শিরোনাম
ঢাকা, ১২ নভেম্বর, ২০২৪ (বাসস) : কপ-২৯-এ অংশগ্রহনের লক্ষ্যে মঙ্গলবার আজারবাইজানে কয়েক ডজন বিশ্বনেতা সমাবেত হয়েছেন। তবে ক’জন গুরুত্বপূর্ণ শীর্ষনেতা জাতিসংঘের জলবায়ু আলোচনা এড়িয়ে যাচ্ছেন। ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্বাচন বিজয় সম্মেলনটিতে গভীরভাবে প্রভাব ফেলেছে।
আজারবাইজানের রাজধানী ও বৃহত্তম নগরী বাকু থেকে এএফপি জানায়, দুই দিনের মধ্যে বাকুতে ৭৫ জনের বেশি নেতার উপস্থিতি প্রত্যাশিত। তবে দূষণের জন্য সবচেয়ে বেশী দায়ী শক্তিশালী অর্থনীতির দেশগুলো এই বছরের শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিচ্ছেন না।
যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কেয়ার স্টারমারসহ বৈশ্বিক উত্তাপ বৃদ্ধি ও গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমনের প্রায় ৮০ শতাংশের জন্য দায়ী জি২০-এর হাত গোনা মাত্র ক’জন সদস্য রাষ্ট্র নেতার বাকুতে অনুষ্ঠিত শীর্ষ সম্মেলনটিতে উপস্থিতি প্রত্যাশা করা হচ্ছে।
যুক্তরাজ্যের জ্বালানি মন্ত্রী এড মিলিব্যান্ড সোমবার এক্স-এ বলেন, ‘এই সরকার জলবায়ু নিরাপত্তাকে জাতীয় নিরাপত্তা বলে বিশ্বাস করে।’
ইভেন্টটিতে অনুপস্থিত জি২০ নেতাদের মধ্যে রয়েছেন- জো বাইডেন, শি জিনপিং, নরেন্দ্র মোদি এবং ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। উদ্বোধনী দিনে জলবায়ু কার্যক্রমে ভবিষ্যতের মার্কিন ঐক্য নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দেয়। তবে ওয়াশিংটনের শীর্ষ জলবায়ু দূত বাকুতে উপস্থিত থাকা দেশগুলোর প্রতিনিধিদের আশ্বস্ত করেন যে সাময়িক স্থগিত থাকলেও ট্রাম্পের পুনঃনির্বাচিত হওয়া বৈশ্বিক উষ্ণতা নিয়ে মার্কিন প্রচেষ্টা ধরে রাখবে।
জাতিসংঘের জলবায়ু বিষয়ক প্রধান সাইমন স্টিয়েল সোমবার বিশ্বব্যাপীদেশগুলোকে সংহতির আহ্বান জানিয়ে আলোচনা শুরু করেন। তবে উদ্বোধনী দিনটিতে অফিসিয়াল এজেন্ডা নিয়ে দ্বন্দ্বের কারণে কাস্পিয়ান সাগরের কাছে স্টেডিয়াম ভেন্যুতে আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু হতে কয়েক ঘন্টা বিলম্ব হয়। পরে সন্ধ্যায়, সরকারগুলো তাদের জলবায়ু লক্ষ্যমাত্রা পূরণের জন্য দেশগুলোকে ঋণ বাণিজ্যের অনুমোদন দেওয়ায় জাতিসংঘে বিশ্বব্যাপী কার্বন বাজারে নতুন মান অনুমোদনের একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নেয়।
কপ-২৯- এর সভাপতি ও সাবেক জ্বালানী নির্বাহী মুখতার বাবায়েভ বছরের পর বছর ধরে চলমান এই জটিল আলোচনার নতুন অগ্রগতিকে স্বাগত জানান।
নিচু দ্বীপ থেকে শুরু করে যুদ্ধের ফলে ভেঙ্গে পড়া রাষ্ট্রগুলো জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য সবচেয়ে কম দায়ী হোলেও সমুদ্রের বৃদ্ধি, চরম আবহাওয়া ও অর্থনৈতিক ধাক্কার কারণে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে। কপ২৯-এ সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার হচ্ছে উন্নয়নশীল দেশগুলোতে জলবায়ু সংক্রান্ত বিপর্যয় মোকাবিলায় তহবিল বৃদ্ধির লক্ষ্যে একটি চুক্তিতে উপনীত হওয়া।
কেউ কেউ তাদের দেশগুলোয় জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত মোকাবিলায় এ বছর কপ-২৯-এ ১০০ বিলিয়ন ডলারের বর্তমান অঙ্গীকার দশ গুণ বাড়ানোর জন্য চাপ দিচ্ছেন। সাবেক জ্বালানি নির্বাহী বাবায়েভ আলোচকদের বলেন, ট্রিলিয়নের প্রয়োজন হতে পারে, তবে শত বিলিয়নের পরিসংখ্যানটি আরও ‘বাস্তবসম্মত’।
কাকে , কতটা ক্ষতিপুরণ দিতে হবে এবং কাকে দিয়ে তা দিতে হবে তা নিয়ে মতবিরোধ থাকায় দেশগুলো বছরের পর বছর ধরে বিবাদমান রয়েছে। কোপ-২৯-এসব জটিলতার উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অন্বেষণ করবে বলে আশা করা হচ্ছে। জার্মানির জলবায়ু আলোচক জেনিফার মরগান বলেছেন, ‘এসব আলোচনা সহজ হবে না, সম্ভবত প্যারিসের পর এ আলোচনা হবে সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং।’
জলবায়ু বিপর্যয়ের শিকার আফ্রিকান, এশিয়ান ও ল্যাটিন আমেরিকানর দেশগুলোর নেতৃবৃন্দসহ প্রায় ৫০হাজার মানুষ আজারবাইজানে শীর্ষ সম্মেলনটিতে যোগ দিচ্ছেন।