বাসস
  ১৭ জানুয়ারি ২০২৫, ২৩:৫৮

ট্রাম্পের প্রত্যাবর্তনই কি হবে জো বাইডেনের উত্তরাধিকার?

ঢাকা, ১৭ জানুয়ারি ২০২৫ (বাসস) : জো বাইডেন চেয়েছিলেন ইতিহাসে তার নাম যুক্ত হোক এমন একজন নেতা হিসেবে যিনি আমেরিকাকে ডোনাল্ড ট্রাম্পের হাত থেকে রক্ষা করেছিলেন। কিন্তু তার বদলে, তিনি হয়তো এমন একজন প্রেসিডেন্ট হিসেবে স্মরণীয় হয়ে থাকবেন যিনি ট্রাম্পকে হোয়াইট হাউসে দ্বিতীয় মেয়াদে ফিরিয়ে এনেছিলেন।

ভবিষ্যতে হয়তো তাকে আরও উদারভাবে মূল্যায়ন করা হবে। তবে বর্তমানে ৮২ বছর বয়সী এই ডেমোক্র্যাট নেতা একটি বিভক্ত দেশকে কোভিড-১৯ মহামারি এবং ট্রাম্পের প্রথম চার বছরের বিশৃঙ্খলার মধ্য দিয়ে পরিচালিত করেছেন। তিনি উল্লেখযোগ্য কিছু আইন প্রণয়নও করেছেন।

তবে বাইডেনের একক মেয়াদ তার প্রতিদ্বন্দ্বীর শাসনামলের মধ্য আবৃত থাকবে। আর এটি চিহ্নিত হবে একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তের মাধ্যমে।  আর এটি হলো- তার বয়স নিয়ে বর্ধমান উদ্বেগ উপেক্ষা করে ২০২৪ সালের নির্বাচনে তার পুনরায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সিদ্ধান্ত ও পরে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত।

অনেকের জন্য বাইডেনের স্মরণীয় মুহূর্তটি হতে পারে একটি বিতর্কে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে অসহায় ও নির্বাক হয়ে পড়া, যা তাকে শেষ পর্যন্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে বেরিয়ে যেতে বাধ্য করে।

-    ঐতিহাসিক চ্যালেঞ্জ -

বাইডেনের ২০২১ সালের জানুয়ারির শপথ গ্রহণ ছিল একজন নেতার অবিশ্বাস্য প্রত্যাবর্তন, যাকে প্রায়শই অবমূল্যায়ন করা হয়েছিল এবং যিনি রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জ ও ব্যক্তিগত ট্র্যাজেডির মধ্য দিয়ে তার জীবন কাটিয়েছেন।

কিন্তু তিনি এমন এক সময়ে ক্ষমতায় আসেন, যখন দেশটি ২০২১ সালের ৬ জানুয়ারি ক্যাপিটল দাঙ্গার আঘাতে হতবাক ছিল। পাশাপাশি কোভিড মহামারি দেশটির অর্থনীতি বিপর্যস্ত করেছিল।

বাইডেন দ্রুত একটি বিশাল মহামারি পুনরুদ্ধার প্রকল্প এবং পরিবেশবান্ধব শিল্পে বিনিয়োগের পরিকল্পনা অনুমোদন করান। পাশাপাশি, তিনি তার ডেপুটি হিসেবে কমলা হ্যারিসকে নিযুক্ত করেন। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ, দক্ষিণ এশীয় ও নারী ভাইস প্রেসিডেন্ট।

-    জনপ্রিয়তার পতন  -

তবে ২০২১ সালে আফগানিস্তান থেকে মার্কিন বাহিনীকে বিশৃঙ্খলভাবে প্রত্যাহারের ফলে তার জনপ্রিয়তায় তীব্র ধাক্কা খায়, যা আর কখনোই পুরোপুরি পুনরুদ্ধার হয়নি।

তার মহামারি উদ্দীপনা প্রকল্প মূল্যস্ফীতি বাড়িয়ে দেয়, যার ফলে ২০২৪ সালের নির্বাচনে আমেরিকান ভোটাররা তাকে এবং তার প্রশাসনকে শাস্তি দেয়। এছাড়া, সীমান্ত নীতির শিথিলতার কারণে বেআইনি অভিবাসীদের রেকর্ডসংখ্যক প্রবেশ ঘটে, যা ট্রাম্প তার প্রচারণায় কাজে লাগান।

-     ‘আমেরিকার জাদু’ -

বাইডেন তার বাবার শেখানো একটি নীতিকথা বারবার বলতেন: ‘যখন তুমি পড়ে যাবে, তখন আবার উঠে দাঁড়াও।’ এটি তিনি সারা জীবন অনুসরণ করেছেন। তবে বয়স হয়ে যাওয়া এমন একটি লড়াই, যা তিনি জিততে পারেননি।

২০২৩ সালে পুনর্নির্বাচনে লড়াইয়ের ঘোষণা দিয়ে তিনি তরুণ প্রজন্মের জন্য সুযোগ তৈরির প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করেন। এর ফলে রিপাবলিকানদের আক্রমণ এবং ডেমোক্র্যাটদের সন্দেহ আরও বাড়ে।

অবশেষে বাইডেন তার বিদায়ী বক্তব্যে আমেরিকার সম্ভাবনা নিয়ে আশাবাদী থেকে বলেন, ‘শুধুমাত্র আমেরিকাতেই সম্ভব, একজন সাধারণ পরিবারের শিশু, যিনি তোতলামি নিয়ে বেড়ে উঠেছেন, আজ ওভাল অফিসে প্রেসিডেন্ট হিসেবে বসতে পারেন। এটাই আমেরিকার জাদু।’