বাসস
  ১৪ এপ্রিল ২০২৫, ১২:০৬

দক্ষিণ কোরিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলার শুনানি শুরু

ঢাকা, ১৪ এপ্রিল, ২০২৫ (বাসস) : দক্ষিণ কোরিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওলের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলার শুনানি সোমবার শুরু হয়েছে। মার্শাল ল’ জারির স্বল্পস্থায়ী ঘোষণা নিয়ে তার বিরুদ্ধে উত্থাপিত বিদ্রোহের অভিযোগে আত্মপক্ষ সমর্থনে আদালতে হাজির হন তিনি।

সিউল থেকে এএফপি জানায়, চলতি মাসের শুরুতে সংসদের মাধ্যমে অভিশংসিত ও সাময়িক বরখাস্ত হওয়ার পর ইউনকে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রেসিডেন্ট পদ থেকে অপসারণ করা হয়। ৩ ডিসেম্বরের ঘটনায় তিনি বেসামরিক শাসনকে খর্বের চেষ্টা করেন এবং সংসদ ভবনে সশস্ত্র সেনা মোতায়েন করেন।

এই মামলার প্রেক্ষিতে জানুয়ারিতে ইউনকে গ্রেপ্তার করা হয়, যা তাকে দক্ষিণ কোরিয়ার ইতিহাসে প্রথম কোনো ক্ষমতাসীন রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে গ্রেপ্তার হওয়ার নজিরে পরিণত করে। যদিও পরবর্তীতে প্রক্রিয়াগত কারণে তিনি মুক্তি পান।

সোমবার সকালে ইউন সিউলের সেন্ট্রাল ডিস্ট্রিক্ট কোর্টে হাজির হন। আদালতে বিচারকরা তার নাম, জন্মতারিখসহ ব্যক্তিগত তথ্য জানাতে বলেন—পুল রিপোর্টে এমনটা জানানো হয়েছে।

বিচারক তাকে ‘সাবেক প্রেসিডেন্ট’ হিসেবে সম্বোধন করে বলেন, ‘আসামি ইউন সুক ইওল, আপনার পেশা হলো সাবেক প্রেসিডেন্ট—আপনার বর্তমান ঠিকানা কী?’

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের ডাকা দুই সামরিক কর্মকর্তার সাক্ষ্য গ্রহণ করা হবে, যাদের একজন দাবি করেছেন—উচ্চ পর্যায়ের সামরিক নেতারা তাকে ‘সংসদ সদস্যদের টেনে বের করে দিয়ে মার্শাল ল’ কার্যকর করতে নির্দেশ দিয়েছিলেন'।

তবে আইনপ্রণেতারা সশস্ত্র সৈন্যদের অমান্য করে বেড়া ডিঙিয়ে সংসদে প্রবেশ করেন এবং ইউনের মার্শাল ল’ ঘোষণার বিরুদ্ধে ভোট দিয়ে তা বাতিল করেন। ফলে ইউনকে কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করতে হয়।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মামলাটি দীর্ঘায়িত হতে পারে।

আইনজীবী মিন কিয়ং-সিক এএফপিকে বলেন, ‘প্রাথমিক রায় আগস্টের দিকে আসতে পারে। তবে মামলার নথি ৭০ হাজার পৃষ্ঠার বেশি এবং সাক্ষীও অনেক। আদালত প্রয়োজন মনে করলে বিচার প্রক্রিয়া দীর্ঘ করতে পারে।’

উল্লেখ্য, সাবেক প্রেসিডেন্ট পার্ক গিউন হে-কে ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে অভিশংসনের পর তার বিরুদ্ধে প্রভাব খাটানো ও দুর্নীতির মামলায় চূড়ান্ত রায় আসে ২০২১ সালের জানুয়ারিতে।

ইউন দোষী সাব্যস্ত হলে তিনি দক্ষিণ কোরিয়ার ইতিহাসে ১৯৭৯ সালের এক অভ্যুত্থানের সঙ্গে জড়িত দুই সামরিক নেতার পর তৃতীয় প্রেসিডেন্ট হবেন যিনি বিদ্রোহের অভিযোগে সাজাপ্রাপ্ত হবেন।

আইনজীবী মিন বলেন, ‘পূর্ববর্তী অভ্যুত্থানের নজির এই মামলায় প্রযোজ্য হতে পারে, কারণ এটি সেনাবাহিনী ব্যবহারের মাধ্যমে জোরপূর্বক ক্ষমতা নেওয়ার সঙ্গে সম্পর্কিত।’

বিদ্রোহের অভিযোগে ইউনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড কিংবা সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড হতে পারে। তবে ১৯৯৭ সাল থেকে দক্ষিণ কোরিয়ায় কার্যত মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হচ্ছে না।