বাসস
  ২৯ এপ্রিল ২০২৫, ১০:৪২

ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে ফের গোলাগুলি

ঢাকা, ২৯ এপ্রিল, ২০২৫ (বাসস) : জম্মু ও কাশ্মীর সীমান্তের নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর ভারত ও পাকিস্তানের সেনাদের মধ্যে ফের গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। সোমবার  রাতে এই গোলাগুলির ঘটনা ঘটে।

এই নিয়ে টানা পাঁচরাত ধরে কাশ্মীর সীমান্তে ভারত-পাকিস্তানের সেনাদের মধ্যে গোলাগুলির ঘটনা ঘটল।

মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।

তবে গোলাগুলির ঘটনায় হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি।

এনডিটিভির প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, জম্মু ও কাশ্মীরে নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর পাকিস্তানি সেনারা টানা পঞ্চম রাতেও যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করেছে। প্রতিক্রিয়ায় ভারতীয় সেনাবাহিনী ‘পরিমিত এবং কার্যকর’ জবাব দিয়েছে।

এই গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে কুপওয়ারা এবং বারামুল্লা জেলার বিপরীত দিকের এলাকা এবং আখনুর সেক্টরের কাছে।

গত সপ্তাহে জম্মু ও কাশ্মীরের পেহেলগামে বন্দুকধারীদের হামলার পর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। এর মধ্যে পঞ্চম রাতের মতো গোলাগুলির ঘটনা ঘটল।

ভারতীয় সেনাবাহিনী এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ‘২৮-২৯ এপ্রিল রাতে, পাকিস্তান সেনাবাহিনী কুপওয়ারা এবং বারামুল্লা জেলার বিপরীতে নিয়ন্ত্রণ রেখা পেরিয়ে, আখনুর সেক্টরে বিনা উসকানিতে ছোট অস্ত্রের গুলিবর্ষণ করে। ভারতীয় সেনাবাহিনী এই উসকানির পরিমিত এবং কার্যকরভাবে জবাব দিয়েছে।

প্রতিবেদনে আরও দাবি করা হয়, বৃহস্পতিবার রাত থেকে পাকিস্তানি সেনারা নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর বিভিন্ন ভারতীয় অবস্থান লক্ষ্য করে গুলি চালাচ্ছে।

তবে এই বিষয়ে পাকিস্তানি গণমাধ্যমে এখনও কোনো তথ্য জানানো হয়নি।

মঙ্গলবার পেহেলগাম হামলার সাথে সীমান্ত সংযোগের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ভারত গত বুধবার পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের ঘোষণা দেয়। এর জবাবে পাকিস্তানও বেশ কয়েকটি পাল্টা পদক্ষেপ ঘোষণা করে।

মঙ্গলবার পেহেলগামের বৈসারণ উপত্যকায় বন্দুকধারীদের হামলায়  এক নেপালি নাগরিকসহ ২৬ জন পর্যটক নিহত হন। 

এদিকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, হামলার পরিকল্পনাকারীরা কাশ্মীরকে ধ্বংস করতে চায়।

পেহেলগামে সন্ত্রাসীদের কাপুরুষতা প্রকাশ পেয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তিনি বলেছেন, হামলাকারীরা কাশ্মীরের ধ্বংস চায়।

প্রধানমন্ত্রী তার মাসিক ‘মন কি বাত’ রেডিও অনুষ্ঠানে রোববার দেশবাসীর উদ্দেশে বলেন, ‘পেহেলগাম হামলা এর পরিকল্পনাকারীদের হতাশা এবং কাপুরুষতা প্রকাশ করে। কারণ, কাশ্মীরে শান্তি ফিরে আসছিল। স্কুল ও কলেজগুলোতে প্রাণ ফিরছিল। উন্নয়নমূলক কাজের গতি বাড়ছিল।

গণতন্ত্র শক্তিশালী হয়ে উঠছিল। এছাড়া পর্যটকদের সংখ্যা রেকর্ড বৃদ্ধি পেয়েছিল। আয় বৃদ্ধি পাচ্ছিল এবং তরুণদের জন্য নতুন সুযোগ তৈরি হচ্ছিল। দেশের শত্রুরা, এটি পছন্দ করেনি।’

তিনি বলেন, প্রতিটি ভারতীয়’র রক্ত টগবগ করছে। জম্মু ও কাশ্মীরের পেহেলগামে বন্দুকধারীর হামলায় যারা আপনজনকে হারিয়েছেন, প্রতিটি ভারতীয় তাদের ব্যথা অনুভব করতে পারছেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, মঙ্গলবার ২২ এপ্রিলের হামলা প্রতিটি ভারতীয়কে ব্যথা দিয়েছে। সে যে রাজ্যেরই হোক বা যে ভাষাতেই কথা বলুক না কেন। আমি মনে করি হামলার ছবি দেখে প্রতিটি ভারতীয়ের রক্ত উত্তপ্ত হয়ে উঠছে।’

মোদি আরও বলেন, ‘গোটা বিশ্ব ভারতের সাথে আছে। আমি শোকাহত পরিবারগুলোকে আশ্বস্ত করছি, তারা ন্যায়বিচার পাবেন। এই হামলার পেছনে যারা রয়েছে তারা কঠোরতম শাস্তি পাবে।

গত ২২ এপ্রিল জম্মু ও কাশ্মীরের পেহেলগামের বৈসরান তৃণভূমিতে বন্দুকধারীরা ভয়াবহ হামলা চালায়। এতে ২৫ জন পর্যটক এবং একজন কাশ্মীরি মারা যান। এটি ছিল কাশ্মীর উপত্যকার সবচেয়ে ভয়াবহ হামলা।