বাসস
  ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৩:১৪

গাজা 'দখল' করবে যুক্তরাষ্ট্র : ট্রাম্প

ঢাকা, ৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ (বাসস) : ফিলিস্তিনিদের অন্যত্র সরিয়ে গাজার দখল নেওয়ার কথা জানিয়েছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

হামাসের সাথে যুদ্ধবিরতি সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ আলোচনার জন্য ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে আমন্ত্রণ জানিয়ে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের গাজা উপত্যকা যুক্তরাষ্ট্রের  'দখলে'  নেওয়ার প্রস্তাব দেন। ওয়াশিংটন থেকে এএফপি এ খবর জানায়। 

গাজার পরিবর্তে,  ট্রাম্প ফিলিস্তিনিদের বসবাসের জন্য ভালো ও সুন্দর ভূমি দেওয়ার পরামর্শ দেন। তিনি যুদ্ধবিধ্বস্ত অঞ্চল থেকে মিসর ও জর্ডানের মতো মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোয় ফিলিস্তিনিদের সরে যাওয়ার অত্যন্ত দৃঢ় আহ্বান জানান। তবে ফিলিস্তিনি এবং উভয় দেশই তার পরামর্শকে স্পষ্টভাবে প্রত্যাখ্যান করেছে।

নেতানিয়াহুর সাথে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্প বলেন, ‘আমেরিকা গাজা উপত্যকা দখল করবে এবং এটি নিয়ে কাজ করবো আমরা। আমরা গাজার মালিক হব।”

‘এমন একটি অর্থনৈতিক উন্নয়ন তৈরি করবো, যা এই অঞ্চলের মানুষের জন্য সীমাহীন  কর্মসংস্থান এবং আবাসন সরবরাহ করবে।’

তবে তিনি  সেখানে ফিলিস্তিনিদের বসবাসকে নিরুৎসাহিত করে বলেন, আমার মনে হয় গাজা তাদের জন্য খুবই দুর্ভাগ্যজনক। গাজা মানুষের বসবাসের জায়গা নয়। তিনি বলেন, আমি বলতে চাইছি যে, তারা সেখানে আছে, কারণ, তাদের কোনো বিকল্প নেই। তাদের কী আছে? এটি এখন ধ্বংসস্তূপের একটি বিশাল স্তূপ।

তিনি বলেন , যারা সেখানে অবস্থান ও বসবাস করছে এবং যারা এটির জন্য লড়াই করেছিল, তারা  সেখানে একটি দুর্বিষহ জীবনযাপন করেছে। তাদের সেখানে পুনর্গঠন এবং দখলদারিত্বের প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যাওয়া উচিত নয়।

মিসর এবং জর্ডান ট্রাম্পের গাজা থেকে ফিলিস্তিনিদের স্থানান্তরের পরামর্শকে স্পষ্টভাবে প্রত্যাখ্যান করেছে।

এদিকে জাতিসংঘে নিযুক্ত ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রদূত বলেছেন বিশ্ব নেতাদের ফিলিস্তিনিদের ইচ্ছাকে ‘সম্মান’ করা উচিত।

গাজাবাসীরাও ট্রাম্পের ধারণার নিন্দা করেছেন। দক্ষিণাঞ্চলীয় রাফা শহরের বাসিন্দা ৩৪ বছর বয়সী হাতেম আজ্জাম বলেন, ‘ট্রাম্প মনে করেন গাজা আবর্জনার স্তূপ, যা একেবারেই নয়।’

১৫ মাসেরও বেশি সময় ধরে লড়াই এবং বোমাবর্ষণের পর ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধবিরতির প্রথম ছয় সপ্তাহের পর্ব নিশ্চিত করার কৃতিত্ব দাবি করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট এবং আশা করা হচ্ছে তিনি নেতানিয়াহুকে আরও স্থায়ী শান্তির লক্ষ্যে পরবর্তী পর্বে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করবেন।

দ্বিতীয় পর্বে এগিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে তিনি কতটা আশাবাদী জানতে চাইলে নেতানিয়াহু আগে বলেছিলেন, ‘আমরা চেষ্টা করব’।
 
ট্রাম্পকে ‘ইসরাইলের সর্বকালের সেরা বন্ধু’ অভিহিত  করে নেতানিয়াহু বলেন, মার্কিন  প্রেসিডেন্টের গাজা পরিকল্পনা ‘ইতিহাস পরিবর্তন করতে পারে’ এবং এটি ‘মনোযোগ দেওয়ার যোগ্য’।

তিনি মূল যুদ্ধবিরতি চুক্তি স্বাক্ষরের ক্ষেত্রে ট্রাম্পের ‘মহান শক্তি ও শক্তিশালী নেতৃত্ব’-এর প্রশংসা করেন এবং সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রতি তীব্র সমালোচনা করেন।

হোয়াইট হাউসের আলোচনার কয়েক ঘন্টা আগে ইসরাইল বলেছে, তারা চুক্তির দ্বিতীয় পর্ব নিয়ে আলোচনা করার জন্য কাতারের মধ্যস্থতাকারী দল পাঠাচ্ছে।

হামাস জানিয়েছে,  মঙ্গলবার দ্বিতীয় পর্বের আলোচনা শুরু হয়েছে, মুখপাত্র আবদেল লতিফ আল-কানু বলেছেন, ‘আশ্রয়, ত্রাণ ও পুনর্গঠনের’ ওপর জোর দেওয়া হয়েছে।

যুদ্ধবিরতির প্রথম পর্যায়ে, হামাস ও  ইসরায়েল জিম্মি বিনিময় শুরু করেছে।

এখন পর্যন্ত ১৮ জন জিম্মিকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে, যার বিনিময়ে ইসরায়েলি কারাগার থেকে প্রায় ৬০০ ফিলিস্তিনি বন্দীকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে।