শিরোনাম
নিউ ইয়র্ক, ১২ অক্টোবর, ২০২৪ (বাসস) : রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের প্রধান রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ ভিন্নমতাবলম্বী আলেক্সি নাভালনি বিশ্বাস করতেন যে তিনি কারাগারে মারা যাবেন। কারাবন্দী অবস্থায় মৃত্যুর আগে তিনি তার ডায়েরিতে এটি লিখেছেন। তার মরণোত্তর এই স্মৃতিকথা আগামী ২২ অক্টোবর প্রকাশিত হবে। নিউ ইয়র্ক থেকে এএফপি এখবর জানায়।
দ্য নিউ ইয়র্কার শুক্রবার এই বই থেকে উদ্ধৃতাংশ প্রকাশ করেছে, যাতে নাভালনির জেলখানার ডায়েরি এবং তার আগের লেখা রয়েছে।
তিনি ২২ মার্চ, ২০২২-এ লিখেছেন, ‘আমি আমার বাকি জীবন কারাগারে কাটিয়ে দেব এবং এখানেই মারা যাব।’
‘বিদায় বলার মতো কেউ থাকবে না... আমাকে ছাড়াই সব বার্ষিকী উদযাপন করা হবে। আমি আমার নাতি-নাতনিদের দেখতে পাব না।’
‘চরমপন্থার’ অভিযোগে নাভালনি ১৯ বছরের কারাদ- ভোগ করছিলেন।
গত ১৬ ফেব্রুয়ারি মাত্র ৪৭ বছর বয়সে তার মৃত্যু বিশ্বব্যাপী ব্যাপক নিন্দার জন্ম দেয়। অনেকে এজন্য রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনকে দোষারোপ করেন।
বিষ ক্রিয়ায় আক্রান্ত হওয়ায় ২০২০ সালে বিদেশে চিকিৎসা নিয়ে রাশিয়ায় ফিরে আসার পর ২০২১ সালের জানুয়ারিতে নাভালনিকে গ্রেপ্তার করা হয়।
তিনি ১৭ জানুয়ারি, ২০২২-এ লিখেছিলেন, আমাদের একমাত্র ভয় হচ্ছে যে একদল মিথ্যাবাদী, চোর এবং ভ-দের দ্বারা লুণ্ঠিত হওয়ার জন্য আমাদের জন্মভূমিটাকে রেখে যেতে হবে।
উদ্ধৃতিগুলো একদিকে কারাগারে তার একাকীত্বকে ধারণ করে আছে আবার একই সঙ্গে রয়েছে হাস্যরসের ছোঁয়াও।
উদাহরণস্বরূপ, ১ জুলাই, ২০২২-এ, নাভালনি তার সাধারণ দিনের রূপরেখা দিয়েছেন: সকাল ৬:০০ টায় ঘুম থেকে উঠা, ৬:২০ টায় প্রাতঃরাশ করা এবং ৬:৪০ টায় কাজ শুরু করা।
‘কর্মক্ষেত্রে, আপনি সেলাই মেশিনে হাঁটু সমান উচ্চতার একটি টুলের উপর সাত ঘন্টা বসে থাকেন,’ তিনি লিখেছেন।
‘কাজের পরে, আপনি পুতিনের প্রতিকৃতির নীচে কাঠের বেঞ্চে কয়েক ঘন্টা বসে থাকেন। একে বলা হয় ‘শৃঙ্খলামূলক কার্যকলাপ।’
‘প্যাট্রিয়ট’ শিরোনামের এই বইটি মার্কিন প্রকাশক বিসিডি প্রকাশ করবে, যার একটি রাশিয়ান সংস্করণেরও পরিকল্পনা করছে।
নিউ ইয়র্কারের সম্পাদক ডেভিড রেমনিক লিখেছেন, ‘তাঁর যন্ত্রণার ট্র্যাজেডি এবং তার মৃত্যুতে ক্ষুব্ধ না হয়ে নাভালনির জেলের ডায়েরি পড়া অসম্ভব।’
১৭ জানুয়ারি, ২০২৪ তারিখে নাভালনি তার সহবন্দী এবং কারারক্ষীদের প্রশ্ন: কেন তিনি রাশিয়ায় ফিরে এসেছিলেন? উত্তর লিখেছেন, ‘আমি আমার দেশকে ছেড়ে দিতে চাই না বা এর সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করতে চাই না। যদি আপনার বিশ্বাসের অর্থ কিছু হয়, তাহলে আপনাকে অবশ্যই তার পক্ষে দাঁড়াতে এবং প্রয়োজনে আত্মত্যাগ করতে প্রস্তুত থাকতে হবে।’