শিরোনাম
প্যারিস, ২৬ জুন, ২০২৪ (বাসস ডেস্ক): সমস্ত প্রাপ্তবয়স্কদের প্রায় এক তৃতীয়াংশ পর্যাপ্ত শারীরিক ক্রিয়াকলাপ করছেন না, যা সারা বিশ্বে স্বাস্থ্যের জন্য ক্রমবর্ধমান হুমকি হয়ে দেখা দিয়েছে। বুধবার প্রকাশিত এক গবেষণা প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়েছে।
২০২২ সালে সুপারিশকৃত ১.৮ বিলিয়ন মানুষের মধ্যে ৩১ শতাংশেরও বেশি প্রাপ্তবয়স্ক লোক পরিমাণে শারীরিক ব্যায়াম পাননি। যা ২০১০ থেকে পাঁচ শতাংশ পয়েন্ট বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং অন্যান্য গবেষকদের একটি সমীক্ষায় এ কথা জানানো হয়।
ডব্লিউএইচও’র স্বাস্থ্য প্রচার বিভাগের পরিচালক রুডিগার ক্রেচ বলেছেন, ‘শারীরিক নিষ্ক্রিয়তা বিশ্ব স্বাস্থ্যের জন্য একটি নীরব হুমকি,যা দীর্ঘস্থায়ী রোগের বিস্তারের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখে’।
তিনি একটি অনলাইন সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘দুর্ভাগ্যবশত বিশ্ব সঠিক পথে যাচ্ছে না।’
সুস্থ থাকার জন্য ডব্লিউএইচও সুপারিশ করে যে, সমস্ত প্রাপ্তবয়স্কদের প্রতি সপ্তাহে কমপক্ষে ১৫০ মিনিট মাঝারি-তীব্র শারীরিক ক্রিয়াকলাপ করার জন্য ব্যয় করা - যার মধ্যে হাঁটা, সাইকেল চালানো বা এমনকি ঘরের কাজও অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে- বা কমপক্ষে ৭৫ মিনিটের বেশি জোরালো ব্যায়াম, যেমন দৌঁড়ানো বা খেলাধুলার প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়া।
ক্রেচ বলেন, এই স্তরের ব্যায়াম না করা মানুষের হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, কিছু ক্যান্সারের পাশাপাশি মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়।
দ্য ল্যানসেট গ্লোবাল হেলথের গবেষণা অনুসারে, যদি বর্তমান প্রবণতা অব্যাহত থাকে তবে ২০৩০ সালের মধ্যে প্রাপ্তবয়স্কদের নিষ্ক্রিয়তার মাত্রা ৩৫ শতাংশে উন্নীত হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এটি দশকের শেষ নাগাদ শারীরিক নিষ্ক্রিয়তার ১৫ শতাংশ হ্রাস করার ডব্লিউএইচও এর লক্ষ্য থেকে অনেক কম হবে।
ডব্লিউএইচও’র ফিজিক্যাল অ্যাক্টিভিটি ইউনিটের প্রধান ফিওনা বুল বলেন, গবেষণাটি ছিল ‘একটি সতর্কবার্তা,যা আমরা করছি তা যথেষ্ট নয়।’
শারীরিক নিষ্ক্রিয়তার হার দেশগুলোর মধ্যে ব্যাপকভাবে পরিবর্তিত হয়। উদাহরণস্বরূপ, ৬৬ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্ক সংযুক্ত আরব আমিরাতে পর্যাপ্ত শারীরিক কার্যকলাপ পায় না, যেখানে মালাউইতে এই সংখ্যাটি তিন শতাংশের নিচে।
লিঙ্গ ব্যবধানও ছিল। শরীর চর্চায় ২৯ শতাংশ পুরুষ নিধারিত সীমায় পৌঁছান না, তুলনায় বিশ্বব্যাপী নারীদের এই হার প্রায় ৩৪ শতাংশ।
ফিওনা বুল বলেন, সামগ্রিকভাবে কার্যকলাপের হার হ্রাসের জন্য ‘একাধিক কারণ’ রয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে যে লোকেরা কম হাঁটছে, কম্পিউটারে বেশি কাজ করছে এবং সাধারণত স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে আরও অবসর সময় কাটাচ্ছে।
ক্রেচ স্মরণ করিয়ে দেন, অলিম্পিক এবং ইউরোপীয় এবং কোপা আমেরিকা ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপ অন্তর্ভুক্ত বিশ্ব খেলাধুলার ব্যস্ত কয়েক মাসের সময় ক্রেচ ‘খেলা দেখা শারীরিকভাবে সক্রিয় হওয়ার সমান নয়।’
তিনি বলেন, ‘শুধু (আপনার) চেয়ারে বসবেন না, উঠুন এবং প্রতিটি পদক্ষেপ গণনা করে সক্রিয় হোন।’
ডব্লিউএইচও জোর দিয়ে বলেছে, ব্যক্তিগত আচরণ পরিবর্তন করা যথেষ্ট নয়, বলে দেশগুলোকে সামাজিক খেলাধুলার পাশাপাশি হাঁটা, সাইকেল চালানো এবং পাবলিক ট্রান্সপোর্টের মাধ্যমে শারীরিক ক্রিয়াকলাপকে উন্নীত করার আহ্বান জানিয়েছে।
গবেষকদের একটি আন্তর্জাতিক দল ১৬৩টি দেশ এবং অঞ্চল জুড়ে ৫.৭ মিলিয়ন লোককে জড়িত করে ৫০০ টিরও বেশি গবেষণার ফলাফল একত্রিত করেছে।