেষ উইকেটে ৮৭ বল খেলে ৪৩ রান যোগ করেন তারা। এতে দেড়শ রান পেরিয়ে ১৭১ রানের সম্মানজনক সংগ্রহ পায় শ্রীলংকা। ৪৬তম ওভারের চতুর্থ বলে মাদুশঙ্কাকে শিকার করে শ্রীলংকা ইনিংসের ইতি টানেন স্পিনার রাচিন রবীন্দ্র। মাদুশঙ্কা ৪৮ বলে ১৯ রানে আউট হলেও, ৩টি চারে ৯১ বলে ক্যারিয়ার সেরা ৩৮ রানে অপরাজিত থাকেন থিকশানা।
নিউজিল্যান্ডের বোল্ট ৩টি, ফার্গুসন-স্যান্টনার ও রবীন্দ্র ২টি করে উইকেট নেন।