বাসস
  ৩০ জানুয়ারি ২০২৫, ১৮:১৯

পশ্চিম ‘আন্তরিক’ হলে পরমাণু আলোচনায় প্রস্তুত ইরান

ঢাকা, ৩০ জানুয়ারি, ২০২৫ (বাসস): পশ্চিমা দেশগুলো যদি আন্তরিক মনোভাব দেখায়, তবে ইরান তাদের পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে আলোচনা করতে প্রস্তুত বলে জানিয়েছে। বৃহস্পতিবার সরকারি দৈনিক ইরান-এ প্রকাশিত এক সাক্ষাৎকারে এ তথ্য জানিয়েছেন দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র এসমাইল বাকায়ি।

তেহরান থেবে এএফপি জানায়, তিনি বলেন, ‘আমরা বহুবার বলেছি, আমরা আলোচনা করতে প্রস্তুত, তবে অপর পক্ষ আন্তরিক হলেই কেবল এটি সম্ভব হবে।’

ইরান সম্প্রতি পশ্চিমা দেশগুলোকে একাধিক বার সংকেত দিয়েছে যে, তারা পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে একটি সমঝোতায় আসতে ইচ্ছুক।

মঙ্গলবার স্কাই নিউজে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে, ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরঘচি বলেছেন, নতুন মার্কিন প্রশাসন যদি পরমাণু আলোচনা নতুন করে শুরু করতে চায়, তবে তেহরানের বিশ্বাস অর্জন করতে হবে।

বৃহস্পতিবারের সাক্ষাৎকারে বাকায়ি আশা প্রকাশ করেন যে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরানের প্রতি একটি ‘বাস্তবানুগ দৃষ্টিভঙ্গি’ গ্রহণ করবেন।

২০২১ সালে তার প্রথম মেয়াদ শেষ হওয়ার পর, ট্রাম্প ‘সর্বোচ্চ চাপ’ নীতি অনুসরণ করেন, যার মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র ইরানের পরমাণু কর্মসূচি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ২০১৫ সালের ঐতিহাসিক পরমাণু চুক্তি থেকে বের হয়ে যায়।

নতুন আলোচনা শুরুর সম্ভাবনা নিয়ে প্রশ্ন করলে, বাকায়ি বলেন, ইরানের নীতি নির্ভর করবে ‘অন্য পক্ষের কর্মকাণ্ডের ওপর।’
ওয়াশিংটনের ২০১৮ সালের পরমাণু চুক্তি থেকে বের হওয়ার পর এক বছর পর্যন্ত তেহরান চুক্তি মেনে চলছিল, তবে পরে তা ধীরে ধীরে প্রত্যাহার করে নেয়।

ইরান বারবার চুক্তি পুনরুদ্ধারের ইচ্ছা প্রকাশ করলেও পরমাণু চুক্তি পুনরুজ্জীবিত করার প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে, যদিও এবং প্রেসিডেন্ট মাসউদ পেজেকশিয়ান জুলাই মাসে দায়িত্ব গ্রহণ করে তার দেশের একাকীত্ব অবসানের আহ্বান জানিয়েছেন।

২০১৬ সালে ট্রাম্পের ক্ষমতায় আসার আগে ইরান-ব্রিটেন, ফ্রান্স ও জার্মানির সঙ্গে পরমাণু আলোচনা চালিয়েছে, যা উভয় পক্ষই ‘খোলামেলা ও গঠনমূলক’ বলে বর্ণনা করেছে।

ডিসেম্বর মাসে তিনটি পশ্চিমা দেশ তেহরানের বিরুদ্ধে উচ্চমাত্রার ইউরেনিয়াম মজুদ বাড়ানোর অভিযোগ তুলে বলেছে, এটি কোনো যৌক্তিক নাগরিক উদ্দেশ্য ছাড়া করা হয়েছে এবং পরমাণু নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল করার বিষয়েও আলোচনা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার, বাকায়ি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, যদি নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল করা হয়, তবে ইরানের পরমাণু অস্ত্র বিস্তার রোধ চুক্তি (এনপিটি) মেনে চলার আর কোনো অর্থ থাকবে না।
এনপিটি অনুসারে, চুক্ত স্বাক্ষরকারী দেশগুলো তাদের পরমাণু মজুদ ঘোষণা করতে এবং তা আন্তর্জাতিক পারমাণবিক শক্তি সংস্থা (আইএইএ)র তত্ত্বাবধানে রাখতে বাধ্য।