শিরোনাম
ঢাকা, ৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ (বাসস) : নামিবিয়ার স্বাধীনতার আন্দোলনের প্রভাবশালী নেতা সাম নুজোমার প্রয়াণে শ্রদ্ধা জানিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসা বলেছেন, নুজোমা শুধুমাত্র নামিবিয়ার নয়, বরং দক্ষিণ আফ্রিকার বর্ণবাদবিরোধী সংগ্রামেরও অনুপ্রেরণা ছিলেন।
উইন্ডহোক থেকে এএফপি জানায়, দেশটির প্রেসিডেন্ট কার্যালয় তার মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করে।
স্বাধীনতা আন্দোলনের দল সোয়াপো’র নেতা নুজোমা শনিবার রাতে ৯৫ বছর বয়সে মারা যান। তিন সপ্তাহ ধরে অসুস্থ থাকার পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন বলে জানান নামিবিয়ার প্রেসিডেন্ট নাঙ্গোলো মবুম্বা।
তিনি বলেন, ‘গভীর শোকের সঙ্গে আমাদের প্রিয় স্বাধীনতা সংগ্রামী ও বিপ্লবী নেতার মৃত্যুর সংবাদ জানাচ্ছি। তিনি নামিবিয়ার জনগণের সেবায় তার জীবন উৎসর্গ করেছিলেন।’
নতুন প্রেসিডেন্ট নেটুম্বো নন্দি-নদাইত্বা বলেন, ‘নুজোমার দূরদর্শী নেতৃত্ব ও আত্মত্যাগ আমাদের স্বাধীন ও ঐক্যবদ্ধ জাতির ভিত্তি গড়ে দিয়েছে। তার উত্তরাধিকার আমরা শ্রদ্ধার সঙ্গে ধারণ করব।’
কেনিয়ার প্রেসিডেন্ট উইলিয়াম রুটো তাকে ‘নিস্বার্থ, সাহসী ও দূরদর্শী’ নেতা হিসেবে অভিহিত করেছেন।
স্বাধীনতার সংগ্রাম ও নেতৃত্ব
নামিবিয়া ১৯৯০ সালে স্বাধীনতা লাভ করে এবং প্রথম গণতান্ত্রিক নির্বাচনে নুজোমা প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন।
এক স্মারক বক্তব্যে রামাফোসা বলেন, ‘নুজোমা ছিলেন একজন অসাধারণ মুক্তিযোদ্ধা, যিনি নামিবিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকার স্বাধীনতা সংগ্রামের গুরুত্বপূর্ণ অংশ ছিলেন।’
দারিদ্র্যপীড়িত কৃষক পরিবারে জন্ম নেওয়া নুজোমা দশ ভাইবোনের মধ্যে সবার বড় ছিলেন। তিনি ১৯৪৯ সালে উইন্ডহোকে রেলওয়ে পরিচ্ছন্নতাকর্মী হিসেবে কাজ শুরু করেন এবং রাতের ক্লাসে পড়াশোনা করতেন।
তিনি হেরেরো গোষ্ঠীর নেতা হোসিয়া কুটাকোর সঙ্গে পরিচিত হন, যিনি নামিবিয়ায় বর্ণবাদী শাসনের অবসান ঘটানোর জন্য প্রচেষ্টা চালাচ্ছিলেন। কুটাকোর অনুরোধে ১৯৬০ সালে নুজোমা স্ত্রী ও চার সন্তানকে রেখে নির্বাসনে যান।
সশস্ত্র সংগ্রাম ও স্বাধীনতা
সোয়াপো-এর সভাপতি নির্বাচিত হয়ে নুজোমা বিভিন্ন দেশে সমর্থন চাইতে থাকেন। ১৯৬৬ সালে দক্ষিণ আফ্রিকা জাতিসংঘের নির্দেশ উপেক্ষা করলে সোয়াপো সশস্ত্র সংগ্রাম শুরু করে।
নামিবিয়া আফ্রিকার শেষ স্বাধীন রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে অন্যতম। নুজোমার নেতৃত্বে তিন মেয়াদে দেশ রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন অর্জন করে।
তবে তিনি সোয়াপো’র কিছু সদস্যকে দক্ষিণ আফ্রিকার গুপ্তচর সন্দেহে বন্দি রাখার জন্য সমালোচিত হয়েছিলেন। এছাড়া, তিনি সমকামিতাকে ‘পাগলামি’ বলে মন্তব্য করায় বিতর্কের মুখে পড়েন।
২০০৫ সালে তার মনোনীত উত্তরসূরি হিফিকেপুনিয়ে পোহাম্বা প্রেসিডেন্ট হন, তবে নুজোমাকে তখনও পর্দার আড়ালের ক্ষমতার কেন্দ্রে মনে করা হতো।