বাসস
  ০৯ জানুয়ারি ২০২৫, ১৫:৩৪

লেবাননে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রস্তুতি

ঢাকা, ৯ জানুয়ারি, ২০২৫ (বাসস) : যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটিকে আর্থিক সংকট থেকে বের করে আনার লক্ষ্যে লেবাননের আইনপ্রণেতারা দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে অচলাবস্থার পর স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার একটি প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করবেন বলে আশা করা হচ্ছে। বৈরুত থেকে এএফপি এ খবর জানায়।

২০২২ সালের অক্টোবরে মেয়াদ শেষ হওয়ার পর থেকে ভূমধ্যসাগরীয় এই ক্ষুদ্র দেশটিতে কোনও প্রেসিডেন্ট নেই।

১৯৭৫-১৯৯০ সালের গৃহযুদ্ধে এখনও ক্ষতবিক্ষত দেশটিতে বিভক্ত রাজনৈতিক অভিজাতরা সাধারণত কোনও সফল সংসদীয় ভোট অনুষ্ঠিত হওয়ার আগে সম্মিলিতভাবে একজন প্রার্থীর বিষয়ে একমত হয়। ৬০ বছর বয়সী সেনাপ্রধান জোসেফ আউনকে ব্যাপকভাবে এগিয়ে থাকা প্রার্থী হিসেবে দেখা হচ্ছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, লেবাননের দক্ষিণে যুদ্ধবিরতি বাস্তবায়নের জন্য সেনাবাহিনীর দ্রুত মোতায়েনের তত্ত্বাবধানের জন্য তিনিই হতে পারেন যথোপযুক্ত।

প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হতে আউনের দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রয়োজন। ১২৮ জন আইনপ্রনেতার মধ্যে কমপক্ষে ৮৬ জনের সমর্থন প্রয়োজন। যদি তিনি বা অন্য কোনও প্রার্থী এত জয়লাভে ব্যর্থ হন, তাহলে সংসদ দ্বিতীয় দফায় নির্বাচন করবে, যেখানে জয়ের জন্য সাধারণ সংখ্যাগরিষ্ঠতা বা ৬৫ ভোট যথেষ্ট হবে।

বর্তমান বিধান অনুযায়ী কোন উচ্চ পদে থাকা ব্যক্তিকে তার অবসর গ্রহনের দুই বছর শেষ হওয়ার আগে এই পদ গ্রহণের অনুমতি নেই। প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলে, আউন হবেন লেবাননের পঞ্চম সেনা নায়ক এবং টানা চতুর্থ সেনা প্রেসিডেন্ট। তবে, আউনের প্রেসিডেন্ট হওয়ার জন্য একটি সাংবিধানিক সংশোধনীর প্রয়োজন রয়েছে।

হিজবুল্লাহপন্থী ও বিরোধী ব্লকগুলোর মধ্যে সংসদে অচলাবস্থার মধ্যে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের পূর্ববর্তী ১২টি প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে। নভেম্বরের শেষের দিক থেকে দক্ষিণ লেবাননে একটি ভঙ্গুর যুদ্ধবিরতি কার্যকর রয়েছে। দেশটির ১৩তম নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন আজ সকাল ১১টায় শুরু হবে।

গত শরতে ইসরাইল ও শিয়া হিজবুল্লাহ গোষ্ঠীর মধ্যে যুদ্ধ তীব্র রূপ নিলে বৈরুতে এক বিমান হামলায় হিজবুল্লাহ নেতা হাসান নাসরুল্লাহ নিহত হন।

প্রতিবেশী সিরিয়ায়, গত মাসে বিদ্রোহীরা প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদকে উৎখাত করার পর হিজবুল্লাহ তার একজন প্রধান মিত্রকে হারিয়েছে।

অধিবেশনের আগে আন্তর্জাতিক চাপ বৃদ্ধি পেয়েছে। ফরাসি রাষ্ট্রদূত জিন-ইভেস লে ড্রিয়ানওকে সেখানে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। মার্কিন রাষ্ট্রদূত আমোস হোচস্টেইন এই সপ্তাহের শুরুতে বৈরুতে ছিলেন। তিনি দেশটির আইন প্রণেতাদের নির্বাচন সফল করার আহ্বান জানান। দুই সপ্তাহের মধ্যে দ্বিতীয়বারের মতো বুধবার একজন সৌদি রাষ্ট্রদূতও লেবানন সফর করেন। সৌদি ও মার্কিন রাষ্ট্রদূতদের সাথে দেখা করা আইনপ্রণেতারা বলেছেন, তাদের দৃঢ় ধারণা দেওয়া হয়েছে যে উভয় দেশই জোসেফ আউনকে সমর্থন করেছে।

লেবাননের তত্ত্বাবধায়ক প্রধানমন্ত্রী নাজিব মিকাতি বুধবার বলেছেন, তিনি আশাবাদী। তিনি বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট পদ শূন্য হওয়ার পর প্রথমবারের মতো, আমি খুশি যে ঈশ্বরের ইচ্ছায় আগামীকাল আমাদের একজন প্রেসিডেন্ট থাকবে।’

২০১৯ সাল থেকে, দেশটি তার ইতিহাসের সবচেয়ে খারাপ আর্থিক সংকটে জর্জরিত। বিশ্বব্যাংকের মতে, হিজবুল্লাহ-ইসরায়েল যুদ্ধের ফলে লেবাননে ৫ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি অর্থনৈতিক ক্ষতি হয়েছে, যার মধ্যে অবকাঠামোগত ক্ষতির পরিমাণ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি।