বাসস
  ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৩:১৪

শুল্ক আরোপের বিষয়ে কানাডা-মেক্সিকোর সাথে আলোচনা করবেন ট্রাম্প

ঢাকা, ৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ (বাসস) : যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, তিনি সোমবার কানাডা এবং মেক্সিকোর ওপর আরোপিত শাস্তিমূলক শুল্ক নিয়ে উভয় দেশের নেতাদের সাথে আলোচনা করবেন। ওয়াশিংটন থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানায়।

রোববার সন্ধ্যায় ফ্লোরিডা থেকে ওয়াশিংটনে ফিরে আসার পর সাংবাদিকদের  সাথে কথা বলার সময় ট্রাম্প বলেন, ‘আমি আগামীকাল সকালে কানাডার প্রধানমন্ত্রী (জাস্টিন) ট্রুডো এবং একই সময় মেক্সিকোর সাথেও কথা বলবো।’ 

তিনি আরো বলেন, আমি খুব নাটকীয় কিছু আশা করছি না। 

ট্রাম্প আগেই বলেছিলেন, তিনি প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নিয়েই কানাডা, মেক্সিকো ও চীনের ওপর নতুন শুল্ক আরোপ করবেন। যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধ অভিবাসন ও মাদক পাচার ঠেকাতে এমন পদক্ষেপ নেবেন তিনি।

সে অনুযায়ী গত শনিবার কানাডা ও মেক্সিকোর পণ্য আমদানিতে ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের আদেশ দেন ট্রাম্প। এ ছাড়া চীনের পণ্যে বর্তমান হারের অতিরিক্ত ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।

রোববারের দিনের শুরুতে ট্রাম্প তার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম প্ল্যাটফর্ম ‘ট্রুথ-এ একাধিক বার্তায় লিখেছেন, আমেরিকানরা তার শুল্কের কারণে, অর্থনৈতিকভাবে কিছুটা ‘কষ্ট’ পেতে পারেন, তবে যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থ রক্ষার জন্য এটি হবে ‘উপযুক্ত মূল্য’।

চীন, মেক্সিকো এবং কানাডা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ তিন বাণিজ্য অংশীদার। মঙ্গলবার শুল্ক কার্যকর হলে এরা সকলেই তার পাল্টা ব্যবস্থা নেবে।

ট্রাম্প রোববার সকালে তার ট্রুথ সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে লিখেছেন, ‘কিছু কষ্ট হবে কি? হ্যাঁ, হতে পারে (আর নাও হতে পারে!)। কিন্তু আমরা আমেরিকাকে আবারও মহান করে তুলব এবং এর জন্য উপযুক্ত মূল্য দিতে হবে, যা অবশ্যই দিতে হবে।’

বিশ্লেষকরা আশা করছেন, বাণিজ্য যুদ্ধ যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি কমিয়ে দিতে পারে এবং স্বল্পমেয়াদে ভোক্তামূল্য বৃদ্ধি করতে পারে। শুল্ক আরোপের ফলে মার্কিন ভোক্তাদের ব্যয় বাড়তে পারে। ভোগ্যপণ্যের দাম বৃদ্ধি ২০২৪ সালের নির্বাচনে  ট্রাম্পের বিজয়ের অন্যতম কারণ ছিল।

জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধি ঠেকাতে ট্রাম্প কানাডা থেকে আমদানি করা জ্বালানির ওপর মাত্র ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছেন।

একটি পৃথক সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে, ট্রাম্প বিশেষভাবে কানাডাকে লক্ষ্য করে আমেরিকার উত্তরের প্রতিবেশীকে মার্কিন রাজ্যে পরিণত করার আহ্বানের পুনরাবৃত্তি করেন।

ট্রাম্প দাবি করেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র কানাডাকে টিকিয়ে রাখতে শত শত বিলিয়ন ডলার ভর্তুকি দিচ্ছে। এই বিশাল ভর্তুকি ছাড়া কানাডা একটি কার্যকর দেশ হিসেবে অস্তিত্বহীন হয়ে পড়বে।

তিনি আরো বলেন, ‘তাই কানাডা আমাদের ৫১তম প্রিয়তম রাজ্য হওয়া উচিত। 

মার্কিন আদমশুমারি ব্যুরো জানিয়েছে, ২০২৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কানাডার বাণিজ্য ঘাটতি ৫৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ছিল।

কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো শনিবার ঘোষণা দেন, তার দেশ আমেরিকার পণ্যের ওপর ২৫ শতাংশ পাল্টা শুল্ক আরোপ করবে, যার পরিমাণ কানাডিয়ান ডলার ১৫৫ বিলিয়ন (মার্কিন ডলার ১০৬.৬ বিলিয়ন)। প্রথম দফার শুল্ক মঙ্গলবার থেকে কার্যকর হবে। আর দ্বিতীয় দফা তিন সপ্তাহ পর।

কানাডার বিভিন্ন প্রদেশের নেতারা ইতোমধ্যে পাল্টা পদক্ষেপ নিয়েছেন, যার মধ্যে রয়েছে মার্কিন মদ কেনার ক্ষেত্রে তাৎক্ষণিক নিষেধাজ্ঞা।