বাসস
  ১৪ এপ্রিল ২০২৫, ১২:০১

চীনা প্রেসিডেন্ট শি’র হুঁশিয়ারি : ‘বাণিজ্যযুদ্ধের কোনো বিজয়ী নেই’

ঢাকা, ১৪ এপ্রিল, ২০২৫ (বাসস) : চীনা প্রেসিডেন্ট শি চিনপিং সোমবার সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, ‘প্রোটেকশনিজম কোনো পথ দেখায় না’ এবং বাণিজ্যযুদ্ধের ‘কোনো বিজয়ী নেই’। রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম জানায়, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া সফর শুরু উপলক্ষে তিনি এ মন্তব্য করেন। সফরের সূচনায় তিনি আজ ভিয়েতনাম সফরে আসছেন।

হানোয় থেকে এএফপি জানায়, চলতি বছরের প্রথম বিদেশ সফরে শি মালয়েশিয়া ও ক্যাম্বোডিয়াও সফর করবেন। চীন এ সফরের মাধ্যমে আঞ্চলিক বাণিজ্যিক সম্পর্ক জোরদার এবং মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আরোপিত বিপুল শুল্কের প্রভাব মোকাবেলার লক্ষ্য নিয়েছে।

চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তিনটি দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় দেশের নেতাদের সঙ্গে শির এই সফর গোটা অঞ্চলের জন্য ‘গুরুত্বপূর্ণ’।

ভিয়েতনামের রাষ্ট্রীয় পত্রিকা ‘ন্যান দান’-এ সোমবার প্রকাশিত এক প্রবন্ধে শি দুই দেশকে বহুপক্ষীয় বাণিজ্যব্যবস্থা, বৈশ্বিক শিল্প ও সরবরাহ শৃঙ্খলের স্থিতিশীলতা এবং উন্মুক্ত ও সহযোগিতাপূর্ণ আন্তর্জাতিক পরিবেশ সুরক্ষায় একযোগে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন।

চীনের বার্তা সংস্থা সিনহুয়া জানায়, প্রবন্ধে শি আবারও চীনের অবস্থান তুলে ধরে বলেন, ‘বাণিজ্যযুদ্ধ ও শুল্কযুদ্ধ কারও জন্যই সুফল বয়ে আনে না, আর প্রোটেকশনিজম অর্থহীন।’

বাঁশের কূটনীতি

২০২৪ সালে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মধ্যে চীনা পণ্যের সবচেয়ে বড় ক্রেতা ছিল ভিয়েতনাম—১৬১.৯ বিলিয়ন ডলার। এরপর ছিল মালয়েশিয়া—১০১.৫ বিলিয়ন ডলার।

প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক দৃঢ় হলে যুক্তরাষ্ট্রের বাজার সংকোচনের নেতিবাচক প্রভাবও চীন কিছুটা মোকাবেলা করতে পারবে বলে মনে করছে বেইজিং।

সোমবার ও মঙ্গলবার শি ভিয়েতনামে অবস্থান করবেন। এটি ডিসেম্বর ২০২৩-এর পর তার প্রথম ভিয়েতনাম সফর।

কমিউনিস্ট শাসিত চীন ও ভিয়েতনাম বর্তমানে ‘সর্বাত্মক কৌশলগত অংশীদারিত্ব’-এর সম্পর্কে আবদ্ধ, যা হানোয়ের সর্বোচ্চ কূটনৈতিক মর্যাদা।

দুই দেশের মধ্যে ঘনিষ্ঠ অর্থনৈতিক সম্পর্ক থাকলেও দক্ষিণ চীন সাগরে বেইজিংয়ের আগ্রাসী ভূমিকা নিয়ে হানোই যুক্তরাষ্ট্রের মতোই উদ্বেগ প্রকাশ করে আসছে।

দক্ষিণ চীন সাগরের প্রায় পুরোটা নিজের এলাকা বলে দাবি করে চীন। তবে এ দাবির বিরোধিতা করে ফিলিপাইন, মালয়েশিয়া, ভিয়েতনাম, ইন্দোনেশিয়া ও ব্রুনেই।

সোমবার প্রকাশিত প্রবন্ধে শি বলেছেন, চীন ও ভিয়েতনাম আলোচনার মাধ্যমে এসব বিরোধ নিরসন করতে সক্ষম।

তিনি লেখেন, ‘আমরা মতপার্থক্যগুলো যথাযথভাবে মোকাবেলা করতে পারি এবং আমাদের অঞ্চলের শান্তি ও স্থিতিশীলতা রক্ষা করতে পারি।’

‘দূরদৃষ্টি ও আন্তরিকতা থাকলে আমরা পরামর্শ ও আলোচনার মাধ্যমে সামুদ্রিক ইস্যুগুলোর সুষ্ঠু সমাধানে সক্ষম’, বলেন শি।

ভিয়েতনাম সফর শেষে শি মঙ্গলবার থেকে বৃহস্পতিবার মালয়েশিয়া সফর করবেন।

মালয়েশিয়ার যোগাযোগমন্ত্রী ফাহমি ফাদজিল জানিয়েছেন, শির সফর মালয়েশিয়ার বাণিজ্যিক সম্পর্ক উন্নয়নের সরকারের প্রচেষ্টার অংশ।

এরপর বৃহস্পতিবার শি যাবেন কম্বোডিয়া, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় চীনের অন্যতম ঘনিষ্ঠ মিত্র—যেখানে সম্প্রতি বেইজিং তার প্রভাব আরও বিস্তৃত করেছে।