বাসস
  ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২:২৭

ফিলিস্তিনিদের গাজায় থাকার ইচ্ছাকে বিশ্ব নেতাদের সম্মান করা উচিত : জাতিসংঘে ফিলিস্তিনি দূত

ঢাকা, ৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ (বাসস)  : জাতিসংঘে নিযুক্ত ফিলিস্তিনি দূত মঙ্গলবার বলেছেন, বিশ্ব নেতাদের এবং জনগণের উচিত ফিলিস্তিনিদের গাজায় থাকার আকাঙ্ক্ষাকে সম্মান করা। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, তিনি বিশ্বাস করেন, এই ভূখণ্ডের মানুষকে স্থায়ীভাবে অন্যত্র পুনর্বাসিত করা উচিত,  ট্রাম্পের এই উক্তির পর জাতিসংঘে নিযুক্ত ফিলিস্তিনি দূত এ কথা বলেন। 

জাতিসংঘ থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানায়।

ফিলিস্তিনি দূত রিয়াদ মনসুর বলেন, ‘আমাদের দেশে হচ্ছে আমাদের মাতৃভূমি। যদিও এর কিছু অংশ অর্থাৎ গাজা উপত্যকা ধ্বংস হয়ে গেছে।  তারপরও ফিলিস্তিনি জনগণ সেখানে ফিরে যাওয়ার পথ বেছে নেবে। আমি মনে করি, নেতৃবৃন্দ এবং জনগণের উচিত ফিলিস্তিনিদের গাজায় বসবাসের আকাঙ্ক্ষাকে সম্মান করা।’ 

মঙ্গলবার, ট্রাম্প এবং ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু হোয়াইট হাউসে বৈঠক করেন। 

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, তিনি বিশ্বাস করেন ইসরাইলি আক্রমণের পর ফিলিস্তিনিদের গাজা ছেড়ে চলে যাওয়া উচিত। ইসরাইলি আক্রমণের ফলে গাজা ধ্বংস হয়ে গেছে এবং এর বেশিরভাগ অংশ ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।

বৈঠকের আগে ট্রাম্প বলেন, তিনি এমন একটি সমাধান চান, যেখানে একটি সুন্দর এলাকায় মানুষকে স্থায়ীভাবে চমৎকার বাড়িতে পুনর্বাসিত করা হবে এবং তারা সেখানে সুখে থাকবে। 

জাতিসংঘে নিযুক্ত ফিলিস্তিনি দূত মনসুর ট্রাম্পের নাম উল্লেখ না করলেও মার্কিন প্রেসিডেন্টর প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন বলে মনে হচ্ছে।

তিনি বলেন, আমাদের দেশ এবং আমাদের ঘর হল গাজা উপত্যকা, এটি ফিলিস্তিনের অংশ। আমাদের কোন বাড়ি নেই। যারা তাদের একটি সুখী, সুন্দর জায়গায় পাঠাতে চান। তাদের ইসরাইলের ভিতরে তাদের আসল ঘরে ফিরে যেতে দিন। সেখানে সুন্দর জায়গা আছে এবং তারা এই জায়গাগুলোতে ফিরে যেতে পারলে খুশি হবেন।

ইসরাইলের  সরকারি পরিসংখ্যানের উপর ভিত্তি করে এএফপির এক পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের হামলার পর গাজায় যুদ্ধ শুরু হয়। ফলে ইসরাইলি পক্ষের ১,২১০ জন নিহত হয়, যাদের বেশিরভাগই বেসামরিক নাগরিক।

হামাস-নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য মতে, ইসরাইলের প্রতিশোধমূলক  হামলায় গাজায় কমপক্ষে ৪৭,৫১৮ জন নিহত হয়েছে। যাদের বেশিরভাগই বেসামরিক নাগরিক। জাতিসংঘ এই পরিসংখ্যানকে নির্ভরযোগ্য বলে মনে করে।

জাতিসংঘ বলছে, ইসরাইলি আক্রমণে ১৯ লক্ষেরও বেশি মানুষ, যা গাজার জনসংখ্যার ৯০ শতাংশ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। বোমা হামলার ফলে স্কুল, হাসপাতাল এবং মৌলিক বেসামরিক অবকাঠামো সহ অঞ্চলটির বেশিরভাগ কাঠামো ধ্বংস হয়ে গেছে।

১৯ জানুয়ারী হামাস কর্তৃক বন্দী এবং ইসরায়েল কর্তৃক বন্দীদের মুক্তি সহ একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তির সূচনা হওয়ার পর ফিলিস্তিনিরা আনন্দিত হয়েছিল, অনেকেই তাদের বাড়িতে ফিরে যায় যা পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে।

মনসুর বলেন, দুুই দিনের মধ্যে কয়েক ঘন্টার ব্যবধানে, ৪ লাখ ফিলিস্তিনি হেঁটে গাজা উপত্যকার উত্তরাঞ্চলে ফিরে এসেছেন। 

তিনি বলেন, আমি মনে করি আমাদের ফিলিস্তিনি জনগণের পছন্দ এবং ইচ্ছাকে সম্মান করা উচিত এবং শেষ পর্যন্ত ফিলিস্তিনি জনগণই তাদের সিদ্ধান্ত নেবে।