শিরোনাম
লিসবন, ১০ মার্চ, ২০২৪ (বাসস ডেস্ক) : পর্তুগালের ভোটাররা একটি আগাম নির্বাচনে রোববার ভোট দিতে যাচ্ছে। মনে হচ্ছে, এবারের ভোটে ইউরোপের এই দেশটির আট বছরের সমাজতান্ত্রিক শাসন ডানদিকে মোড় নিতে পারে। শুক্রবার প্রকাশিত চূড়ান্ত জনমত জরিপগুলিতে দেখা যায়, মধ্য-ডানপন্থী ডেমোক্রেটিক এলায়েন্স (এডি) দলটি বামপন্থী সোশ্যালিস্ট পার্টি (পিএস) থেকে কিছুটা এগিয়ে আছে, তবে সংসদে তারা নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করতে সক্ষম হবে না। সেক্ষেত্রে ক্ষমতায় আসার জন্য তাদের অপর চরম ডানপন্থী দল চেগার সঙ্গে জোট গঠন করতে হতে পারে। খবর এএফপি’র।
দুই বছরের মধ্যে দ্বিতীয়বারের এই নির্বাচনে বিপুল সংখ্যক দোদুল্যমান ভোটার থাকার কারণে বিশ্লেষকরা আগেই পর্তুগালের এবারের ভোটের ফলাফল সম্পর্কে সতর্ক করেছেন। প্রায় ১ কোটি জনসংখ্যার দেশটিতে ভোট কেন্দ্রগুলিতে ভোট শুরু হবে স্থানীয় সময় সকাল ৮ টায় এবং ভোট গ্রহন শেষ হবে রাত ৮ টায়।
এডি নেতা ৫১ বছর বয়সী আইনজীবী লুইস মন্টেনিগ্রো, ট্যাক্স কমিয়ে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাড়ানোর এবং সেবা খাত উন্নত করার প্রতিশ্রুতি নিয়ে প্রচারণা চালিয়েছেন। শুক্রবার রাতে লিসবনের বুলরিংয়ে সর্বশেষ সমাবেশে তিনি বলেন, “আমাদের অবশ্যই পরিবর্তন আনতে হবে।”
বিশ্লেষকদের মতে, সরকার বিরোধী দল হিসেবে চেগা’র সাথে একটি চুক্তিতে উপনীত হতে পারলেই এডি দলের পক্ষে দেশ শাসন যথেষ্ট সহজ হবে এবং এটাই সম্ভবত একমাত্র উপায়। তবে, সাবেক শিক্ষানবিশ যাজক ও ফুটবলের বিশিষ্ট টিভি ধারাভাষ্যকার চেগা’র নেতা আঁন্দ্রে ভেনচুরা বলেছেন, তার দল ‘অন্য দলগুলোর মতোই বৈধ।’ চেগা দলটি দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য কঠোর ব্যবস্থা, অভিবাসনের উপর কঠোর নিয়ন্ত্রণ এবং যৌন অপরাধ নির্মূল করার আহ্বান জানিয়েছে। মাত্র পাঁচ বছর আগে প্রতিষ্ঠিত চেগা দলটি ২০১৯ সালে পর্তুগালের ২৩০ আসনবিশিষ্ট পার্লামেন্টে তাদের প্রথম আসন লাভ করে। ১৯৭৪ সালে এক সামরিক অভ্যুত্থানের পর থেকে এক দশক ধরে চলে আসা ডানপন্থী স্বৈরশাসনের পতনের পর থেকে পার্লামেন্টে প্রতিনিধিত্বকারি প্রথম অতি-ডানপন্থী দল হয়ে উঠে। ২০২২ সালের নির্বাচনে দলটি তাদের আসন বাড়িয়ে ১২টি আসনে উন্নীত করেছে এবং জরিপগুলি বলছে, এবার তাদের আসনসংখ্যা তার দ্বিগুণেরও বেশি হতে পারে। এই আসনসংখ্যা ইউরোপ জুড়ে অতি-ডানপন্থী দলগুলির লাভের প্রতিফলন ঘটাবে। ইতোমধ্যেই ফ্রান্স ও জার্মানির মতো করে ক্রমাগত জোটভাবে ইতালি, হাঙ্গেরি বা স্লোভাকিয়ার মতো দেশে প্রায়ই জোটবদ্ধ শাসন ব্যাবস্থা কায়েম করছে।
সমাজতান্ত্রিক প্রধানমন্ত্রী আন্তোনিও কস্তার( ৬২), তার সরকারি বাসভবন তল্লাশি ও তার চিফ অব স্টাফকে গ্রেপ্তারের একটি প্রভাবশালী তদন্তের পরে নভেম্বরে অপ্রত্যাশিতভাবে পদত্যাগ করার পরে এই নির্বাচনের আহ্বান জানানো হয়। কস্তা নিজে কোনো অপরাধে অভিযুক্ত না হলেও তিনি আর নির্বাচনে না দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নেন।