শিরোনাম
জেরুজালেম, ৫ এপ্রিল, ২০২৪ (বাসস/এএফপি): সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কোতে ইরানের কনস্যুলেট ভবনে মারাত্মক হামলার পর পাল্টা হামলার হুমকিতে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী বৃহস্পতিবার তাদের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা জোরদার করেছে। এদিকে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়াামিন নেতানিয়াহু তার দেশের বিরুদ্ধে হামলাকারীদের প্রতিশোধ নেওয়ার হুমকি দিয়েছেন।
গাজায় হামাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধের সপ্তম মাস ঘনিয়ে আসায় সেনাবাহিনীর যুদ্ধ ইউনিটের সদস্যরা যুদ্ধ থেকে বিরত থাকা এবং নির্দিষ্ট স্থানে জিপিএস সংকেত অবরুদ্ধ এবং ‘সতর্কতা’ জোরদার করার পর তিনি এই হুমকি দেন।
নেতানিয়াহু বলেছেন, ‘বছরের পর বছর ইরান আমাদের বিরুদ্ধে সরাসরি এবং প্রতিনিধি উভয়ের মাধ্যমে কাজ করে আসছে। তাই, ইসরায়েল ইরান এবং তার প্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে রক্ষণাত্মক এবং আক্রমণাত্মকভাবে কাজ করছে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা জানব কীভাবে নিজেদেরকে রক্ষা করতে হয় এবং যে কেউ আমাদের ক্ষতি করে বা আমাদের ক্ষতি করার চেষ্টা করলে আমরা তাদের ক্ষতি করব-এই সরল নীতি অনুসারে কাজ করব।’
সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস জানিয়েছে, দামেস্কোতে ইরানের কনস্যুলেট ভবনে সোমবারের হামলায় ১৬ জন নিহত হয় এবং দু’দেশের মধ্যে উত্তেজনা বেড়ে যায়।
গত ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পর থেকে ইসরায়েল যেমন গাজায় যুদ্ধ করেছে, তেমনি সিরিয়া ও লেবাননে ইরানি কর্মী ও মিত্রদের বিরুদ্ধেও হামলা জোরদার করেছে।
ইসরায়েল ইরান সমর্থিত লেবাননের জঙ্গি গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর সাথে প্রায় প্রতিদিনই আন্তঃসীমান্তে গুলি বিনিময় হচ্ছে।
ইসরায়েল দামেস্কোতে হামলার ব্যাপারে মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। তবে বিশ্লেষকরা এটিকে ইরানের আঞ্চলিক প্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের প্রচার-প্রচারণার তীব্রতা হিসেবে দেখেছেন যাতে ব্যাপকভাবে যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি তৈরি করছে ।
নিহতদের মধ্যে সাতজন ইরানি রেভল্যুশনারি গার্ড, যাদের মধ্যে দ’ুজন জেনারেল ছিলেন।
ব্রিটেন ভিত্তিক অবজারভেটরি জানিয়েছে, নিহতদের মধ্যে পাঁচজন সিরিয়ান যোদ্ধা এবং একজন হিজবুল্লাহর সদস্য রয়েছে।
ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি একটি সোশ্যাল মিডিয়া বার্তায় প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ‘আল্লাহর রহমতে আমরা ইহুদিদের দামেস্কোতে ইরানের কনস্যুলেট ভবনে আগ্রাসনের জন্য অনুশোচনা প্রকাশ করবো’।
ইসরায়েলের সরকারী পরিসংখ্যানের এএফপি’র তথ্যানুসারে, হামাসের ৭ অক্টোবরের হামলার মাধ্যমে গাজা যুদ্ধ শুরু হয়েছিল। ফলে ইসরায়েলের প্রায় ১,১৭০ জন নিহত হয়। যাদের বেশিরভাগই বেসামরিক নাগরিক ছিল।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী বলেছে, ফিলিস্তিনি যোদ্ধারা ২৫০ জনেরও বেশি লোককে জিম্মি করেছে এবং ১৩০ জন এখনো গাজায় রয়ে গেছে। এর মধ্যে ৩৪ জন মারা গেছে।
হামাস পরিচালিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মতে, ইসরায়েলের প্রতিশোধমূলক অভিযানে অন্তত ৩৩,০০০ মানুষ নিহত হয়েছে। যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু।