শিরোনাম
ঢাকা, ৫ অক্টোবর, ২০২৪ (বাসস): শ্রীলঙ্কার অর্থ মন্ত্রণালয় শনিবার জানিয়েছে, নতুন সরকার তার পূর্বসরির অস্থায়ীভাবে সম্মত ১৪.৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিদেশি বাণিজ্যিক ঋণের একটি বিতর্কিত পুনর্বিন্যাস অনুমোদন করেছে।
দেশটির সাবেক নেতা রনিল বিক্রমাসিংহে গত মাসে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে হেরে যাওয়ার মাত্র দুই দিন আগে আন্তর্জাতিক সার্বভৌম বন্ড হোল্ডারদের ও চায়না ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের সাথে একটি চুক্তি করেন।
নতুন বামপন্থী প্রেসিডেন্ট অনূঢ়া কুমার দিশানায়েকে আরো ভাল শর্তের আহ্বান জানান। কিন্তু অূঢ়ার সরকার কলম্বোতে আইএমএফ প্রতিনিধি দলের সঙ্গে দুই দিনের আলোচনার পর তার পূর্বসূরির চুক্তিকে সম্মান করবে বলে জানায়।
অর্থ মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘শ্রীলঙ্কা কর্তৃপক্ষ ১৯ সেপ্টেম্বর ঘোষিত নীতিগত শর্তেই চুক্তিটিতে তাদের অনুমোদন নিশ্চিত করেছে।’
কলম্বো থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি জানায়, ঋণ পুনর্বিন্যাস হল দ্বীপরাষ্ট্রটির অর্থনীতি পুনর্গঠনের জন্য আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের একটি মূল দাবি। ২০২২ সালে সবচেয়ে খারাপ সংকটের সময় এর অর্থনীতি ৭.৮ শতাংশ হ্রাস পেয়েছিল।
জুন মাসে কলোম্বো সরকার তার দ্বিপক্ষীয় ঋণদাতাদের সাথে ৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের সরকারী ঋণ পুনর্বিন্যাসের একটি চুক্তি করেছে।
১৯ সেপ্টেম্বর ঘোষিত চুক্তির অধীনে বেসরকারি ঋণদাতারা তাদের ঋণের ২৭ শতাংশ কাটছাঁট করতে সম্মত হয়েছে। শ্রীলঙ্কার কাছে এই ঋণতাদাদের আন্তর্জাতিক সার্বভৌম বন্ড ও বিদেশী বাণিজ্যিক ঋণের অর্ধেকেরও বেশি পাওনা রয়েছে। তারা তাদের পাওনা সুদের ওপর আরও ১১ শতাংশ হ্রাস করতেও সম্মত হয়েছে।
আন্তর্জাতিক সার্বভৌম বন্ডের ১২.৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং ২.২ বিলিয়ন ডলার চায়না ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের অধীনে রয়েছে।
২০২২ সালে বিদেশি ঋণ খেলাপি হওয়ার সময় শ্রীলঙ্কার বাহ্যিক ঋণ ৪৬ বিলিয়ন ডলার ছিল। ওই সময়ে দেশটি খাদ্য ও জ্বালানির মতো নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য আমদানির অর্থায়নের জন্য বৈদেশিক মুদ্রারও ঘাটতি ছিল। নতুন সরকার অনুমোদিত বন্ড পুনর্গঠনটি অনুমোদনের জন্য এখন বিধানসভায় যেতে হবে।
দিশানায়েক শপথ নেওয়ার কয়েকদিন পরেই এই বিধানসভা ভেঙে দেন ও তফসিলের এক বছর আগে ১৪ নভেম্বরের জন্য আগাম নির্বাচনের ডাক দেন। ২১ নভেম্বর আইনসভার প্রথম অধিবেশন বসতে চলেছে। গত বছর সুরক্ষিত ২.৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার আইএমএফ বেলআউট ঋণের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ কঠোর কৃচ্ছ্রতার ব্যবস্থাগুলো অর্থনীতিকে স্থিতিশীল করতে সাহায্য করে। তবে এর ফলে নি¤œ আয়ের শ্রীলঙ্কানদের বড় ধরনের অসুবিধায় পড়তে হয়।
সংকটের পরিপ্রেক্ষিতে শ্রীলঙ্কা প্রবৃদ্ধিতে ফিরলেও অর্থনীতি এখনো ঝুঁকিতেই রয়েছে বলে আইএমএফ সতর্ক করেছে।