বাসস
  ০৫ আগস্ট ২০২৩, ২১:২৭

বরগুনায় শ্যালিকাকে ধর্ষণে ব্যর্থ হয়ে দুই শিশু হত্যা ॥ ঘাতকের স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি

বরগুনা, ৫ আগস্ট, ২০২৩ (বাসস): জেলায় শ্যালিকা রিগানকে ধর্ষণে ব্যর্থ হয়ে দুই শিশুকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় আজ দুপুরে আদালতে স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি দিয়েছে ঘাতক ইলিয়াস।
বরগুনা আদালতের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নাহিদ হোসেন ঘাতক ইলিয়াসের স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি লিপিবদ্ধ (রেকর্ড) করেন ।
এর আগে ইলিয়াসের  দেখানো মতে শুক্রবার রিগানের পুকুর থেকে হত্যায় ব্যবহৃত ধারালো ‘দা’ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
এ ব্যাপারে ভুক্তভোগী শ্যালিকার (রিগানের) ভাই রিপন বাদী হয়ে শুক্রবার বরগুনা থানায় ইলিয়াসকে আসামী করে একটি মামলা দায়ের করে। ইলিয়াস বরগুনা সদর উপজেলার আয়লা পাতাকাটা ইউনিয়নের পূর্ব  কেওরাবুনিয়া গ্রামের আবু পহলানের ছেলে।
স্থানীয় সূত্রে জানাগেছে, স্বামী পরিত্যক্তা রিগান তার তিন বছরের শিশু সন্তান তাইফাকে নিয়ে বরগুনা সদর উপজেলার ফুলঝুড়ি ইউনিয়নের রোডপাড়া গুদিঘাটা গ্রামে বাবার বাড়িতে একা বসবাস করতেন। এ কারণে রাতে  সে পাশের বাড়ির হাফিজুরকে (১০) সাথে নিয়ে থাকতেন। বরাবরের মতো বৃহস্পতিবার রাতে নিজের সন্তান ও হাফিজুরকে নিয়ে ওই ঘরে ঘুমিয়ে ছিলেন রিগান। গভীর রাতে রিগানের দুলাভাই মাদকাসক্ত  ইলিয়াস দরজা  কৌশলে খুলে ঘরে ঢুকে রিগানকে ধর্ষণের চেষ্টা চালায়। এসময় রিগান বাধাঁ দেয়। পাশের চৌকিতে ঘুমিয়ে থাকা হাফিজুরও  টের  পেয়ে এগিয়ে গিয়ে বাঁধা  দেয়। এ কারণে হাফিজুরকে একটি দা দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে ইলিয়াস। এরপর রিগান ও তার কন্যা শিশু তাইফাকেও কুপিয়ে গুরুতর জখম করে।
আহত রিগানের ভাই মামলার বাদী রিপন জানায়, রিগানের ঘরে দা ছিল  সেই দা দিয়ে প্রথমে হাফিজুরের মাথায়, হাতে ও ঘাড়ে তিনটি  কোপ দিয়ে গুরুতর জখম করে। ঘটনাস্থলেই হাফিজুর মারা যায়। এরপর আমার  বোনকে এলোপাথারি কুপিয়ে আহত করে ইলিয়াস। দুটি  কোপ রিগানের তিন বছরের  মেয়ে তাইফার গালে ও বুকে পড়ে।এতে  সে গুরুতর জখম হয়। আহত অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়ার পথে তাইফাও মারা যায়।
বরগুনা থানার তদন্তকারী কমর্র্কতা হেলাল উদ্দিন জানান, রিমান্ড ছাড়াই শনিবার দুপুরে বরগুনার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নাহিদ হোসেনের কাছে ইলিয়াস স্বেচ্ছায় হত্যার কথা স্বীকার করে জবানবন্দি দেয়। পরে ইলিয়াসকে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে আদালত। গুরুতর জখম রিগানকে পুলিশ বরিশাল  শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাপাতালে পাঠায়। সেখান  থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
এ ঘটনার পর বরগুনার পুলিশ সুপার (এসপি) আবদুস সালাম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।