শিরোনাম
ঢাকা, ২০ এপ্রিল, ২০২৫ (বাসস): ৭০তম জন্মদিন সাধারণত কেক, উপহার আর পরিবারের ছোটখাটো আয়োজনেই উদযাপনের কল্পনা করেন অনেকে। কিন্তু নাসার সবচেয়ে প্রবীণ সক্রিয় নভোচারী ডন পেটিট তার সপ্তদশ জন্মদিন পালন করলেন পৃথিবীমুখী মহাকাশযানে চড়ে, সাত মাসব্যাপী আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন (আইএসএস)-এ তার মিশন শেষ করার মধ্য দিয়ে।
ওয়াশিংটন থেকে এএফপি জানায়, রোববার, তার জন্মদিনেই এক সয়ুজ ক্যাপসুলে করে মার্কিন নাগরিক পেটিট ও দুই রুশ মহাকাশচারী কাজাখস্তানে অবতরণ করেন।
রাশিয়ার মহাকাশ সংস্থা রসকসমস জানায়, 'আজ মস্কো সময় ০৪২০ (গ্রিনিচ মান সময় ০১২০)-এ সয়ুজ এমএস-২৬ মহাকাশযানটি আলেক্সেই ওভচিনিন, ইভান ভাগনার এবং ডোনাল্ড (ডন) পেটিটকে নিয়ে কাজাখ শহর জেজকাজগানের কাছে অবতরণ করেছে।'
পেটিট ও তার সহকর্মীরা ওভচিনিন ও ভাগনার মহাকাশে ২২০ দিন কাটিয়েছেন। তারা পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করেছেন ৩,৫২০ বার এবং এই সময়ে প্রায় ৯ কোটি ৩৩ লাখ মাইল পথ অতিক্রম করেছেন।
ডন পেটিটের জন্য এটি ছিল চতুর্থ মহাকাশযাত্রা। ২৯ বছরের ক্যারিয়ারে তিনি কক্ষপথে কাটিয়েছেন ১৮ মাসেরও বেশি সময়।
তিনজনই আইএসএস থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে তিন ঘণ্টার কিছু বেশি সময়ের মধ্যে কাজাখস্তানের দক্ষিণ-পূর্বের এক দুর্গম অঞ্চলে অবতরণ করেন।
নাসা অবতরণের যে ছবি প্রকাশ করেছে, তাতে দেখা যায়, সূর্যোদয়ের পটভূমিতে ছোট ক্যাপসুলটি প্যারাশুটে করে পৃথিবীতে নামছে।
মহাকাশচারীদের উদ্ধারকারীরা যখন তাঁদের মহাকাশযান থেকে বের করে এনে একটি ফোলানো মেডিকেল টেন্টে নিয়ে যাচ্ছিলেন, তখন তাঁরা ‘থাম্বস আপ’ ইশারায় সুস্থতার জানান দেন।
পেটিটকে দেখতে কিছুটা ক্লান্ত মনে হলেও নাসা জানিয়েছে, 'তিনি ভালো আছেন এবং পৃথিবীতে প্রত্যাবর্তনের পর যা প্রত্যাশিত, তার মধ্যেই রয়েছে তার অবস্থা।'
পরে তাকে প্রথমে কাজাখ শহর কারাগান্দায় নিয়ে যাওয়া হবে এবং সেখান থেকে নাসার একটি বিমানে করে টেক্সাসে সংস্থাটির জনসন স্পেস সেন্টারে পাঠানো হবে।
নাসা জানায়, মহাকাশে থাকা অবস্থায় তারা পানি বিশুদ্ধকরণ প্রযুক্তি, বিভিন্ন পরিবেশে উদ্ভিদের বৃদ্ধি এবং ক্ষুদ্র মাধ্যাকর্ষণে আগুনের আচরণ ইত্যাদি নিয়ে গবেষণা করেছেন।
এই সাত মাসের মিশনটি তুলনামূলকভাবে কিছুটা ছোট ছিল, কারণ নাসার মহাকাশচারী বাচ উইলমোর ও সুনি উইলিয়ামসকে তাঁদের পরীক্ষাধীন মহাকাশযানে ত্রুটির কারণে প্রায় নয় মাস ধরে কক্ষপথেই আটকে থাকতে হয়।
ইউক্রেন যুদ্ধ ঘিরে মস্কো ও ওয়াশিংটনের মধ্যে সম্পর্ক প্রায় পুরোপুরি ভেঙে পড়লেও মহাকাশ এখনও দুদেশের সহযোগিতার একটি শেষ ক্ষেত্র হয়ে আছে।