শিরোনাম
পুনে, ১১ নভেম্বর, ২০২৩ (বাসস) : তাওহিদ হৃদয়ের হাফ-সেঞ্চুরিতে ওয়ানডে বিশ্বকাপে লিগ পর্বে নিজেদের নবম ও শেষ ম্যাচে আজ অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে প্রথমে ব্যাট করে ৫০ ওভারে ৮ উইকেটে ৩০৬ রান করেছে বাংলাদেশ। ৭৯ বলে ৭৪ রান করেন হৃদয়। এছাড়া ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত ৪৫, দুই ওপেনার তানজিদ হাসান ও লিটন দাস ৩৬ রান করে করেন।
এ ম্যাচে ৩০৭ রানের টার্গেট অস্ট্রেলিয়া যদি ২২ দশমিক ৪ ওভারে স্পর্শ করে জিততে পারে, তাহলে পয়েন্ট টেবিলে নবমস্থানে নেমে যাবে বাংলাদেশ। তখন চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে খেলা নিয়ে শঙ্কায় পড়বে টাইগাররা। আর যদি ১৭ দশমিক ২ ওভারে টার্গেট স্পর্শ করতে পারে, তাহলে দক্ষিণ আফ্রিকাকে টপতে টেবিলের দ্বিতীয়স্থানে উঠে সেমিফাইনালে খেলতে নামবে অস্ট্রেলিয়া।
পুনেতে টস হেরে প্রথমে ব্যাটিং করতে নামে বাংলাদেশ। ইনজুরি আক্রান্ত নিয়মিত অধিনায়ক সাকিব আল হাসানের পরিবর্তে বাংলাদেশের নেতৃত্ব দেন নাজমুল হোসেন শান্ত।
ব্যাট হাতে নেমে বাংলাদেশকে দারুন সূচনা এনে দেন দুই ওপেনার তানজিদ হাসান ও লিটন দাস। পাওয়ার প্লেতে ৬২ রান তুলেন তারা। এবারের বিশ^কাপে এই নিয়ে দ্বিতীয় হাফ-সেঞ্চুরির উদ্বোধনী জুটি পেল টাইগাররা। এর আগে এই পুনেতেই ভারতের বিপক্ষে ৯৩ রান তুলেছিলেন তানজিদ ও লিটন।
১২তম ওভারে পেসার সিন অ্যাবটের বাউন্সার সামলাতে না পেরে বোলারকেই ক্যাচ দিয়ে আউট হন ৬টি চারে ৩৪ বলে ৩৬ রান করা তানজিদ।
দলীয় ৭৬ রানে তানজিদ ফেরার পর ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক শান্তকে নিয়ে দলের রান ১৬তম ওভারে ১শ পার করেন লিটন। ১৫তম ওভারে স্পিনার এডাম জাম্পার বলে অস্ট্রেলিয়ার প্যাট কামিন্সের হাতে ব্যক্তিগত ৩৪ রানে জীবন পান লিটন। তবে জীবন পেয়ে বেশি দূর যেতে পারেননি তিনি। সেই জাম্পার বলে লং অনে মার্নাস লাবুশেনকে ক্যাচ দিয়ে বিদায় নেন ৫টি চারে ৪৫ বলে ৩৬ রান করা লিটন। শান্ত-লিটন যোগ করেন ৩০ রান।
লিটনের বিদায়ে ক্রিজে শান্তর সঙ্গী হন তাওহিদ হৃদয়। বলের সাথে পাল্লা দিয়ে রান তুলেছেন তারা। উইকেটে সেট হয়ে দলের বড় স্কোরের ভিত গড়তে থাকেন শান্ত ও হৃদয়। হাফ-সেঞ্চুরির কাছে পৌঁছেও যান শান্ত। কিন্তু দুর্ভাগ্য শান্তর। দ্বিতীয় রান নিতে গিয়ে লাবুশেনের দারুন ফিল্ডিংয়ে রান আউট হন তিনি। শান্তর ব্যাট থেকে ৬টি বাউন্ডারিতে ৫৭ বলে ৪৫ রান আসে। তৃতীয় উইকেটে দলকে ৬৬ বলে ৬৩ রান উপহার দেন শান্ত-হৃদয়।
এরপর মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, মুশফিকুর রহিম ও মেহেদি হাসান মিরাজকে নিয়ে বড় জুটির চেষ্টা করেন হৃদয়। কিন্তু কোন জুটিই হাফ-সেঞ্চুরির গন্ডি পার করতে পারেনি। চতুর্থ উইকেটে মাহমুদুল্লাহর সাথে ৪৮ বলে ৪৪ রানের জুটিতে ৩২তম ওভারে ২শ রান পেয়ে যায় বাংলাদেশ। আক্রমনাত্মক মেজাজে থাকা মাহমুদুল্লাহ ৩টি ছক্কাও আদায় করে নেন। কিন্তু আবারও লাবুশেনের দারুণ ফিল্ডিংয়ে শেষ হয় মাহমুদুল্লাহর ২৮ বলে ৩২ রানের জুটিটি। তার ইনিংসে ১টি চার ও ৩টি ছক্কা ছিলো।
পঞ্চম উইকেটে মুশফিকের সাথে ৩৯ বলে ৩৭ রানের জুটি গড়ার পথে ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ষষ্ঠ হাফ-সেঞ্চুরির দেখা পান হৃদয়। এই জুটিতে দলের রান আড়াইশ পার করে থামেন মুশি। জাম্পার বলে মিড উইকেটে কামিন্সকে ক্যাচ দেন ১টি ছক্কায় ২৪ বলে ২১ রান করা মুশফিক। এই শিকারে শ্রীলংকার দিলশান মাদুশঙ্কাকে সরিয়ে এই বিশ^কাপে সর্বোচ্চ ২২ উইকেটের মালিক হন জাম্পা। সেই সাথে ব্র্যাড হগকে সরিয়ে এক আসরে অস্ট্রেলিয়ার স্পিনার হিসেবে সর্বোচ্চ উইকেটের মালিক হলেন জাম্পা।
৪৩তম ওভারে দলীয় ২৫১ রানে মুশফিক ফেরার পর বাংলাদেশের রানের চাকা সচল রাখেন হৃদয়। নিজের ইনিংসটাও বড় করছিলেন তিনি। কিন্তু ৪৭তম ওভারে পেসার মার্কাস স্টয়নিসের বলে মিড উইকেটে লাবুশেনকে ক্যাচ দিয়ে ফিরেন ৫টি চার ও ২টি ছক্কায় ৭৯ বলে ৭৪ রান করা হৃদয়।
শেষদিকে মেহেদি হাসান মিরাজের ২০ বলে ৪টি বাউন্ডারিতে ২৯ রানের সুবাদে ৩শ রানের কোটা পার করে বাংলাদেশ। ৫০ ওভারে ৮ উইকেটে ৩০৬ রানের সংগ্রহ পায় টাইগাররা। এবারের বিশ^কাপে প্রথমবারের মত ৩শ রানের কোটা পার করলো বাংলাদেশ। এই নিয়ে পঞ্চমবার বিশ^কাপের মঞ্চে ৩শ রানের দেখা পেল টাইগাররা। বিশ^কাপে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে এটি দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান বাংলাদেশের। অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে অ্যাবট-জাম্পা ২টি করে এবং স্টয়নিস ১টি উইকেট নেন।