শিরোনাম
ঢাকা, ১ আগস্ট, ২০২৩ (বাসস): সামুদ্রিক মৎস্য সম্পদের পরিমিত ও টেকসই আহরণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে বলে জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম। আজ মঙ্গলবার রাজধানীর শের-ই-বাংলা নগরে এনইসি সম্মেলন কক্ষে ‘ফিশারিজ সাবসিডিজ ইন দ্য কনটেক্সট অব এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন অ্যান্ড ওয়ে ফরওয়াড’ শীর্ষক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী একথা জানান। অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সাপোর্ট টু সাসটেইনেবল গ্র্যাজুয়েশন প্রকল্প এ কর্মশালার আয়োজন করে।
কর্মশালায় মন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মাস্টার অব দ্যা মাস্টারস, চিফ আর্কিটেক্ট অব অল আর্কিটেক্টস। একজন স্টেটসম্যান হিসেবে তাঁর দৃঢ়তা, আত্মবিশ্বাস, সততা, পরিকল্পনা, ধীশক্তি, অভিজ্ঞতা এবং দেশপ্রেমের ফলে এটা সম্ভব হয়েছে। তাঁর মতো একজন রাষ্ট্রনায়ক থাকায় বিশ্বের নানা প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও বাংলাদেশ স্বাভাবিক অবস্থায় চলছে, শঙ্কার জায়গা নেই। তিনি বলেন, আমাদের সামুদ্রিক জলসীমায় অনেক সময় অতিরিক্ত মৎস্য আহরণে বেপরোয়া চেষ্টা চালানো হয়। তাই মৎস্য আহরণ একটি শৃঙ্খলার মধ্যে নিয়ে আসতে সমুদ্রে মাছ ধরা সব নৌযান রেজিস্ট্রেশনের আওতায় আনা হচ্ছে। এসব নৌযান মনিটরিংয়ে ভেসেল মনিটরিং সিস্টেম স্থাপন করা হচ্ছে বলে জানান মন্ত্রী। সরকার মৎস্য খাতে নানাভাবে সহায়তা করছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, মৎস্য মান নিয়ন্ত্রণে আন্তর্জাতিক মানের ল্যাবরেটরি স্থাপন করা হয়েছে। রপ্তানি বাজার সম্প্রসারণের জন্য সরকার ভেনামি চিংড়ি চাষের অনুমোদন দিয়েছে।
মন্ত্রী ২০২৬ সালে মৎস্য খাতে কি হবে, সেটা মোকাবিলার জন্য দূরদৃষ্টি দিয়ে প্রস্তুতি নেয়ার উপর গুরুত্ব দিয়ে বলেন, এলডিসি গ্র্যাজুয়েশনে সম্ভাবনা ও শঙ্কা দুটিকে মাথায় রেখে আমাদের প্রস্তুতি নিতে হবে। মৎস্য রপ্তানিতে কোটা ও শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার না থাকলে আমাদের বিকল্প পথ বের করতে হবে। তিনি বলেন, মৎস্য উৎপাদন বাড়াতে হবে, উৎপাদনে গুণগতমান নিশ্চিত করতে হবে, মাছ প্রক্রিয়াজাতকরণ করতে হবে, মৎস্যজাত পণ্যের বহুমুখী ব্যবহারের কথা ভাবতে হবে, দেশের চাহিদা মিটিয়ে রপ্তানির কথা মাথায় রাখতে হবে এবং রপ্তানিতে দুর্বৃত্তপনা দূর করতে বিশেষ করে বিষাক্ত দ্রব্য প্রবেশ করিয়ে বিদেশে ভাবমূর্তি নষ্ট করা বন্ধ করতে অতি মুনাফালোভী দুষ্ট চক্রকে মোকাবিলা করতে হবে। মন্ত্রী শ.ম.রেজাউল করিম এ প্রসঙ্গে বলেন,“সরকার পরিকল্পনা প্রণয়ন করবে, নীতি সহায়তা দেবে। আর বেসরকারি খাতে কেউ মৎস্য প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্প স্থাপন করতে চাইলে সরকার সহজ শর্তে, স্বল্প সুদে ঋণ প্রাপ্তির ব্যবস্থা করবে, মেশিনারিজ আমদানির ক্ষেত্রে কর মওকুফ সুবিধা দেবে’’। মন্ত্রী উল্লেখ করেন, গভীর সমুদ্রে মৎস্য আহরণে লাইসেন্স দেয়া হলেও বেসরকারি খাত এগিয়ে আসেনি। তাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে গভীর সমুদ্রে মৎস্য আহরণে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় পাইলট প্রকল্প নিয়েছে।
অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব শরীফা খানের সভাপতিত্বে কর্মশালায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. নাহিদ রশীদ, ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মো. সমির সাত্তার এবং বাংলাদেশ ফ্রোজেন ফুড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি কাজী বেলায়েত হোসেন।
স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের অতিরিক্ত সচিব ও সাপোর্ট টু সাসটেইনেবল গ্র্যাজুয়েশন প্রকল্পের পরিচালক ফরিদ আজিজ। কর্মশালায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশনের সদস্য মো. হাফিজুর রহমান। এছাড়া প্যানেল আলোচনায় অংশ নেন বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান সাঈদ মাহমুদ বেলাল হায়দার, মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খ. মাহবুবুল হক এবং বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিচালক ড. মো. জুলফিকার আলী।