শিরোনাম
ঢাকা, ৭ আগস্ট, ২০২৩ (বাসস) : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে বঙ্গবন্ধু হিসেবে গড়ে তুলতে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিবের অগণিত অবদান ছিলো এবং
সেই সাথে তিনি অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন।
তিনি বলেন, “বঙ্গমাতা বিভিন্নভাবে ভূমিকা পালন করেছেন কারণ তিনি সর্বদা আমাদের অনুপ্রেরণামূলক এবং নির্দেশনা দিয়ে আসতেন এবং বঙ্গবন্ধুকে তিনটি অমূল্য আত্মজীবনীমূলক বইয়ের খসড়া লেখার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। যা বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্বদা অমূল্য সম্পদ হিসাবে থাকবে।”
আজ সন্ধ্যায় রাজধানীর জাতীয় জাদুঘরের নলিনী কান্ত ভট্টশালী গ্যালারিতে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব (রেণু) এর জীবন ও কর্মের ওপর নির্মিত ‘বঙ্গবন্ধুর রেণু’ চলচ্চিত্রের লোগো ও ওয়েবসাইট উন্মোচন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এ কথা বলেন।
এতে প্রধান আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন মুক্তিযোদ্ধা শাহাবুদ্দিন আহমেদ ও সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যাপক আবদুল মান্নান।
আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য ও হাসুমনির পাঠশালার সভাপতি মারুফা আক্তার পপির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন চলচ্চিত্র নির্মাতা মোরশেদুল ইসলাম এবং জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের চলচ্চিত্র ও টেলিভিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক জুনায়েদ হালিম।
আসাদুজ্জামান বলেন, "বঙ্গবন্ধু যখন কারাগারে ছিলেন, বঙ্গমাতা প্রতিবারই একটি করে খাতা ও কলম নিয়ে তাঁর সঙ্গে দেখা করতেন। এ কারণে আমরা 'অসমাপ্ত আত্মজীবনী', 'কারাগারের রোজনামচা'সহ বিভিন্ন বই পেয়েছি।
নিজের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু যখন কারাগারে ছিলেন, তখন বঙ্গমাতা আমাদের বলেছিলেন, আপনারা আন্দোলন জোরদার করুন।
তারপর তাকে দ্রুত মুক্তি দেওয়া হবে যা ছিল তার দূরদর্শী চিন্তার প্রমাণ।"
মন্ত্রী বলেন, "আমাদের ছাত্রনেতারা বঙ্গমাতার কাছে পরামর্শের জন্য যেতেন।"
তিনি বলেন, "বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণের আগে বঙ্গমাতা তাকে তার হৃদয়ে যা বলে তা বলতে বলেছিলেন এবং বঙ্গবন্ধু সব নোট এবং কাগজপত্র গ্লাসের নীচে রেখে একই কাজ করেছিলেন।”
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ডক্টর আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, আগরতলা মামলার বিচার চলাকালীন এবং বঙ্গবন্ধু কারাগারে থাকাকালীন আওয়ামী লীগের বেশ কয়েকজন নেতা বঙ্গবন্ধুর প্যারোলে মুক্তি মেনে নিতে ইচ্ছুক ছিলেন, যা বঙ্গমাতা প্রবলভাবে বিরোধিতা করেছিলেন। তিনি তার নিঃশর্ত মুক্তি চেয়েছিলেন।
বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার (বাসস) পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আরেফিন সিদ্দিক বলেন, বঙ্গবন্ধু যদি আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় প্যারোলের শর্ত মেনে বেরিয়ে আসতেন, তাহলে তৎকালীন পাকিস্তানি জান্তা আসামিদের মুক্ত করে মামলা প্রত্যাহার করতে বাধ্য হতো না। ফলে কোনো তুমুল গণআন্দোলন সৃষ্টি হতো না।
তিনি আরো বলেন, বঙ্গবন্ধু প্যারোলে মুক্তি পেলে বাংলাদেশ কখনোই স্বাধীনতা দেখতে পেতো না।
তিনি বলেন, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব ছিলেন বঙ্গবন্ধুর অনুপ্রেরণার উৎস কিন্তু তিনি ছিলেন পর্দার আড়ালে।
তিনি যোগ করেন, "বঙ্গবন্ধু কারাগারে থাকাকালীন বঙ্গমাতা দলীয় নেতাকর্মীদের আর্থিক সহায়তা দিয়েছিলেন, যদিও তিনি আর্থিকভাবে সংকটে ছিলেন"।
মুক্তিযোদ্ধা শিল্পী শাহাবুদ্দিন আহমেদ বলেন, "রাজা রামমোহন রায়ের আমলে বাংলায় নবজাগরণ হয়েছে। কিন্তু বঙ্গবন্ধুর হাত ধরেই ১৯৭১ সালে পূর্ব বাংলার নবজাগরণ ঘটেছিল"।
তিনি বলেন, বেগম রোকেয়ার স্বামীর মতো বঙ্গমাতা সব সময় বঙ্গবন্ধুর পাশে ছিলেন।
হাসুমনির পাঠশালা আয়োজিত অনুষ্ঠানে ‘বঙ্গবন্ধুর রেণু’ ছবির লোগো ও ওয়েবসাইট উন্মোচন করা হয়। 'বঙ্গবন্ধুর রেণু' ছবির লোগো ডিজাইন করেছেন সঞ্জীব দাস এবং ওয়েবসাইট ডিজাইন করেছেন দেবাশীষ বিশ্বাস পাভেল।