বাসস
  ০৭ এপ্রিল ২০২৫, ১৩:৩৬

আজ নেতানিয়াহু ও ট্রাম্পের মধ্যে শুল্ক, ইরান ও গাজা নিয়ে বৈঠক 

ঢাকা, ৭ এপ্রিল, ২০২৫ (বাসস): আজ সোমবার ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এবং মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যে বৈঠকে ইসরাইলের ওপর ওয়াশিংটনের আকস্মিক শুল্ক আরোপ এবং ইরানের সাথে উত্তেজনা বৃদ্ধির বিষয়টি প্রাধান্য পাবে বলে আশা করা হচ্ছে।

জেরুজালেম থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানায়।

বুধবার ‘মুক্তি দিবস’ ঘোষণায় ট্রাম্প একাধিক দেশের ওপর ব্যাপক শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেওয়ার পর নেতানিয়াহুই প্রথম বিদেশী নেতা যিনি মার্কিন রাজধানীতে ট্রাম্পের সাথে দেখা করবেন।

সোমবার (৭ এপ্রিল) প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু রোববার হাঙ্গেরি থেকে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশ্যে রওনা দেন। নেতানিয়াহুর প্রধান লক্ষ্য হবে ট্রাম্পকে শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্তটি প্রত্যাহার করতে রাজি করানো। অথবা কমপক্ষে ইসরাইলি আমদানির ওপর আরোপিত ১৭ শতাংশ শুল্ক কার্যকর হওয়ার আগে কমিয়ে আনা।

বুদাপেস্ট ত্যাগ করার আগে নেতানিয়াহু বলেন, তার আলোচনায় বিভিন্ন বিষয় অন্তর্ভুক্ত থাকবে, যার মধ্যে রয়েছে ‘ইসরাইলের ওপর আরোপিত শুল্ক ব্যবস্থা।

তিনি এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘আমিই প্রথম আন্তর্জাতিক নেতা, প্রথম বিদেশী নেতা যিনি ইসরাইলের অর্থনীতির জন্য এত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়ে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের আলোচনা করবেন’। 

তিনি বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি, এটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইসরাইলের মধ্যে বিশেষ ব্যক্তিগত সম্পর্ক এবং অনন্য বন্ধনকে প্রতিফলিত করে, যা এই সময়ে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’

বিশ্লেষকরা বলছেন, নেতানিয়াহু ইসরাইলের জন্য শুল্ক থেকে অব্যাহতি নিশ্চিত করার চেষ্টা করবেন।

তেল আবিবের বার-ইলান বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনৈতিক গবেষণার প্রধান জোনাথন রিনহোল্ড বলেন, এই সফরের জরুরিতা (প্রস্তাবিত রূপ নেওয়ার আগেই) বন্ধ করে দেওয়ার অর্থই যথেষ্ট’।

তিনি বলেন, এই ধরনের ছাড় কেবল ট্রাম্পের নিকটতম মধ্যপ্রাচ্যের মিত্রকেই উপকৃত করবে না বরং ‘কংগ্রেসের রিপাবলিকানদেরও খুশি করবে। যাদের ভোটাররা ইসরাইলের প্রতি যত্নশীল। তবে এই মুহূর্তে ট্রাম্পের মুখোমুখি হতে ইচ্ছুক নন।’ 

ট্রাম্পের শুল্ক ঘোষণার একদিন আগে থেকেই ইসরাইল নতুন শুল্ক এড়াতে পদক্ষেপ নিয়েছিল এবং এখনও এই শুল্কের দ্বারা প্রভাবিত এক শতাংশ আমেরিকান পণ্যের ওপর থেকে সমস্ত অবশিষ্ট শুল্ক তুলে নিয়েছিল।

কিন্তু ট্রাম্প তার নতুন নীতি নিয়ে এগিয়ে যান এবং বলেন যে ইসরাইলের সাথে যুক্তরাষ্ট্রের উল্লেখযোগ্য বাণিজ্য ঘাটতি রয়েছে। কারণ ইসরাইল মার্কিন সামরিক সহায়তার শীর্ষ সুবিধাভোগী।

হিব্রু বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির অধ্যাপক ইয়ানয় স্পিটজার বলেছেন, ইসরাইলি নেতার মার্কিন সফর ‘নেতানিয়াহুর জন্য খেলাটি খেলার এবং ট্রাম্পকে দেখানোর একটি উপায় যে ইসরাইল তার সাথেই চলছে’।

তিনি বলেন, ‘ইসরাইলের জন্য কিছু ছাড়ের ঘোষণা পেলে আমি অবাক হব না এবং এটি অন্যান্য দেশের জন্য একটি উদাহরণ হবে।’ 

নেতানিয়াহু কার্যালয় জানিয়েছে, গাজা উপত্যকার যুদ্ধ, ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে এখনও বন্দী ইসরাইলি জিম্মি এবং ইরানের ক্রমবর্ধমান হুমকি নিয়েও আলোচনা করবেন নেতানিয়াহু।

গত ১৮ মার্চ থেকে গাজায় আবার বিমান হামলা শুরু করে ইসরাইল। এর ফলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, মিশর এবং কাতারের মধ্যস্থতায় হামাসের সাথে প্রায় দুই মাসের যুদ্ধবিরতির অবসান ঘটে। 

যুদ্ধবিরতি পুনঃস্থাপনের প্রচেষ্টা তখন থেকে ব্যর্থ হয়েছে। হামাস-নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য মতে, ইসরাইলি বিমান ও স্থল অভিযানে ১ হাজার ৩৩০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে।

ফিলিস্তিনিরা এখনও ৫৮ জনকে জিম্মি করে রেখেছে, যার মধ্যে ৩৪ জন ইসরাইলি সেনাবাহিনীর মতে নিহত হয়েছে।