বাসস
  ২৬ এপ্রিল ২০২৫, ১৮:৪৫

উগান্ডায় ইবোলা মহামারির অবসান ঘোষণা

ঢাকা, ২৬ এপ্রিল ২০২৫ (বাসস): উগান্ডা সরকার শনিবার দেশটিতে চলমান ইবোলা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের সমাপ্তি ঘোষণা করেছে। চলতি বছরের জানুয়ারির শেষদিক থেকে শুরু হওয়া এই মহামারিতে অন্তত দুইজনের মৃত্যু হয়েছিল।

নাইরোবি থেকে এএফপি জানায়, শেষ নিশ্চিত রোগীকে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দেওয়ার ৪২ দিন পর আজ এ ঘোষণা আসে।

ইবোলার ছয়টি ভিন্ন ভিন্ন ধরন রয়েছে, যার মধ্যে তিনটি বড় আকারের মহামারি ঘটিয়েছে। এবারেরটি ছিল উগান্ডায় ইবোলা সংক্রমণের ষষ্ঠ ঘটনা।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, 'এই প্রাদুর্ভাবে মোট ১৪টি সংক্রমণ ঘটেছে, যার মধ্যে ১২টি পরীক্ষায় নিশ্চিত এবং ২টি পরীক্ষাহীন সম্ভাব্য সংক্রমণ। মোট চারজনের মৃত্যু হয়েছে, এর মধ্যে দুইজনের সংক্রমণ পরীক্ষায় নিশ্চিত হয়েছিল। বাকি দশজন রোগী সুস্থ হয়ে উঠেছেন।’

এবারের সংক্রমণ ‘ইবোলা-সুদান’ ধরন থেকে ঘটেছিল, যা একটি চার বছর বয়সী শিশু ও এক নার্সের মৃত্যুর কারণ হয়। আফ্রিকান ইউনিয়নের স্বাস্থ্য সংস্থা আফ্রিকা সিডিসি জানিয়েছে, আক্রান্তদের সংস্পর্শে আসা বেশ কয়েকজনকেও পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছিল।

উগান্ডার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ জানায়, ‘বর্তমানে ইবোলা-সুদান ভাইরাস রোগের (এসভিডি) প্রাদুর্ভাব আনুষ্ঠানিকভাবে শেষ হয়েছে। শেষ নিশ্চিত রোগীকে গত ১৪ মার্চ ২০২৫ তারিখে ছাড়পত্র দেওয়া হয়। এরপর থেকে নতুন কোনো সংক্রমণ পাওয়া যায়নি।’

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা প্রধান তেদ্রোস আধানম গেব্রিয়াসুস উগান্ডার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ‘নেতৃত্ব ও প্রতিশ্রুতি’কে সাধুবাদ জানিয়েছেন। তিনি এক্স-এ লেখেন, ‘ইবোলা প্রাদুর্ভাবের অবসান ঘটানোর জন্য উগান্ডা সরকার ও স্বাস্থ্যকর্মীদের অভিনন্দন।’

উল্লেখ্য, ইবোলা-সুদান ধরনের জন্য এখনো কোনো অনুমোদিত টিকা নেই। তবে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে উগান্ডায় একটি টিকা পরীক্ষামূলকভাবে চালু করা হয়েছিল, যা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ‘মহামারির মধ্যে দ্রুততম টিকা কার্যক্রমের সূচনা’ বলে প্রশংসা করেছে।

তবে এ ধরনের স্বাস্থ্য উদ্যোগের জন্য আন্তর্জাতিক অর্থায়ন পাওয়া ক্রমেই কঠিন হয়ে উঠছে। মার্চের শুরুতে জাতিসংঘ ১ কোটি ১২ লাখ ডলার (প্রায় ১১৩ কোটি টাকা) সহায়তার আহ্বান জানায়, যুক্তরাষ্ট্র তাদের বেশিরভাগ মানবিক সহায়তা বন্ধের ঘোষণা দেওয়ার পর।

ইবোলা ভাইরাস সংক্রমিত ব্যক্তির শরীরের তরল পদার্থের মাধ্যমে ছড়ায়। উপসর্গ — যেমন জ্বর, বমি, রক্তক্ষরণ ও ডায়রিয়া — দেখা না দেওয়া পর্যন্ত সংক্রমিত ব্যক্তি সাধারণত অন্যকে সংক্রমিত করেন না। এসব উপসর্গ ২ থেকে ২১ দিনের অন্তঃসরণকাল শেষে প্রকাশ পায়।

গত অর্ধশতকে আফ্রিকাজুড়ে ইবোলার ছয়টি ধরনে ১৫ হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে।