বাসস
  ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১১:৩৯

কারাবাখ শরণার্থীদের প্রথম দলকে স্বাগত জানাচ্ছে আর্মেনিয়া

কর্নিডজোর, আর্মেনিয়া, ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৩(বাসস ডেস্ক): নাগরনো-কারাবাখ শরর্ণাথীদের প্রথম দলকে স্বাগত জানাতে প্রস্তুত আর্মেনিয়া। 
আর্মেনীয় সরকার বলছে, রোববার সন্ধ্য নাগাদ জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত ৩৭৭ শরণার্থী আজারবাইজান সীমান্ত পাড়ি দিয়েছে। 
শরণার্থীদের অধিকাংশ নারী ও শিশু।
আর্মেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী নিকোল পাশিনিয়ান গত সপ্তাহের ঘটনার জন্যে রাশিয়াকে দায়ী করেছেন। কারণ আজারবাইজানের সামরিক অভিযান শুরুর খবর আসার পরই আর্মেনিয়ায় বিক্ষোভ শুরু হয়। প্রচুর মানুষ রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করেন।
টিভির রিপোর্টে দেখা গেছে, বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হচ্ছে। কারণ, বিক্ষোভকারীরা ব্যারিকেড ভেঙে সরকারি ভবনগুলোর দিকে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিল। 
বিক্ষোভকারীদের দাবি ছিল, প্রধানমন্ত্রীকে ইস্তফা দিতে হবে। আর প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, তাকে সরাবার জন্য অভ্যুত্থানের চেষ্টা চলছে।
এদিকে আজারবাইজান ও মিত্রদেশ তুরস্কের নেতা নাগরনো-কারাবাখের ওপর বাকুর জয়কে কেন্দ্র করে একটি উদযাপনমূলক বৈঠক করতে যাচ্ছেন। আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভ তার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আঞ্চলিক মিত্র তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়িফ এরদোয়ানের সাথে সোমবার আলোচনার জন্যে তার দেশের পশ্চিমাঞ্চলীয় ছিটমহল নাখিচেভানে যাচ্ছেন বলে জানা গেছে। 
উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার আজারবাইজান নাগরনো-কারাবাখে সামরিক অভিযান শুরু করে। দাবি, জঙ্গিদের উৎখাত করতে এই সিদ্ধান্ত। একদিনের মধ্যে তারা এলাকার দখল নেয়। বিদ্রোহীরা এই সময়ে আত্মসমর্পণ করে।
আর্মনিয়ার সরকারি সূত্র বলেছে, আজারবাইজানের আক্রমণের ফলে দুশ’ লোক নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে চারশ’জন । আজারবাইজান জানিয়েছে, আহতদের আর্মেনিয়া নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে কোনো বাধা দেয়া হবে না।
আর্মেনিয়া দাবি করেছে, আর্মেনিয়ার জনগণের নিরাপত্তা ও মানবাধিকার নিশ্চিত করতে জাতিসংঘের দলকে নাগরনো-কারাবাখে মোতায়েন করতে হবে।
তবে আজারবাইজান জানিয়েছে, তারা আর্মেনিয়ার জনগণের অধিকার রক্ষা করবে। বেসামরিক মানুষকে শাস্তি দেয়া হবে না।
এদিকে রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তাদের শান্তিরক্ষী বাহিনী নাগরনো-কারাবাখের আর্মেনীয় প্রধান এলাকা থেকে সাধারণ মানুষকে নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। মঙ্গলবার সারাদিনে ১৮৫ শিশুসহ ৪৬৯ জনকে নিরাপদ জায়গায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
বলা হয়েছে, রুশ বাহিনী আহতদের চিকিৎসার ব্যবস্থাও করেছে।
আজারবাইজান ও আর্মেনিয়ার মধ্যে ২০২০ সালের যুদ্ধের পর যে শান্তিচুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে তা যথাযথভাবে মেনে চলা হচ্ছে কি-না, তা দেখার জন্য দুই হাজার রুশ সেনা সেখানে রয়েছে।
এছাড়া সাবেক সোভিয়েতভুক্ত ছয়টি রাজ্য নিয়ে রুশ নিয়ন্ত্রিত কালেক্টিভ সিকিউরিটি ট্রিটি অর্গানাইজেশনের(সিএসটিও) সদস্য আর্মেনিয়া। এই চুক্তি অনুযায়ী হামলার শিকার হলে এক সদস্য অন্যকে সহায়তা করবে। কিন্তু ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে টালমাটাল রাশিয়ার পক্ষে আমের্নিয়ার সহযোগিতায় যথাযথ সাড়া দেয়া সম্ভব হয়নি। 
এই পরিপ্রেক্ষিতে টেলিভিশনে জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে  আর্মেনীয় নেতা অভিযোগ করেছেন, দু’দেশের নিরাপত্তা চুক্তিসমূহ প্রমাণ করেছে তার দেশকে রক্ষায় এসব যথেষ্ট নয়।
তিনি নতুন মিত্র খুঁজবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন।
এদিকে আজারবাইজান সীমান্তে নাগরনো কারাবাখ বিদ্রোহীদের ওপর সরকারের বিজয়কে উদযাপন করছে সাধারণ মানুষ।