বাসস
  ৩০ জানুয়ারি ২০২৫, ২৩:৪৭

জাতিসংঘ মানবাধিকার দপ্তরের ২০২৫ সালের জন্য ৫০০ মিলিয়ন ডলার অনুদানের আবেদন

ঢাকা, ৩০ জানুয়ারি ২০২৫ (বাসস) : জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনার বৃহস্পতিবার বলেন, তার দপ্তরকে ২০২৫ সালে বিশ্বব্যাপী মানবাধিকার সংকট মোকাবেলা করার জন্য নিয়মিত বাজেটের পাশাপাশি অতিরিক্ত ৫০০ মিলিয়ন ডলার প্রয়োজন।

জেনেভা থেকে এএফপি জানায়, ফলকার তুর্ক বলেন, তিনি তার দপ্তরের ২০২৫ সালের অনুদান আবেদন উপস্থাপন করতে গিয়ে বলেন, ‘মানবাধিকার সংক্রান্ত কাজে বিনিয়োগ করা না হলে মানবজীবন বিপন্ন হতে পারে।’

জাতিসংঘের জেনেভা দপ্তরে দেশগুলোর প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘২০২৪ সালে সঙ্কটাপন্ন পরিস্থিতিতে আমাদের কর্মীরা গুরুত্বপূর্ণ কাজ করেছে। আমাদের মনে হয় না যে, ২০২৫ সালে মানবাধিকার সম্পর্কিত বড় চ্যালেঞ্জগুলো কমবে।’

তিনি বলেন, ‘এই বিভক্ত ও বৈপরীত্যপূর্ণ বিশ্বে মানবাধিকার আরও বড় গুরুত্ব লাভ করেছে এবং এটি বিশ্বের সকল প্রান্তে শীর্ষ অগ্রাধিকার হতে হবে।’

তুর্ক জানান, ২০২৪ সালে তার দপ্তর গাজা, ইউক্রেন, সুদান ও মিয়ানমারের মতো বহু জায়গায় গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘন ও অপব্যবহার বিষয়ে সতর্কবার্তা দিয়েছিল।

জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনার জানান, তার দপ্তরের ২,০০০ কর্মী ৯২টি দেশে কাজ করছে এবং প্রায় ১১,০০০ মানবাধিকার নজরদারি অভিযান পরিচালনা করেছে এবং প্রায় ১,০০০টি বিচার পর্যবেক্ষণ করেছে।

গত বছর তার দপ্তরের প্রচেষ্টায় ৩,১৪৫ জন অযথা আটক ব্যক্তির মুক্তি মিলেছে।

তার কর্মীরা প্রায় ১৫,০০০টি মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনার ডকুমেন্ট করেছে এবং ১০,০০০ জন আধুনিক দাসত্বের শিকার ব্যক্তিকে সহায়তা করেছে, এছাড়া ৪৯,০০০ জন দুর্ভোগ ও নির্যাতনের শিকার এবং তাদের পরিবারের সদস্যদের সহায়তা প্রদান করেছে।

তুর্ক জানান, তার দপ্তরের কাজ চলতে ২০২৫ সালের জন্য ৫০০ মিলিয়ন ডলার অতিরিক্ত অনুদান প্রয়োজন। গত বছরও এই পরিমাণের অনুদান চাওয়া হয়েছিল, তবে পাওয়া গিয়েছিল মাত্র ২৬৯ মিলিয়ন ডলার, যা ছিল ২০২৩ সালের তুলনায় ৪ শতাংশ কম।

কিছু দেশ তাদের সমর্থন জানিয়ে এবং জাতিসংঘ মানবাধিকার দপ্তরের জন্য অব্যাহত তহবিল প্রদান করার অঙ্গীকার করেছে। তবে, সেই তালিকায় যুক্তরাষ্ট্র ছিল না। যুক্তরাষ্ট্র সম্প্রতি জাতিসংঘ সংস্থাগুলোর তহবিল কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়ে উদ্বেগ তৈরি করেছে।

গত সপ্তাহে ক্ষমতায় ফিরে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা করেন যে, বিশ্বের বৃহত্তম বৈদেশিক সাহায্য দানকারী দেশ যুক্তরাষ্ট্র পর্যালোচনার জন্য সাময়িকভাবে প্রায় সমস্ত বৈদেশিক সাহায্য স্থগিত রাখবে।

গত বছর যুক্তরাষ্ট্র ৩৬ মিলিয়ন ডলার স্বেচ্ছায় মানবাধিকার দপ্তরে প্রদান করেছিল, যা জাতিসংঘের নিয়মিত বাজেটের বাইরে ছিল।

জাতিসংঘ মানবাধিকার দপ্তরের মুখপাত্র রাভিনা শামদাসানি বৃহস্পতিবার এএফপিকে বলেন, ‘আমরা এখন পর্যন্ত ২০২৫ সালের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের তহবিল পরিকল্পনা সম্পর্কে কোনো তথ্য পাইনি, তবে আমরা আশা করছি যে যুক্তরাষ্ট্র তার সমর্থন অব্যাহত রাখবে।’