শিরোনাম
ঢাকা, ৩০ এপ্রিল, ২০২৫ (বাসস) : থাইল্যান্ডের সর্বোচ্চ আদালত বুধবার সাবেক প্রধানমন্ত্রী থাকসিন সিনাওয়াত্রার বিরুদ্ধে বিশেষ সুবিধা পাওয়ার অভিযোগ সংক্রান্ত একটি মামলা খারিজ করে দিয়েছে। প্রায় এক দশকের নির্বাসন শেষে রাজ্যে ফেরার সময় তিনি এই সুবিধা পেয়েছেন বলে অভিযোগটি করা হয়েছিল।
ব্যাংকক থেকে এএফপি জানায়, থাকসিনের পুরনো রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ ডেমোক্র্যাট পার্টির এক সাবেক সংসদ সদস্য মামলাটি দায়ের করেন। তিনি অভিযোগ করেন, ২০২৩ সালের আগস্টে থাইল্যান্ডে ফিরে আসার সময় ৭৫ বছর বয়সী থাকসিনকে কর্তৃপক্ষ পক্ষপাতমূলক সুবিধা দিয়েছে।
ব্যাংককে অবতরণের পরপরই দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের দায়ে থাকসিনকে ৮ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয় এবং তাঁকে একটি আটক কেন্দ্রে নেওয়া হয়। তবে, পরদিনই স্বাস্থ্যগত কারণে তাঁকে পুলিশ জেনারেল হাসপাতালে একটি ব্যক্তিগত কক্ষে স্থানান্তর করা হয় এবং তিনি সেখানে ছয় মাস থাকেন। এরপর রাজা মহা ভাজিরালংকর্ণের সাধারণ ক্ষমার ফলে তিনি প্যারোলে মুক্তি পান।
থাকসিন প্রকৃতপক্ষে কারাগারে সময় না কাটিয়ে এমন সুবিধা পাওয়ার বিষয়টি, বিশেষ করে তিনি যেদিন ফেরেন, ঠিক সেদিনই তার দল ফেউ থাই সরকার গঠন করে—এসব বিষয় নিয়ে ব্যাপক জল্পনা শুরু হয় যে, হয়তো গোপনে কোনো চুক্তি হয়েছিল।
বুধবার সুপ্রিম কোর্ট মামলাটি খারিজ করে জানায়, আবেদনকারী সরাসরি জড়িত না থাকায় তার আবেদন করার অধিকার নেই।
তবে আদালত নিজ থেকেই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে যে, থাকসিন কি যথাযথভাবে শাস্তি ভোগ করেছেন কিনা। আগামী ১৩ জুন এ বিষয়ে জবানবন্দি দিতে কারা কর্তৃপক্ষ, সংশোধন বিভাগ এবং একজন চিকিৎসককে হাজির হতে বলা হয়েছে।
রাজনীতিতে ফিরে না আসার ঘোষণা দিলেও, থাকসিন এখনও ফেউ থাই দলের হয়ে প্রাদেশিক নির্বাচনে সক্রিয়ভাবে প্রচারণা চালাচ্ছেন এবং সম্প্রতি তিনি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একটি অনানুষ্ঠানিক বাণিজ্য আলোচনায় স্বেচ্ছাসেবক হিসেবেও অংশ নিয়েছেন বলে থাই সংবাদমাধ্যম জানায়।
ফেউ থাই সামরিক ঘনিষ্ঠ দলগুলোর সঙ্গে মিলে একটি জোট সরকার গঠন করে, যা দীর্ঘদিন ধরে চলা প্রগতিশীল বনাম সামরিকপন্থী দ্বন্দ্বের অবসান ঘটায়। থাকসিনের কন্যা পায়েতংতার্ন সিনাওয়াত্রা গত বছর প্রধানমন্ত্রী হন।
রাজনৈতিক বিশ্লেষক ইউত্তাপর্ণ ইসারাচাই এএফপিকে বলেন, এটি কেবল আরেকটি মামলার লড়াই, যা থাকা-বিরোধী পক্ষগুলো তাকে রাজনীতি থেকে সরিয়ে দেওয়ার কৌশল হিসেবে করছে।
'গত বিশ বছরে থাই রাজনীতিতে আমরা এমন ঘটনা বারবার দেখেছি,' তিনি বলেন।
যদিও থাকসিন এখনও তার সমর্থকদের মধ্যে জনপ্রিয়, দীর্ঘদিন ধরেই থাইল্যান্ডের রাজতন্ত্রপন্থী ও সামরিক প্রতিষ্ঠানের কাছে তিনি অপ্রিয় ব্যক্তি।
২০১৫ সালে দক্ষিণ কোরীয় এক সংবাদমাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎকারে রাজপরিবার সম্পর্কে মন্তব্য করায় তার বিরুদ্ধে পৃথক একটি রাজদ্রোহ মামলায় জুলাই মাসে আদালতে হাজির হওয়ার কথা রয়েছে।