শিরোনাম
গাজা উপত্যকা, ফিলিস্তিনি অঞ্চল, ৪ জুলাই, ২০২৪ (বাসস ডেস্ক): ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস বুধবার বলেছে, তারা ইসরায়েলের সাথে প্রায় নয় মাসের গাজা যুদ্ধের অবসানের লক্ষ্যে কাতারি মধ্যস্থতাকারীদের কাছে নতুন ‘আইডিয়া’ পাঠিয়েছে।
ইসরায়েল নিশ্চিত করেছে, তারা ফিলিস্তিনি ভূখন্ডে তাদের জিম্মিদের মুক্ত করার চুক্তিতে হামাসের ‘মতামত’ ‘মূল্যায়ন’ করছে এবং এর জবাব দেবে।
গাজায় মৃতের সংখ্যা বাড়ছে এবং পরিস্থিতি প্রতিদিন খারাপ হচ্ছে। অতি সম্প্রতি মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রস্তাবিত একটি রোডম্যাপের ভিত্তিতে উভয় পক্ষই যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হওয়ার জন্য বর্ধিত আন্তর্জাতিক চাপের মধ্যে রয়েছে।
হামাস গাজা থেকে ইসরায়েলি সেনাদের ‘স্থায়ী যুদ্ধবিরতি এবং সম্পূর্ণ প্রত্যাহারের’ দাবি জানিয়েছে।
ইসরায়েল বলছে, ৭ অক্টোবরের হামলার সময় হামাস জিম্মিদের মুক্তি না দেওয়া পর্যন্ত শত্রুতার কোনো শেষ নেই। প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুও বারবার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, হামাসের সামরিক ও শাসন ক্ষমতা ধ্বংস না হওয়া পর্যন্ত ইসরায়েলের গাজা অভিযান বন্ধ হবে না।
হামাস বুধবার সন্ধ্যায় বলেছে, তারা সংঘর্ষের অবসানের লক্ষ্যে কাতার, মিশর এবং তুরস্কের কর্মকর্তাদের সাথে যোগাযোগ করছে।
গ্রুপটি এক বিবৃতিতে বলেছে, কাতার-ভিত্তিক হামাসের রাজনৈতিক প্রধান ইসমাইল হানিয়াহ ‘কাতার ও মিশরের মধ্যস্থতাকারীদের সাথে যোগাযোগ করেছেন, ধারণা নিয়ে হামাস একটি চুক্তিতে পৌঁছানোর লক্ষ্যে তাদের সাথে আলোচনা করছে।’
বিবৃতিতে বলেছে, ‘তুরস্কে আন্দোলনের প্রধান এবং কর্মকর্তাদের মধ্যেও যোগাযোগ হয়েছিল’।
কাতার, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করে এবং মধ্যস্থতা প্রচেষ্টার নেতৃত্ব দিয়েছে।
হামাসের আগের এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আমাদের ফিলিস্তিনি জনগণের বিরুদ্ধে আগ্রাসন বন্ধ করার লক্ষ্যে আমরা মধ্যস্থতাকারী ভাইদের সাথে কিছু ধারণা বিনিময় করেছি।’
নেতানিয়াহুর কার্যালয় এবং মোসাদ গোয়েন্দা সংস্থা প্রায় সরাসরি নতুন পদ্ধতির বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
ইসরায়েলের একটি বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘জিম্মি চুক্তির মধ্যস্থতাকারীরা আলোচনাকারী দলকে জিম্মি চুক্তির রূপরেখা সম্পর্কে হামাসের মন্তব্য জানিয়ে দিয়েছে। ইসরায়েল মন্তব্যটি মূল্যায়ন করছে এবং মধ্যস্থতাকারীদের কাছে তার জবাব জানাবে।’
আলোচনার বিষয়ে অবহিত একটি সূত্রের মতে, ‘কাতারের আলোচকরা যুক্তরাষ্ট্রের সাথে সমন্বয় করে। অবশিষ্ট ফাঁকগুলি পূরণ করার প্রয়াসে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে হামাস এবং ইসরায়েলের সাথে জড়িত রয়েছে।’
বাইডেন বলেছেন, তিনি ৩১ মে যে পরিকল্পনাটির প্রস্তাব করেছিলেন তা ইসরায়েলের সাথে সমন্বয়ের মাধ্যমে তৈরি হয়েছিল। এর মধ্যে রয়েছে ছয় সপ্তাহের যুদ্ধবিরতি, জিম্মি-বন্দি বিনিময় এবং গাজার পুনর্গঠন।
নভেম্বরে যুদ্ধে এক সপ্তাহব্যাপী বিরতিতে ১শ’ জনেরও বেশি জিম্মিকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে এবং ইসরায়েলি কারাগার থেকে ফিলিস্তিনিদের মুক্তি দেওয়া হয়েছে।
হামাস পরিচালিত ভূখন্ডের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালযের পরিসংখ্যান অনুসারে, ইসরায়েলের প্রতিশোধমূলক আক্রমণে কমপক্ষে ৩৭,৯৫৩ জন নিহত হয়েছে। যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু।
আন্তর্জাতিক সমালোচনার শীর্ষে থাকা নেতানিয়াহু অবশিষ্ট জিম্মিদের মুক্তি নিশ্চিত করার জন্য তীব্র অভ্যন্তরীণ চাপের মুখোমুখি। সেইসাথে লেবাননের ফ্রন্টে হিজবুল্লাহর সাথে সম্ভাব্য সংঘর্ষের জন্য প্রস্তুত থাকতে হচ্ছে। তবে তিনি বলেছেন, হামাসের ওপর চাপ সৃষ্টির সর্বোত্তম উপায় হচ্ছে সামরিক পদক্ষেপ।
‘নিউইয়র্ক টাইমস’ এই সপ্তাহে ইসরায়েলি নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের উদ্ধৃত করে বলেছে, শীর্ষ জেনারেলরা যুদ্ধবিরতিকে অবশিষ্ট জিম্মিদের মুক্তির জন্য সর্বোত্তম উপায় হিসাবে দেখেন,এমনকি ইসরায়েলের যুদ্ধের লক্ষ্যগুলি পূরণ না হলেও।
নেতানিয়াহু প্রতিবেদনটি প্রত্যাখ্যান করেছিলেন এবং প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যে, ইসরায়েল ‘পরাজয়ের হাওয়ায়’ নতি স্বীকার করবে না।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন গত সপ্তাহে ওয়াশিংটনে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের সঙ্গে শান্তি প্রচেষ্টা নিয়ে আলোচনা করেছেন।
ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী এবং মার্কিন প্রেসিডেন্টের মধ্যে উত্তেজনার লক্ষণ দেখা দিলে। নেতানিয়াহু ২৪ জুলাই নির্ধারিত অধিবেশনে মার্কিন কংগ্রেসের দুই কক্ষে কথা বলবেন।