শিরোনাম
ঢাকা, ১৬ এপ্রিল, ২০২৫ (বাসস) : গত সপ্তাহে ডোমিনিকান নাইটক্লাবের ছাদ ধসে পড়ায় কনসার্টে উপস্থিত দর্শকদের ২৩১ জন নিহত হয়। নিহতদের মধ্যে একজনের পরিবার ওই নাইটক্লাবের মালিকদের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ দাখিল করেছেন।
ডোমিনিকান প্রজাতন্ত্রের রাজধানী সান্টো ডোমিঙ্গো থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানায়।
ভুক্তভোগী ভার্জিলিও ক্রুজের বিধবা স্ত্রী এবং বাবা-মা প্রসিকিউটরদের কাছে নাইটক্লাবের মালিকদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন। তারা দাবি করেছেন যে, জেট সেট নাইটক্লাবের মালিকরা ‘নিরাপত্তা নকশা’ এবং ভবনটিতে করা পরিবর্তনগুলোতে অবহেলা করেছেন, যা এখন ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।
ওই পরিবারটি যুক্তি দিয়ে বলেছে, ‘অনিচ্ছাকৃত হত্যাকাণ্ডের জন্য ক্লাব মালিকদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনার জন্য পর্যাপ্ত প্রমাণ’ তাদের রয়েছে এবং তারা বলেছে যে তারা ডোমিনিকান প্রজাতন্ত্রের সরকারের বিরুদ্ধে একটি নাগরিক দায়বদ্ধতার দাবিও করা হবে।
অভিযোগে বলা হয়েছে, এই মর্মান্তিক ঘটনাটি কেবল জেট সেট নাইটক্লাবের মালিক এবং পরিচালকদের জন্যই নয় বরং ডোমিনিকান রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান এবং পৌরসভাও এ জন্য দায়ী।
‘তারা জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত প্রতিষ্ঠানের তত্ত্বাবধান, পরিদর্শন এবং কার্যক্রম অনুমোদনের আইনি দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়েছে।
রাজধানী সান্তো ডোমিঙ্গোর অর্ধ শতাব্দী প্রাচীন মূল ভিত্তি, ক্লাবটির ছাদ গত সপ্তাহে মঙ্গলবার ভোরে মেরেঙ্গু তারকা রুবি পেরেজের একটি কনসার্টে উপস্থিত শত শত লোকের ওপর ধসে পড়ে। মর্মান্তিক এ দুর্ঘটনায় মেরেঙ্গু তারকা রুবি পেরেজ ও নিহত হন। যা কয়েক দশকের মধ্যে ক্যারিবীয় জাতির সবচেয়ে খারাপ দুর্ঘটনা এটি।
সোমবার পর্যন্ত, কর্তৃপক্ষ মৃতের সংখ্যা ২৩১ এবং আরো শতাধিক আহত হয়েছে বলে জানিয়েছেন।
নাইটক্লাব জেট সেটের মালিক আন্তোনিও এসপাইলাট মঙ্গলবার প্রসিকিউটরদের বলেছেন যে তিনি কর্তৃপক্ষের নিয়ন্ত্রণে আছেন এবং তদন্তে সহায়তা করবেন।
আইনি অভিযোগে বলা হয়েছে ভবনটি ৫২ বছরের পুরোনো, সাম্প্রতিক অগ্নিকাণ্ড, অপর্যাপ্ত মেরামত এবং এয়ার কন্ডিশনারের মতো ভারী যন্ত্রপাতি ছাদে ‘অযথা বোঝা’ চাপানোর কারণে দুর্বল হয়ে পড়েছিল বলে প্রমাণ দেওয়া হয়েছে।
নথিতে বলা হয়েছে, বর্ণিত তথ্যগুলো কাঠামোগত অবহেলা এবং নিরাপত্তা ত্রুটির সাক্ষ্য দেয়, যা কেবল নাইটক্লাবের পরিচালকদের এবং শেয়ারহোল্ডারদের জন্যই নয়, বরং সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্যও দায়ী।
এই প্রতিষ্ঠানগুলো পরিদর্শন, তত্ত্বাবধান এবং নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়েছে। তাদের আইনি কার্যাবলী লঙ্ঘন করেছে এবং একটি বিপজ্জনক পরিবেশ তৈরি করেছে যার ফলে এই এড়ানো সম্ভব ট্র্যাজেডির সৃষ্টি হয়েছে।
স্নিফার কুকুরের সহায়তায় ৩শ’ জনেরও বেশি উদ্ধারকারী জীবিতদের খুঁজে বের করার জন্য কয়েকদিন ধরে অক্লান্ত পরিশ্রম করে ১৮৯ জনকে জীবিত উদ্ধার করেছেন।
ডোমিনিকান সরকার এই দুর্যোগ তদন্তের জন্য জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের একটি কমিশন গঠন করেছেন।