শিরোনাম
ঢাকা, ৪ আগস্ট, ২০২৩ (বাসস): বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর সাবেক সভাপতি এবং শিশু সংগঠক পান্না কায়সার-এর মৃত্যুতে গভীর শোক ও শ্রদ্ধা জানিয়েছে বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী।
আজ শুক্রবার এক শোকবার্তায় উদীচীর সভাপতি অধ্যাপক বদিউর রহমান এবং সাধারণ সম্পাদক অমিত রঞ্জন দে শোক প্রকাশ করে শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা প্রকাশ করেন। শোক বিবৃতিতে তারা বলেন, পান্না কায়সার-এর প্রয়াণে শুধু দেশের সংস্কৃতি জগতের অপূরণীয় ক্ষতি হলো তাই নয়, উদীচী হারালো তাঁর অন্যতম অভিভাবককে।
শহীদ বুদ্ধিজীবী ও উদীচীর অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা শহীদুল্লাহ কায়সার-এর জীবনসঙ্গী, বিশিষ্ট সাহিত্যিক, প্রাবন্ধিক পান্না কায়সার ১৯৫০ সালের ৫ মে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ছোটবেলা থেকেই প্রগতিশীল চিন্তাচেতনার সাথে পরিচিত হন। ষাটের দশকে স্বাধীনতা আন্দোলনের উত্তাল সময়ে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী ছিলেন। সেখানে বাংলা বিভাগে পড়ার সময় তিনি শিক্ষক হিসেবে পেয়েছিলেন মুনীর চৌধুরী, মোফাজ্জল হায়দার চৌধুরীর মতো কিংবদন্তি শিক্ষকদের। ১৯৬৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে উত্তাল গণঅভ্যুত্থানের সময়েই তিনি শহীদুল্লাহ কায়সার-এর সাথে পরিণয়সূত্রে আবদ্ধ হন। শুরু হয় রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক আন্দোলনে তার নতুন পথচলা। ১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর আরো অনেক সূর্য সন্তানের মতো পান্না কায়সার-এর স্বামী শহীদুল্লাহ কায়সারকেও আলবদরের সহায়তায় বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে যায় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী। এরপর আর ফিরে আসেননি তিনি।
স্বাধীনতার পর পান্না কায়সার শিশু-কিশোর সংগঠন খেলাঘর-এর সাথে যুক্ত হন। একইসাথে যুক্ত হন বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর কর্মকান্ডের সাথেও। যুক্ত ছিলেন ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সাথেও। সারাজীবন ধরেই তিনি জনগণের ন্যায়সঙ্গত অধিকার আদায়ের সংগ্রামে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন। পাশাপাশি, সাহিত্যিক, প্রাবন্ধিক হিসেবেও নতুন প্রজন্মকে স্বাধীনতার চেতনায় গড়ে তোলার চেষ্টা করে গেছেন।
আজ ৪ আগস্ট উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদ সভা ছিল। সভা চলাকালেই পান্না কায়সার-এর মৃত্যু সংবাদ আসে। সভায় তাঁর মৃত্যুতে শোক প্রস্তাব গ্রহণ এবং দুই মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।