বাসস
  ২০ এপ্রিল ২০২৫, ১১:৪০

ইস্টারের প্রার্থনায় অংশ নিতে পারেন পোপ

ঢাকা, ২০ এপ্রিল, ২০২৫ (বাসস): কয়েক সপ্তাহ আগেই নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণ থেকে ফিরে আসা পোপ ফ্রান্সিসকে এবার ইস্টার সানডের প্রার্থনায় উপস্থিত থাকতে দেখা যেতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে। বিশ্বজুড়ে খ্রিস্টানদের জন্য যেটি এক বড় সুখবর হবে।

ভ্যাটিকান সিটি থেকে এএফপি জানায়, ৮৮ বছর বয়সী এই ধর্মগুরু গত ২৩ মার্চ হাসপাতাল থেকে ছাড়া পান। প্রায় ৩৮ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর এখনও পুরোপুরি সেরে না উঠলেও ধীরে ধীরে সুস্থ হচ্ছেন তিনি।

রোববার স্থানীয় সময় দুপুর ১২টায় (গ্রিনিচ মান সময় সকাল ১০টা) সেন্ট পিটার্স স্কয়ারের বারান্দা থেকে পোপ ‘আর্বি এট অর্বি’ আশীর্বাদ প্রদান করবেন বলে আশা করা হচ্ছে। এটি খ্রিস্টানদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় অনুষ্ঠানের অংশ।

ভ্যাটিকানের প্রেস দপ্তর জানিয়েছে, পোপ ইস্টারের প্রার্থনায় অংশ নিতে পারেন, তবে তার স্বাস্থ্য পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করে তা নিশ্চিত হবে।

তার শ্বাসপ্রশ্বাসের অবস্থা উন্নত হলেও কণ্ঠস্বর এখনও দুর্বল। গত সপ্তাহে তিনি দুবার প্রকাশ্যে আসলেও অক্সিজেন দেওয়ার নাকের ক্যানুলা ছাড়াই ছিলেন।

প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী, ইস্টারের বার্তায় বিশ্বব্যাপী সংঘাত ও সংকট নিয়ে কথা বলেন পোপ। এবার সেটি অন্য কারো মাধ্যমে পড়া হতে পারে।

২০১৩ সালে দায়িত্ব নেওয়ার পর এটাই প্রথমবার পোপ ফ্রান্সিস হোলি উইকের বেশিরভাগ অনুষ্ঠান মিস করেছেন। শুক্রবারের ‘স্টেশনস অব দ্য ক্রস’ এবং শনিবারের ‘ইস্টার ভিজিল’ অনুষ্ঠান তিনি কার্ডিনালদের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করেছেন।

তবে শনিবার সেন্ট পিটার্সে এসে তিনি উপস্থিত দর্শকদের সংক্ষিপ্তভাবে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।

রোববারের ইস্টার প্রার্থনায় প্রায় ৩০০ জন কার্ডিনাল, বিশপ ও যাজক অংশ নেবেন। হাজার হাজার ফুলে সজ্জিত সেন্ট পিটার্স স্কয়ারে এ আয়োজনে আরও বেশি ভিড় হওয়ার কথা, কারণ এবার ‘জুবিলি’ বছর—যা প্রতি ২৫ বছরে একবার পালিত হয় এবং হাজার হাজার তীর্থযাত্রীর আগমন ঘটে।

খ্রিস্টান ঐক্যের বিরল সুযোগ

এবারের ইস্টার আরও গুরুত্বপূর্ণ কারণ এটি একই সপ্তাহান্তে পালিত হচ্ছে ক্যাথলিক, প্রোটেস্ট্যান্ট ও অর্থোডক্স খ্রিস্টানদের মধ্যে—যা বিরল ঘটনা।

এছাড়া, এই সময়ে রোমে অবস্থান করছেন যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স। শনিবার তিনি ভ্যাটিকানের পররাষ্ট্র সচিব কার্ডিনাল পিয়েত্রো প্যারোলিন ও রাজ্য সম্পর্ক বিষয়ক সচিব পল রিচার্ড গ্যালাগারের সঙ্গে বৈঠক করেছেন।

পোপ ফ্রান্সিস ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসনের মধ্যে অভিবাসনবিরোধী নীতিনিয়ে সাম্প্রতিক বিরোধের প্রেক্ষাপটে এই সাক্ষাৎ গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে।

পোপ ও ভাইস প্রেসিডেন্টের মধ্যে সরাসরি কোনো বৈঠকের কথা এখনো জানানো হয়নি। তবে রবিবারের ইস্টার প্রার্থনা একটি সম্ভাব্য সুযোগ হয়ে উঠতে পারে।

শনিবার রাতের ইস্টার ভিজিলে পোপের পরিবর্তে প্রার্থনায় নেতৃত্ব দেন ইতালির কার্ডিনাল জিওভান্নি বাতিস্তা রে।

পোপকে এই সময়টায় বিশ্রামের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে এবং প্রকাশ্যে উপস্থিতি সীমিত রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। পুরো হোলি উইকজুড়ে তার একমাত্র অফিসিয়াল কর্মসূচি ছিল রোমের একটি কারাগার পরিদর্শন।

সেখানেও তিনি খ্রিস্টের শিষ্যদের পা ধোয়ার প্রতীকী আনুষ্ঠানিকতা—‘ফুট ওয়াশিং’—অনুপস্থিত ছিলেন।

পরিদর্শন শেষে কারাগার থেকে বের হওয়ার সময় এক সাংবাদিকের প্রশ্নে পোপ হেসে হালকা কণ্ঠে বলেন, ‘এই ইস্টার আমি যতটা পারি, ভালোভাবেই কাটাচ্ছি।’

সম্প্রতি অসুস্থতার সময় তিনি দুবার মৃত্যুর কাছাকাছি চলে গিয়েছিলেন বলে জানিয়েছে ভ্যাটিকান।