শিরোনাম
ঢাকা, ৩০ এপ্রিল, ২০২৫ (বাসস) : কানাডার নবনির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নি মঙ্গলবার তার বিজয় ভাষণে বলেছেন, দেশের সামনে ‘কঠিন' সব চ্যালেঞ্জ রয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের হুমকি থেকে শুরু করে যুক্তরাষ্ট্রনির্ভর অর্থনীতিকে নতুন দিকে মোড় নেওয়ার প্রয়াস।
অটোয়া থেকে এএফপি জানায়, অটোয়ায় উচ্ছ্বসিত জনতার উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে কার্নি বলেন, 'এটি সাহসী হওয়ার সময়। সামনে যেসব চ্যালেঞ্জ, তা সত্যিই ভয়াবহ। তবে আমি আত্মবিশ্বাসী—আপনাদের ওপর, কানাডার ওপর।'
ট্রাম্পের হুমকি ও অর্থনৈতিক নির্ভরতা
কার্নিকে এখনই মোকাবিলা করতে হচ্ছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ঘোষণা—যেখানে তিনি নির্বাচন দিনেই আবার বলেছিলেন, কানাডাকে যুক্তরাষ্ট্রের ৫১তম অঙ্গরাজ্যে পরিণত করা উচিত।
অপরদিকে, কানাডার ৭৫ শতাংশ রপ্তানি যুক্তরাষ্ট্রে হলেও সেই অংশীদার এখন আর নির্ভরযোগ্য নয় বলে সতর্ক করছেন পর্যবেক্ষকেরা। ট্রাম্প প্রশাসনের নতুন শুল্কনীতি বিশেষত গাড়ি ও ইস্পাত খাতে ক্ষতি করছে কানাডার অর্থনীতিকে।
‘সহজ সমাধান নেই’
নির্বাচনী প্রচারে কার্নি বলেছিলেন, 'যেহেতু ট্রাম্প আমেরিকান অর্থনীতিকে মৌলিকভাবে পুনর্গঠনের চেষ্টা করছেন, আমরাও আমাদের অর্থনীতিকে নতুনভাবে গড়ার পথে হাঁটবো।'
তিনি অভ্যন্তরীণ বাজারে প্রাদেশিক বাধা দূর করা ও ইউরোপের সঙ্গে বাণিজ্য জোরদারের ওপর জোর দিয়েছেন—এজন্য প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর প্রথম বিদেশ সফরেই গিয়েছিলেন ইউরোপে।
তবে সাবেক উপবাণিজ্য সচিব স্টিভ ভারহিউল বলেন, 'যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক মেরামত করাই হবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। আমরা তাদের প্রয়োজন করি, তারাও আমাদের।'
সামরিক ও কূটনৈতিক রূপরেখা
কার্নি আর্কটিক অঞ্চলে কানাডার সার্বভৌমত্ব রক্ষায় বিশাল সামরিক বিনিয়োগের কথা বলেছেন। সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাবেক প্রধান উপদেষ্টা সান্দ্রা অবে জানান, 'এটি কেবল প্রতিরক্ষা নয়, বরং অর্থনীতির অংশ—বহু বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ কানাডার উৎপাদন খাতে সহায়ক হবে।'
মে মাসেই ট্রাম্পের সঙ্গে বাণিজ্য আলোচনা এবং জুনে পশ্চিম কানাডায় জি৭ সম্মেলনে মুখোমুখি বৈঠক হতে যাচ্ছে।
অভ্যন্তরীণ সংকটও চেপে ধরেছে
প্রতিদিনকার সংকট যেমন উচ্চ জীবনযাত্রার ব্যয় ও আবাসন সংকটও নতুন প্রধানমন্ত্রীর জন্য অবহেলাযোগ্য নয়। রাজনৈতিক বিশ্লেষক মার্সি সার্কেস বলেন, 'এগুলো বাস্তব ও জরুরি সমস্যা। কার্নিকে নতুন মন্ত্রিসভায় ‘নতুন মুখ’ নিয়ে আসতে হবে—যাতে বোঝানো যায়, তিনি তাঁর পূর্বসূরি ট্রুডোর চেয়ে বেশি ব্যবসা ও অর্থনীতিনির্ভর দৃষ্টিভঙ্গি নিয়েছেন।'