শিরোনাম
ঢাকা, ১৪ এপ্রিল, ২০২৫ (বাসস) : সাহিত্যে নোবেল বিজয়ী মারিও ভার্গাস য়োসা ৮৯ বছর বয়সে রোববার পেরুর রাজধানীতে মারা গেছেন। তার পরিবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্স-এ এক বার্তায় এ তথ্য জানিয়েছে।
লিমা থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানায়।
ভার্গাস য়োসার মৃত্যুতে ল্যাটিন আমেরিকার সাহিত্যের সোনালী প্রজন্মের যুগের সমাপ্তি ঘটল। তিনি ছিলেন এই যুগের সর্বশেষ জীবিত সদস্য।
তার জ্যেষ্ঠ পুত্র আলভারো এক বিবৃতিতে লিখেছেন, ‘আমরা গভীর দুঃখের সাথে জানাচ্ছি যে, আমাদের বাবা মারিও ভার্গাস য়োসা আজ লিমায় পরিবার-পরিজন পরিবেষ্টিত অবস্থায় শান্তিপূর্ণভাবে মৃত্যুবরণ করেছেন। তার ছোট ভাই গঞ্জালো এবং বোন মরগানা ভার্গাস য়োসাও এতে স্বাক্ষর করেন।
তিনি জনসাধারণের দৃষ্টির বাইরে থাকালে সাম্প্রতিক মাসগুলোতে য়োসার স্বাস্থ্যের অবনতির গুজব ছড়িয়ে পড়েছিল।
অক্টোবরে, তার ছেলে আলভারো বলেছিলেন যে তার বয়স ‘৯০ বছর পূর্ণ হওয়ার পথে।
মধ্যবিত্ত পেরুভিয়ান পরিবারে জন্মগ্রহণকারী ভার্গাস য়োসা ছিলেন ১৯৬০ এবং ১৯৭০ এর দশকের ল্যাটিন আমেরিকান সাহিত্যের উত্থানের অন্যতম মহান ব্যক্তিত্ব।
পরিবারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, লেখকের মৃত্যুতে তার আত্মীয়স্বজন, তার বন্ধুবান্ধব এবং বিশ্বজুড়ে তার পাঠকদের ব্যথিত করবে। তবে, আমরা আশা করি, তারা আমাদের মতো সান্ত্বনা পাবেন যে তিনি দীর্ঘ, দুঃসাহসিক এবং ফলপ্রসূ জীবন উপভোগ করেছেন। তিনি এমন একটি কাজ রেখে গেছেন যা তাকে আমাদের মাঝে বাঁচিয়ে রাখবে।
ভার্গাস য়োসার নিজের নির্দেশনা অনুসারে কোনও ধরণের গণ অনুষ্ঠান হবে না বলে তার পরিবার জানিয়েছে।
পরিবারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তার অন্তিম ইচ্ছা অনুযায়ী ভার্গাস য়োসার মরদেহ দাহ করা হবে।
পেরুর প্রেসিডেন্ট দিনা বলুয়ার্তে এক্স-এ এক বার্তায় লিখেছেন, লেখকের ‘বুদ্ধিবৃত্তিক প্রতিভা এবং বিশাল কর্মকাণ্ড ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি স্থায়ী উত্তরাধিকার হয়ে থাকবে’।
‘আমরা তার পরিবার, তার বন্ধুবান্ধব এবং সমগ্র বিশ্বের প্রতি আন্তরিক সমবেদনা জানাই। চিরকাল খ্যাতিমান পেরুভিয়ান, শান্তিতে থাকুন।’
মারিও ভার্গাস য়োসা গত বছর লিমায় চলে আসেন এবং গত ২৮ মার্চ তার ৮৯তম জন্মদিন উদযাপন করেন।
‘লা সিউদাদ ই লস পেরোস’ (‘দ্য সিটি অ্যান্ড দ্য ডগস’, ১৯৬৩) এবং ‘কনভার্সেশন এন লা ক্যাথেড্রাল’ (‘ক্যাথেড্রালে কথোপকথন’, ১৯৬৯) এর মতো রচনায় সামাজিক বাস্তবতার নিবিড় বর্ণনার জন্য ভার্গাস য়োসা প্রশংসিত হয়েছিলেন।
ভার্গাস য়োসার রচনাগুলো প্রায় ৩০টি ভাষায় অনূদিত হয়েছিল। একজন ফ্রাঙ্কোফিলিক হিসেবে তিনি বেশ কয়েক বছর প্যারিসে বসবাস করেছিলেন এবং ২০১৬ সালে তিনিই তাঁর জীবদ্দশায় মর্যাদাপূর্ণ প্লিয়েড সাহিত্য সংগ্রহে প্রথম বিদেশী লেখক হিসেবে যোগদান করেন।
২০২১ সালে ফ্রান্সের বিশিষ্ট বুদ্ধিজীবীদের একাডেমিতে তাকে মনোনীত করা হয়।